অপ্রিয় সত্য কথা: ফেসবুকে যা লেখা যায় না

follow-upnews
0 0

আমি

মানুষের বুকে যারা অদৃশ্য লাথি মারছে রোজ, তাদের ফিসফিসিয়ে একবার বাঞ্চোতও বলতে পারি না! কতটা অভাগা আমি।

বেঁচে থাকার জন্য আমিও আজকাল কিছুটা বদলে গেছি।

ধনী হতে জানি, মানতে শিখিনি এখনো।

আমার কল্পিত প্রেয়শীর উর্বশী দেহের কারুকাজ আমার চেয়ে সহস্রগুণ ভালো জানে সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ দুবৃত্তরা। আমি শুধু বসে বসে কবিতা চিবাই।

কবি হতে আমার ভালো লাগে না।

আমি শয়তান চিনে ফেলি, তারও আগে শয়তান আমাকে চিনে ফেলে!

সরকারি চাকরি করব না ভেবে ছিলাম স্বাধীন থাকার জন্য, এখন নিজেকে আরো বেশি পরাধীন মনে হয়! কে স্বাধীন এদেশে? রাস্তাড় মোড়ের চায়ের দোকানদারও তো স্বাধীন না। তার ওপরও ভূতের মতো চেপে বসে আছে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং রাজনীতি। দিনে এক হাজার টাকা আয় করলে চারশো টাকা তার চাঁদা দেওয়া লাগে।

যা বলতে চাই, যা বলা দরকার, তার কিছুই বলতে পারি না। সম্ভব না।

কী হত এ জীবন দিয়ে এর চেয়ে বেশি আর— নরম বিছানা, গরম খাবার, আর মাঝে মাঝে নারী দেহ বদল; খুব কি জিতেছ তোমরা তাতে?

বুঝি, বলি না, একদম একা হয়ে যাব যে! ভয়তো কিছুটা পেতেই হয়।

ওরা এবং আমরা

দেশের শিক্ষিত মানুষের ৯৯% ধান্দাবাজা। মুক্তিযুদ্ধ, ধর্ম, বঙ্গবন্ধু —সামনে যা পায় চেটেপুটে খেয়ে ফেলে।

একটা যুগ বদলে দিয়েছিলেন জনাথন সুইফট্। একটা লাইনও সেরকম লেখার সুযোগ নেই। পাকড়াও করবে কেউ না কেউ।

কোনো কথা বলার সুযোগ নেই, কারো না কারো বিরুদ্ধে তো তা যাবেই। অথবা মাথা পেতে নেবে।

ওরা জানে কী দিতে নেই। ফলে মানুষগুলোকে আটকিয়ে দেয় পদে পদে। করো পারলে শূন্য পকেটে বিদ্রোহ! এটাই এদের প্রধান স্ট্রাটেজি। চেলা চামুন্ডা যা বানায় তা ওদেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ।

চেয়ারটাই আসল কথা, ধর্ম বেঁচে, মুক্তিযুদ্ধ বেঁচে, বঙ্গবন্ধু বেঁচে, এখন শেখ হাসিনা বেঁচে —যে সময় যা বেঁচা লাগে।

কবি এদেশে কে? শাসকের গোলামী যে ঠিকঠাক মতো করতে পেরেছে। নতুবা তাকে হুমায়ুন আজাদের মতো ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে যেতে হয়েছে। পারবেন এতটা?

গত দশ বছরে এমন অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি পেতে হলে বর্তমানে তারা প্রাইমারি স্কুলের চাকরিটিও পাবে না।

এই সরকার খেলতে জানে। মুক্তিযুদ্ধ, ধর্ম, তথাকতিথ আলেম ওলামা, এবং এখন করোনা নিয়ে —সবকিছু নিয়েই তারা খেলতেছে। প্রমাণিত হয়েছে যে, একটা আবাল জনগোষ্ঠী নিয়ে ইচ্ছেমতো খেলা যায়।

মানুষের কোনো সিন্ডিকেট থাকার কথা না। কিন্তু কবিদেরও এদেশে সিন্ডিকেট আছে।

ধাড়ি শিয়েল কিছু ছোট শিয়েল পালে, সংগঠন মানে এখন শিয়েলের পাল, সময় হলে তারা বুড়ো শিয়েলের স্বরে ডাকে।

যাদের শুয়োরের বাচ্চা বলার কথা, তাদের বলতে হয় স্যার! এটাই বাংলাদেশ!

ধর্মদুষ্টরা হত্যা করে? এইসব বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট করে মুখ খুলে দেখেন, দেখবেন— হত্যা তারাও করে।

নিজের লেখা নিজে একশোবার এডিট করতে হয়। তখন নিজেকে আর লেখক মনে হয় না, এডিটর মনে হয়। কতটা ভয়ঙ্কর সেল্ফ সেনসরশিপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে রাষ্ট্র, এই সমাজ!

গত দশ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার মশালটা তুলে দেওয়া হয়েছে কয়েকজন ক্যারিয়ারিস্টের হাতে, অনেক ক্ষেত্রে তারা ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িকও। মুক্তিযুদ্ধের পরেও ঠিক তাই হয়েছিল।

পশ্চিমা পুঁজিতে ভাগ না বসিয়ে এদেশে কেউ সফল হয়েছে, শীর্ষে গিয়েছে? একটা উদাহরণও দিতে পারবেন?

এদেশে লেখক হিসেবে সফল হতে হলেও ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝখান দিয়ে চলতে হয়, মাঝে মাঝে সুবিধা মতো হেলতে হয়। বাংলাদেশ এখানে কোনো বিষয় না।

নিজের জন্য আমার কষ্ট হয় না, আমি খুব ভালোভাবেই টিকে আছি। কষ্ট হয় আমার মতো আরো অনেকের জন্যে, তারা টিকে থাকতে পারছে না। সিস্টেম তাদেরকে ছিটকে দিয়েছে।

Next Post

বড় গল্প: কোথাও নেই (চতুর্থ পর্ব)

অনভ্যস্ততার কারণে বসতে একটু অসুবিধা হচ্ছে, আবার ভালোও লাগছে —এভাবে চালকের পাশে বসে সবকিছু দেখতে দেখতে শেষ যে কোথাও কবে গিয়েছিলাম মনে নেই। পাশ দিয়ে লোকজন উঠছে নামছে, সবাইকে খুব উদ্বিগ্ন মনে হয়, আচ্ছা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ কি সবসময় উদ্বিগ্ন থাকে? গোপালগঞ্জ শহর হতে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে ঘোনাপাড়া […]
বটতলা