খুলনায় অবস্থিত ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট এবং গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ঢাকার মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের বধ্যভূমি, গণহত্যার সাক্ষ্য বহনকারী আম গাছ এবং জোড়া গাব গাছের স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সরকারি বাঙলা কলেজের বধ্যভূমিতে নির্মিত শহিদ স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অন্যদিকে জোড়া গাব গাছের স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আমগাছের স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ওজাদুঘর ট্রাস্ট-এর সভাপতি ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুন।
ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আসলামুল হক।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙলা কলেজে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। কলেজটি হয়ে উঠে পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞের অভয়ারণ্য। সেখানে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় বাঙালিদের ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করে আর নির্যাতন করে অসংখ্য মা-বোনকে।
এই কলেজ প্রাঙ্গণে রয়েছে গণকবর, লাশ ফেলা কুয়া, জোড়া গাবগাছ —যেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হত বাঙালিদের। কলেজের আম বাগানে গাছের শিকড়ে মাথা রেখে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হত মুক্তিকামী মানুষদের। আধমরা করে ঝুলিয়ে রাখা হত বাঙালিদের দেহ। বিজয়ের মুহূর্তে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল অজস্র জবাই করা দেহ, মানুষের কংকাল আর পঁচা গলা লাশ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই ফলক স্থাপনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা-নির্যাতন ও আমাদের পূর্বপুরুষদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণে, গণহত্যা নিয়ে রাজনীতি বন্ধে এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশে এই স্মৃতিফলকগুলো ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক এবং গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টের ট্রাস্টি সম্পাদক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।