প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণ না করার বিষয়টি স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিবিসি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নের জবাবে বুধবার ইমেইলে এক বিবৃতিতে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য জানার আগেই ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ মেন্দি এন সাফাদির কথায় দুজনের বৈঠকের খবর প্রকাশ করা বিবিসির সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুযায়ী উচিৎ হয়নি।
“জনাব ওয়াজেদের বক্তব্য পাওয়ার আগেই ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য আমরা দুঃখিত, কেননা এ ধরনের ক্ষেত্রে সাধারণত বিবিসির ওই নিয়মই অনুসরণ করার কথা।”
মেন্দি এন সাফাদি (ফেইসবুক থেকে নেওয়া ছবি)
এ ঘটনার আলোকে সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণের বিষয়টি জোরদার করা হবে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন বিবিসি গ্লোবাল নিউজের করপোরেট কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার পল রাসমুসেন।ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের ছবি গণমাধ্যমে আসার পর বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের পুলিশ। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সাফাদির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে বিবিসি বাংলা অনলাইন। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে সাক্ষাৎ হয়েছে বলে সাফাদি দাবি করেছেন।
ওই দাবি নাকচ করে ফেইসবুকে এক পোস্টে জয় বলেন, তার সঙ্গে সাফাদির কখনও দেখাই হয়নি।
এরপর বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও বিবিসির খবরকে ‘ভিত্তিহীন’ বলা হয়। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের খবর পরিবেশনে সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানায় আওয়ামী লীগ।
ওই সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিবিসি যে নিজেদের নিয়মই মানেনি, সে বিষয়টি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সামনে নিয়ে আসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, যিনি নিজেও দীর্ঘদিন লন্ডনে বিবিসি বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন।
৩০ মে রাতে একাত্তর টেলিভিশনে ওই আলোচনায় তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, বিবিসির বিষয় ও ভাষাভিত্তিক শত শত আউটলেটের মধ্যে বিবিসি বাংলা অনলাইন একটি। তাদের সবাইকেই বিবিসির ‘এডিটোরিয়াল গাইডলাইন’ মানতে হয়, অনুসরণ করতে হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করার ‘যোগ্যতা’ সবার থাকে না।
“আমার মনে হয় বড় অপরাধ করেছে বিবিসি বাংলা অনলাইন। তাদের উচিৎ ছিল না এ রকম একটি বিষয় নিয়ে এ রকম স্টোরি করা; এবং তাদর অবশ্যই কথা বলা উচিৎ ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে পাঠানো বিবৃতিতে বিবিসির পল রাসমুসেন বলেন, মেন্দি সাফাদি যখন দাবি করলেন যে তিনি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীপুত্রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন,তখন বিবিসি অবশ্যই সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে কথা বলে তার বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে বার বার চেষ্টা করেও সেই চেষ্টা বিফল হয়েছে।
জয় যখন ফেইসবুকে সাফাদির দাবি অস্বীকার করলেন তখন বিবিসি ওয়েবসাইট ও রেডিওতে তা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে। একইভাবে আওয়ামী লীগ যখন প্রতিবাদপত্র দিয়েছে, তখনও বিবিসি সংবাদ আকারে তা প্রকাশ করেছে বলে পল রাসমুসেন জানান।