একবার ভেবে দেখেছেন কি প্রতিটি দিন আপনার বিরক্তি নিয়ে কাটছে। মূল্যবান এই জীবনটা কি আপনি শুধু বিরক্তি নিয়েই কাটাবেন? ভাবার চেষ্টা করেছেন কখনো– কেন এমন হচ্ছে? সম্ভবত দুটি কারণে এমন হচ্ছেঃ
১. আপনি নিজের ওপর বিরক্ত;
২. আপনি কিছু মানুষের ওপর বিরক্ত।
মুক্তি পাওয়ার উপায় নিয়ে ভেবেছেন কি? ভাবেননি। ঠিক আছে, আজ থেকে ভাবুন, এখান থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন নয়। মুক্তি মিললেই দেখবেন, জীবন কত সুন্দর। নিচের দশটি উপায় অবলম্বন করে দেখতে পারেন।
১. নিজের ওপর আপনি কেন বিরক্ত, তা খুঁজে বের করুন। তারপর সমাধান নিয়ে পর্যালোচনা করুন;
২. নিজের ওপর বিরক্ত হওয়ার বড় কারণ কিন্তু অসফলতা নয়, নিজের ওপর বিরক্ত হওয়ার সবচে’ বড় কারণ, কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সাধ্যমত এবং সময়মতো চেষ্টা করতে না পারা বা না করা;
৩. নিজের ওপর বিরক্ত হওয়ার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে— অমিতব্যয়, যখন হাতে টাকা থাকবে না, তখন এটি ভেবেই আপনি বেশি বিরক্ত হবেন যে, কোথায় কোথায় আপনি অপব্যয় করেছেন। কাউকে সহযোগিতা করাটা কিন্তু অমিতব্যয় নয়। শুধু ধর্ম নয়, অর্থনীতির ভাষাতেই দান করা প্রতিটি টাকা দিগুণ হয়ে ফেরে;
৪. নিজের ওপর বিরক্ত হওয়ার তিন নম্বর কারণটি হচ্ছে— ভাব নেওয়া। ভাব নিলে বিপদ বাড়ে। ধরুণ, আপনি কাউকে বললেন— আমি সাইকেল চালাই না, কিনলে মটর সাইকেল কিনব। এতে দুটো সমস্যা তৈরি হলো— যাকে বললেন সে কিছুটা অপদস্ত হলো নীরবে, এবং আপনি যতদিন মটর সাইকেল কিনতে না পারছেন ততদিন নিজের মাঝে খচখচানি থেকে যাচ্ছে, অন্যরাও হয়ত আপনাকে নিয়ে হাসবে;
৫. টাকা থাকলেও সব কিছুর কর্তৃত্ব নিজে নিতে যাবেন না, অন্যকেও সুযোগ দিন। সবখানে বিল দিতে যাবেন না, ছোটখাট কোনো বিল কৌশলে আর্থিকভাবে কিছুটা দরিদ্র বন্ধুটিকে দিয়েও দেওয়ান, তাতে আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে। ভালো হয় উদ্যোগী হয়ে খরচগুলো সবাই শেয়ার করে নেওয়া। অন্যরাও এমনটিই চায়, কিন্ত বলতে পারে না মুখ ফুটে কেউ;
৬. টাকা না থাকলেও যখন তখন বন্ধদের সাথে ঘুরতে যাওয়া বা আড্ডায় যাওয়া আপনার জন্য ক্ষতিকর। এরকম কিছুদিন চললে আপনিই নিজের ওপর এক সময় বিরক্ত হবেন। নিজেই নিজেকে আর সম্মান করতে পারবেন না;
৭. শরীর যখন ঠিক থাকে, তখন বোঝা যায় না স্বাস্থ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য কোনো কাজে আসবে না। শরীরকে পাত্তা দিন— প্রতিদিন নিয়ম করে শরীরের যত্ন নিন, পরিমিত খাওয়া এবং পরিমিত ঘুম অত্যন্ত জরুরী। এক্ষেত্রে অবহেলা করা যাবে না। বিশেষ করে রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে আর কোনো কিছুই ঠিক থাকে না;
৮. এবার অন্যদের নিয়ে ভাবুন। ভাবুন— অন্যদের দ্বারা আপনি কীভাবে বিরক্ত হচ্ছেন;
৯. কোথায় যাচ্ছেন, কার সাথে যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন, এই তিনটি জিনিস মাথায় রাখবেন। যদি প্রশ্ন তিনটির উত্তর ইতিবাচক না হয়, তাহলে যাবেন না। সময় খরচ করার ব্যাপারে সতর্ক হোন, কারো উপকার হলে যান, নিজের উপকার হলে যান, উভয়ের উপকার হলে তো কথাই নেই, কিন্তু ভাবালুতায় বা কেউ ডেকেছে বলে যাই, এরকম এটিচিউডে আপনি বিরক্ত হবেন পরে;
১০. যে মানুষগুলো লাগাতার আপনার জন্য বিরক্তির কারণ হচ্ছে, বা যারা পরীক্ষিত সমস্যা সৃষ্টিকারী, তাদের বাদ দিন, এক্ষেত্রে চক্ষুলজ্জার কোনো দরকার নেই।
আরেকটি বিষয় খুব গুরুত্বের সাথে মনে রাখবেন, বিশেষ করে পুরুষেরা— যৌনতা কোনো স্বস্তা বিষয় নয়। তাই এটিকে সহজলভ্য ভেবে ভুল করবেন না। এজন্য পৃথিবীতে দুটো উপায়ই বৈধভাবে আজতক আছে— হয় প্রেম, পরস্পরের বোঝাপড়া; আর না হয় যৌনতা কিনে নেওয়া। যৌনতারও একটা নীরব বাজার পৃথিবীতে আছে, বাংলাদেশেও আছে। এক্ষেত্রে আপনি কী বিনিয়োগ করবেন, কতটুকু বিনিয়োগ করবেন, কার কাছ থেকে যৌনতা চাইবেন, চাইবেন কিনা, অথবা যৌনতার ক্ষেত্রে একগামী হবেন কিনা, একেবারেই যৌন জীবনটাকে গুরুত্বহীন করে দিয়ে অন্য কাজে মন দেবেন কিনা, অনেকভাবেই বিষয়টিকে নেগোসিয়েট করা যায়। তবে এটিকে কোনোভাবেই সহজলভ্য এবং স্বস্তা ভাববেন না।