একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্র্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন-২০১৮

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

প্রাণতোষ তালুকদার, ঢাকা

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন-২০১৮ এর সমাপনী অধিবেশনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনঃ ‌’মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা’ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও থানা থেকে আগত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিনিধিগণ রাজধানী ঢাকার বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে (১৫/২ তোপখানা রোড, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে) বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে একটি কথাই বার বার উচ্চারিত হয়েছে যে এ দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নাই। এবং আগামী নির্বাচনের জন্য সকল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে এক হতে বলা হয়েছে। নির্মূল কমিটির সকল জেলা ও থানা প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে, ‍”আমার ভোট আমি দেব মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে দিব” এই কথাটি মনে রেখে জেলা ও থানা পর্যায়ে ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক জামায়াত-শিবির চক্র এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

কে এমপি নির্বাচন করবে, তাঁর জনসমর্থন কতটুকু? যার যার থানা ও জেলা এলাকায় আওয়ামীলীগে ঢুকে কোনো যুদ্ধাপরাধীর ছেলে-মেয়ে রাজনীতি করছে কিনা? আওয়ামীলীগে বিএনপি-জামায়াত অনুপ্রবেশ করছে কিনা? এসব জানতে হবে, কেন্দ্রকে জানাতে হবে। প্রতিটি জেলা ও থানার নির্মূল কমিটির প্রতিনিধিগণ তাদের নিজ নিজ এলাকার সমস্যার কথা নির্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলনে নিজ নিজ বক্তব্যে তুলে ধরেছেন।

গত ৩ ও ৪ আগস্ট সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’দিন ব্যাপী রাজধানী ঢাকার বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে (১৫/২ তোপখানা রোড, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে) একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের প্রথম দিনে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। এবং সম্মেলনের ২য় দিনে বক্তাগণের বক্তব্যে জানা গেল, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহুমাত্রিক সন্ত্রাস ও সহিংসতা আশঙ্কা করার কথা বলেন, যা প্রতিহত করার জন্য সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও উদ্যোগ করার জন্য বলেন। উক্ত সম্মেলনের ৫টি কর্ম-অধিবেশন শুধুমাত্র নির্মূল কমিটির প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত ছিল।

কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে জানা গেল নির্মূল কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বছরে একবার ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র প্রতিনিধি সম্মেলনের বিধান রয়েছে। ২০১৭ সালে ৭ম জাতীয় সম্মেলন ও রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, ৭ম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আহ্বানে এই বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত নির্মূল কমিটির সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও সংগঠকদের এই প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য সংগ্রামী অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল।

কাজী মুকুল বলেনÑ প্রায় সাতাশ বছর আগে শহীদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার যে আন্দোলন আরম্ভ করেছিলেন বহু ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে তা আজ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বহুলাংশে সম্পন্ন হয়েছে, বাকি রয়েছে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানি হাই কমা-ের বিচার।

তিনি আশা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মহাজোট আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এলে তা সকল যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচার সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করা যাবে। কিন্তু আমাদের জন্য এর চেয়ে কঠিন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর ১৯৭২-এর মূল সংবিধান পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়া, যা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন, তিরিশ লক্ষ শহীদের স্বপ্ন, যা এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক সমগ্র জাতির প্রত্যাশা।
নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয় যে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর প্রধান সহযোগীদের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির যেভাবে মৌলবাদীকরণ ও সাম্প্রদায়িকরণ হয়েছে, প্রশাসন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেভাবে মওদুদিবাদী, ওহাবিবাদী ধ্যানধারণা শেকড় বিস্তার করেছে, তা নির্মূল করতে হলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য বলেছেন।

নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেনÑস্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকে দেখছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি কীভাবে ক্ষমতায় গিয়ে কিংবা ক্ষমতার বাইরে থেকে মুক্তিযুদ্ধের মহান অর্জনগুলো ধ্বংস করতে চেয়েছে। ‘৭১-এর গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের প্রধান দল জামায়াতে ইসলামী কখনও বাংলাদেশের মাটিতে শেকড় গাঁড়তে পারত না, ক্ষমতা শরিক হতে পারত না, যদি না তারা বিএনপির মতো বড় দলের সার্বিক সহযোগিতা না পেত। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির গাঁটছড়া এমনই শক্ত যে, বিএনপির নেতারা আর জামায়াতের নেতারা এখন এক ভাষায় কথা বলেন, এক লক্ষ্যে রাজনীতি করেন এবং একই ধরনের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাস করেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে লবিং করার জন্য জামায়াত আট দশ বছর আগে বিদেশে যেসব লবিস্ট ভাড়া করেছিল, তারা এখন বিএনপির জন্য কাজ করছে।

