লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মহাশ্বেতা দেবীর প্রয়াণ

1
চলে গেলেন ‘হাজার চুরাশির মা’ তথা জনপ্রিয় লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটা ১৭ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার বেলেভিউ নার্সিংহোমে মারা যান। গত দেড় সপ্তাহ সময় ধরে তিনি কিডনি সহ অন্যান্য বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। জনপ্রিয় লেখিকার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সাহিত্য অঙ্গণ, শিল্পী এবং পাঠক মহলে। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩.১৭ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে মারা যান তিনি। গত ২২ মে তিনি কিডনিসহ অন্যান্য বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। ১৯২৬ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকা এই কথাশিল্পী। তার লেখায় বাংলাদেশ বিশেষ স্থান পেয়েছে।

মৃত্যুর আগে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। কিডনি ও ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এ ছাড়া হাই ব্লাডসুগার, ব্লাড ও ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন ছিল তার। বুধবার রাতে হার্ট অ্যাটাক হয় এবং এ ধাক্কা আর সহ্য করতে পারেননি তিনি। চলে গেলেন অগণিত ভক্ত, শুভানুধ্যায়ীদের কাঁদিয়ে।

মহাশ্বেতা দেবীর বাবা মনীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক এবং তার কাক ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটক। তার ছেলে নবারুণ ভট্টাচার্য বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক ছিলেন। মহাশ্বেতা দেবী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হন এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।

ভারতে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। লেখালেখির পাশাপাশি সামাজিক কর্মে তিনি আমৃত্যু জড়িত ছিলেন। আদিবাসী ও নারী অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে যাওয়া এই কথাসাহিত্যিক ভারতের পদ্মবিভূষণ, পদ্মশ্রী এবং ফিলিপাইনের র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে ভূষিত হন।

১৯৭৯ সালে ‘অরণ্যের অধিকার’ উপন্যাসের জন্য মহাশ্বেতা দেবী সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। হাজার চুরাশির মা, নৈঋতে মেঘ, অগ্নিগর্ভ, গণেশ মহিমা, বেনে বৌ, তীর তার উল্লেখযোগ্য রচনা। তার কয়েকটি উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।2