সময় নিরবিচ্ছিন্ন, আমরা সময় কেটে কেটে ভাগ করে নিয়েছি আমাদের কাজ এবং হিসেবের সুবিধার্থে শুধু। জীবন খণ্ডিত নয়, জন্ম থেকে মৃত্যু— পথটি বহুমাত্রিক হলেও বিযুক্ত নয়। জীবনের কোনো একটি বিশেষ ঘটনা বাদ দিলে হয়ত পরের ঘটনাগুলো আর পাব না। আমাদের হিসেবে একটি বছর চলে গেল, মানে জীবন কিছু ফুরালো। বিষয়টি আসলে দুঃখের, দুঃখ ভুলতেই হয়ত আনন্দ মেতে ওঠা। তবে এই আনন্দের মাঝ থেকে খুঁজে নিতে হবে আমাদের আগামীতে সুন্দরভাবে বাঁচার দীপ্ত প্রত্যয়। চলুন কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখি নিজেকে–
১. বিচার করে ভালোবাসা যায় না, মানুষকে শুরুতেই ভালোবাসব, চূড়ান্ত অপছেন্দের কারণও যেন পাশ কাটানোর শক্তি পাই;
২. প্রতিটি মানুষের অসহায়ত্ব উপলব্ধি করার চেষ্টা করব;
৩. প্রতিটি মানুষ ভিন্ন, আমি যেরকম সেরকম কাউকেই আর পাব না। এটাই সৃষ্টির সৌন্দর্য, বিষয়টি আনন্দচিত্তে মেনে নেব;
৪. আমি সেরা নই, একথা যেন সবসময় মনে রাখতে পারি;
৫. তবে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের মানবিক যুদ্ধে যেন পিছপা না হই;
৬. অপ্রাপ্তিতে যেন দুঃখিত না হই। নিশ্চয়ই আমার অনেক কিছু আছে, সেগুলো যেন মাঝে মাঝে গুণে দেখি;
৭. সুখ লাভে যেন বহুদূরে না তাকাই, চারপাশে ভালোলাগারা বিষয়গুলো যেন এড়িয়ে না যাই;
৮. শুধু ছুটি না যেন, থমকে যাওয়াটাও জীবন;
৯. মাথা নত করব, কিন্তু মাথা বিক্রি যেন না করি;
১০. দায়িত্ব যেন এড়িয়ে না যাই;
১১. পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র— সবখানেই যেন আমি অঙ্গিকারাবদ্ধ থাকি;
১২. বেঁচে থাকি আমরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে অনেক মানুষের ওপর নির্ভর করে, সেকথা যেন ভুলে না যাই;
১৩. শ্রমের ‘আর্থিক মূল্য’ দিয়েই যেন শুধু দায় শেষ না করি, শ্রমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে যেন না ভুলি;
১৪. কেউ-ই আমার শত্রু নয়, আবার সবাই আমার বন্ধুও নয়। একাকীত্বের (মাঝে মাঝে একা কিছু সময়) মূল্য যেন আমি বুঝতে পারি;
১৫. মাঝে মাঝে যেন বিষাদের মাঝে নিজেকে খুঁজে দেখতে পারি;
১৬. ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মূল্য বুঝতে যেন ব্যর্থ না হই;
১৭. অন্যকে ঈর্ষা করে যেন নিজেকে ছোট না করি;
১৮. কেউ বেশি খাচ্ছে মানে সে নিজের জন্য বিপদও ডেকে আনছে, কম খেয়ে কম পরে আমি ভালো আছি— এই বোধ নিয়ে বেঁচে থাকা যায় বিত্তশালীর চেয়েও অনেক বেশি সুখে;
১৯. কাউকে যেন আঘাত না করি;
২০. স্বপ্ন-লক্ষ থেকে যেন বিচ্যুত না হই।
দিব্যেন্দু দ্বীপ
সাহিত্যিক ও সাংবাদিক
সম্পাদক, ফলোআপনিউজ