তিনি বলেন ‘৭১-এর গণহত্যার দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের পর বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া বলেছেন, তাদের নাকি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গ্রেফতার ও বিচার করা হয়েছে। জামায়াত আর বিএনপি সব বিষয়ে একই ভাষায় কথা বলছে। দীর্ঘকাল একসঙ্গে ঘর করতে গেলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যেমন মনোমালিন্য হয় কখনও জামায়াত-বিএনপির মধ্যে তেমন কিছু ঘটলেও বাংলাদেশকে একটি সন্ত্রাসী, মোল্লাতান্ত্রিক ইসলামী রাষ্ট্র বানাবার জন্য তাদের যে অটুট বন্ধনে বেঁধে দিয়েছে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইÑসে বন্ধন আমৃত্যু থাকবে। তিনি বলেন আমাদের সভপতি শাহরিয়ার কবির পাকিস্তান গিয়ে জামায়াত-বিএনপির আইএসআই সম্পৃক্ততার একাধিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন কাজী মুকুল বলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র সাড়ে চার মাস বাকি রয়েছে। বিভিন্ন কারণে এই নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। দীর্ঘ বার বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে জামায়াত-বিএনপি জোট যে কোনওভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অতীতের যে কোনও সময়ে তুলনায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের মতো ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনীতিবিদ, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের হত্যার নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা আমরা জাতীয় দৈনিকসমূহের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে পড়েছি। তাদের এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হলে সরকার ও নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন জামায়াত-বিএনপির মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক জোট কোনওভাবে আবার যদি ক্ষমতায় আসে ‘৭১-এর পরাজয়ের ষোলআনা প্রতিশোধ নেবে তারা। বাংলাদেশকে তারা জিয়াউল হকের পাকিস্তানের মতো জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাবে এবং হিন্দু-বৌদ্ধ খৃস্টানদের দেশছাড়া করবে। রোহিঙ্গাদের দারিদ্র, অসহায়ত্ব ও স্বজনহারানোর বেদনা ও ক্ষোভকে ব্যবহার করে জামায়াতের বিভিন্ন এনজিও রোহিঙ্গা তরুণদের মওদুদিবাদের জেহাদী মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছে; বলছে কেউ যেন মায়ানমারে ফিরে না যায়। আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মাকান্ডে তারা রোহিঙ্গাদেরও ব্যবহার করবে।

তিনি বলেন বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখালঘু সম্প্রদায়ের ভেতর বিভেদ সৃষ্টির পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে তারা যাতে ভোট দিতে না পারে এর জন্য ২০০১-এর চেয়েও ভয়াবহ ষড়যন্ত্র করছে জামায়াত-বিএনপির জোট। ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত নির্বাচনী এলাকায় যে কোনও হামলা-সন্ত্রাসের গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নির্মূল কমিটিকে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

