পাকিস্তানে কিশোরীকে পুড়িয়ে হত্যা

বান্ধবীকে পালিয়ে বিয়ে করতে সাহায্য করার জেরে গ্রামের মোড়লদের নির্দেশে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল অ্যাবোটাবাদের মাকল গ্রামে গত ২৮ এপ্রিল এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন অনলাইন।

খবর অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল সকালে এক প্রেমিক যুগলকে পালিয়ে বিয়ে করতে সহযোগিতা করার দায়ে মাকল গ্রামে ওই কিশোরীর ‘বিচার’ হয়। ওই বিচারে ১৫ জন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যের সংগঠন ‘জিরগার’ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাতবর ওই কিশোরীকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেন।

আর ওই নির্দেশ অনুযায়ী, সালিসের দিন বিকেলে কিশোরীকে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনা হয়। এরপর গ্রামের সীমানার বাইরে একটি ভ্যানে তাঁকে বেঁধে পেট্রল দিয়ে ওই ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর চলতি মাসের প্রথম দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই কিশোরীকে পুড়িয়ে মারার নৃশংস ছবি প্রকাশিত হলে ঘটনাটি পাকিস্তান পুলিশের নজরে আসে।

এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা এবং এক আত্মীয়সহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। আর কিশোরীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, পরিবারের সম্মতির বাইরে গিয়ে নিজের পছন্দে কোনো ছেলেমেয়ে বিয়ে করলে বা কোনো ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুললে সেই সম্পর্ককে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় মেয়েটির পরিবারের ‘অনার কিলিং’ বলে মনে করা হয়। এর শাস্তি হিসেবে ওই মেয়ের পরিবারের প্রথমে মেয়েটিকে, এরপর ছেলেটিকে হত্যা করার অধিকার রয়েছে।

পাকিস্তান এবং আফগানিস্ততানের সীমান্তে অবস্থিত অ্যাবোটাবাদ প্রদেশে চলতি বছরেই এখন পর্যন্ত এই অনার কিলিংয়ের আটটি ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় নয়জন নিহত হয়েছেন যাঁদের আটজনই নারী।

# ফলোআপনিউজ ডেস্ক।