এই প্রতিনিধি সম্মেলনে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও প্রতিষ্ঠান থেকে যে সব নেতা উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনের ভিত্তি হচ্ছে আদর্শবাদ। নির্মূল কমিটির নেতা-কর্মীরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, নির্মূল কমিটির এই আন্দোলন মানুষের মঙ্গলের জন্য, সমাজ ও দেশের কল্যাণের জন্য। আন্দোলনের জন্য এই উপলব্ধি যেমন প্রয়োজন, তার পাশাপাশি প্রয়োজন এই উপলব্ধিকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার সর্বাত্মক প্রস্তুতি। আমাদের তরুণ নেতৃত্বকে শুধু সংগঠনের উপযুক্ত করে গড়ে তুললে চলবে নাÑগোটা জাতিকে দিক নির্দেশনা প্রদানের যোগ্য নেতা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত এই আন্দোলন দু-এক মাস কিংবা দু-এক বছরে শেষ হবার নয়। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অশুভ শক্তির শিকড় আমাদের সমাজের অনেক গভীরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষবৃক্ষকে চিরদিনের মতো ধ্বংস করতে হলে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার, ধৈর্য এবং আদর্শের কঠিন শপথে বলীয়ান হওয়া দরকার। আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক, আধুনিক, ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। যে দেশে ধর্মের নামে মানুষের সঙ্গে মানুষে বিভেদ, হানাহানি ও সন্ত্রাসী সৃষ্টি করা হয়, যে সমাজ শোষণ ও পীড়নের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, সেই দেশ কিংবা সেই সমাজের জন্য একাত্তরে ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মদান করেননি। আমাদের কাক্সিক্ষত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জীবনে সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যে তরুণ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেনি, দ্বিতীয় পর্বের এই মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক তারাই এবং সেনাপতির দায়িত্বও তাদের পালন করতে হবে। এই দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গোটা বাঙালি জাতিকে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্বও আমাদের গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা বাঙালি জাতি, যে জাতির কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা কেউ ইসলাম ধর্মের অনুসারী, কেউ হিন্দু, খৃস্টান বা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা কোনও ধর্মীয় আচরণই পালন করেন না। এ ছাড়া প্রায় অর্ধশত আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বাংলাদেশের বহুত্ববাদী সমাজকে আরও সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে। কিন্তু যে পরিচয় আমাদের এক সূত্রে গ্রথিত করেছে, একই প্রকৃতির রূপরসগন্ধ অনুভব করতে শিখিয়েছেÑসে পরিচয় হচ্ছে আমরা মানুষ। এই পরিচয় দেশ, কাল ও সমাজের গ-ি অতিক্রম করে আমাদের মহত্তর জীবনবোধে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের চেতনাকে এভাবেই গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন আমরা লড়ছি ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক জামায়াত-শিবির চক্র এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সংখ্যায় কম হলেও জামায়াত ঐক্যবদ্ধ, একই সঙ্গে নৃশংসও বটে। দেশ ও জাতির সংকট মুহূর্তে সব সময়ে নির্মূল কমিটির অত্যন্ত কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে এবং এর জন্য চরম ত্যাগের স্বীকার করতেও হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলনের সাফল্য এবং আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির বিজয় কামনা করেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি, লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন ধর্ম যখন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয় তখন তার প্রধান অনুষঙ্গ হয় গণতন্ত্রহীনতা ও অসহিষ্ণুতা, যার অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে সংঘাত ও সন্ত্রাস। গত শতাব্দীতে রাজনৈতিক ইসলামের তিন প্রধান তাত্ত্বিক মিশরের ‘ইখওয়ানুল মুসলেমীনে’র হাসান আল বান্না ও সাঈদ কুত্ব্ এবং অখন্ড ভারতবর্ষে ‘জামায়াতে ইসলামী’র প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদি ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য যাবতীয় হত্যা, সন্ত্রাস ও ধ্বংসযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছেন; যার চূড়ান্ত রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এবং তাদের প্রধান রাজনৈতিক ও আদর্শিক মিত্র জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে গণহত্যা ও নারী নির্যাতন সহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে পাকিস্তানের অখন্ডতা ও ইসলাম রক্ষার দোহাই দিয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী সাধারণ মানুষকে তারা হত্যা করেছে ‘দুষ্কৃতকারী’, ‘পাকিস্তানের দুষমন’, ‘ইসলামের দুষমন’, ‘ভারতের এজেন্ট’ ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে। জামায়াতের এই রাজনীতি, রণনীতি ও রণকৌশল এখনও অক্ষুণœ রয়েছে।

তিনি বলেন শুধু ৩০ লক্ষ বাঙালি নয়, মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকান্ড থেকে আরম্ভ করে গত চার দশকের অধিক কাল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনুসারী রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী এবং সাম্প্রতিককালে ‘নাস্তিক’ আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণ লেখক ও অনলাই অ্যাক্টিভিস্টদের যাবতীয় হত্যাকান্ড এই রাজনীতিরই অন্তর্গত। ধর্মের নামে এসব হত্যা, সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধ নির্মূলের পাশাপাশি ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সহযোগীদের হত্যা না করে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান ধর্মের নামে রাজনীতি ও সন্ত্রাস বাংলাদেশে পুনঃপ্রবর্তন করতে পারতেন না।

তিনি বলেন পৃথিবীর অন্য কোনও দেশে সরকার পরিবর্তন হলে রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে যায় না। আমেরিকা থেকে আরম্ভ করে প্রতিবেশি ভারত ও পাকিস্তানের দিকেও যদি তাকাইÑসরকার বদল হলেও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে কোনও মৌলিক পরিবর্তন ঘটে না। কারণ পৃথিবীর কোনও দেশে এমন কোনও দলকে রাজনীতি করতে দেয়া হয় না যারা রাষ্ট্রের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে, কিংবা সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী কাজ করে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে এক বিস্ময়কর ব্যতিক্রম। এখানে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি শুধু রাজনীতিই করে না, স্বাধীন বাংলাদেশের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে অধিকাংশ সময় তারাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষমতায় ছিল। বাংলাদেশের এই বিচিত্র চরিত্র নিয়ে মুনতাসীর মামুনের দুটি বই আছে, একটির শিরোনামÑ‘সব সম্ভবের দেশ’, অপরটি ‘যে দেশে রাজাকার বড়।’

তিনি বলেন ২০১৪ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের লাহোরে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদির পুত্র বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হায়দার ফারুখ মওদুদি আলোচনা প্রসঙ্গে আমাকে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর কোনও রাজনৈতিক অধিকার থাকতে পারে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াত হচ্ছে জারজ সন্তান। কারণ এই দলটি বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করেছে। জারজ সন্তান যেমন পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে পারে না তেমনি জামায়াতও বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারে না। শেখ হাসিনাকে বলুন দ্রুত এদের নিষিদ্ধ করতে। নাহলে তারা বাংলাদেশের সর্বনাশ করবে।’ শাহরিয়ার কবির তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘দল নিষিদ্ধ করলে জামায়াতের কর্মীরা কী করবে, কোথায় যাবে? হায়দার ফারুখ বলেছেন, ‘তারা মানুষের খেদমত করবে, কৃতকর্মের জন্য বাংলাদেশের মানুষ এবং আল্লাহর কাছে মাফ চাইবে। বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের মাফ না করে স্বয়ং আল্লাহও তাদের মাফ করবেন না।’
শাহরিয়ার কবির বলেন লাহোরে হায়দার ফারুখ মওদুুদির সঙ্গে এরপর বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে। ‘৭১-এর গণহত্যার সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততার এমন সব তথ্য তিনি দিয়েছেন, যা আমাদের জানা ছিল না। এসব তথ্য রয়েছে উর্দুতে লেখা লাহোর থেকে প্রকাশিত জামায়াতের বিভিন্ন প্রকাশনায়, যা আমাদের নাগালের বাইরে। হায়দার ফারুখ বলেছেন, ‘জামায়াত সম্পর্কে আমি যা জানি আর কেউ তা জানেন না।’ আমার ‘জার্নি টু জাস্টিস’ প্রামাণ্যচিত্রে তিনি বলেছেন, ‘৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশে ৩৫ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে, যার বিবরণ রয়েছে কেন্দ্রƒীয় জামায়াতের প্রকাশনায়।

লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ, মানবিক ও মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং জামায়াতের মতো ফ্যাসিস্ট মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক দলের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের জন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নিমর্ূূল কমিটি গত ২৭ বছর ধরে আন্দোলন করছেন। নির্মূল কমিটির আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় এসেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আরম্ভ হয়েছে, অবহেলিত, লাঞ্ছিত মুক্তিযোদ্ধারা হৃত গৌরব ফিরে পেয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেরর উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশে সমগ্র বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে সীমানা প্রসারিত করার পাশাপাশি আমাদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছেÑযা বানচাল করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চিহ্নিত শত্রু এবং তাদের সহযোগীরা বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র ও তৎপরতা রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন কার্যক্রম বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করছে।
তিনি বলেন ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পাশাপাশি জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের ভয়াবহ উত্থানের কারণে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক নিরাপত্তাও বিপণœ হয়েছিল। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নজিরবিহীন নির্যাতনের কারণে ২০০১ সালে নির্বাচনের পর প্রায় ৩ লক্ষ হিন্দু প্রতিবেশী ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকার উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। ২০০১ সালের অক্টোবরে ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর উত্তরপুর্ব ভারতের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন খালেদা জিয়ার সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেনÑ শেখ হাসিনা তাদের সন্ত্রাসী মনে করেন, পক্ষান্তরে খালেদা জিয়া মনে করেন তারা স্বাধীনতাকামী। এভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট বার বার বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিপন্ন করেছে।
তিনি বলেন যে কোনও দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা যত দুর্বল হয় সে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি জননিরাপত্তাও বিপন্ন হয় এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির ভেতর থাকে। বিএনপি-জামায়াত জোর সরকারের আমলে ১২৫টি জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা আমরা প্রকাশ করেছিলাম। জামাতুল মুজাহিদীনের শীর্ষ নেতা, শীর্ষ মৌলবাদী সন্ত্রাসী সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই নওগাঁয় শরিয়া আদালত বসিয়ে যখন নিরীহ মানুষ ও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের হত্যা ও নির্যাতন করছিল তখন তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী বলেছিলেন, ‘বাংলা ভাই’ নাকি ‘মিডিয়া সৃষ্ট কাল্পনিক চরিত্র’। এরপর আমেরিকার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিনা রোকা বাংলাদেশে এসে নিজামীর কাছে রসিকতা করে জানতে চেয়েছিলেন, আপনার বাংলা ভাই-এর খবর কী? (ডযধঃ ধনড়ঁঃ ুড়ঁৎ ইধহমষধ ইযধর?)। খালেদা জিয়ার বিএনপি-জামায়াত জোট যদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় থাকত জঙ্গী দমনের নামে আমেরিকা এতদিনে ঘাঁটি গেঁড়ে বাংলাদেশকে ইরাকের মতো গোরস্থানে পরিণত করত। জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাসের ঘটনা বর্তমান সরকারের আমলেও ঘটেছে। তবে এসব ঘটনার জন্য কারা দায়ী দেরেশর মানুষ যেমন জানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও জানে। শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার যেভাবে জঙ্গীদমন করেছে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, বর্তমান সরকারের সময়কালের সঙ্গে আমরা যদি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামল তুলনা করিÑযে কোনও বিবেচনায় তখন আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। একটি দেশ যত বেশি সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হবেÑজাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়টি তত বেশি গুরুত্ব পাবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সময় লক্ষ্য রাখতে হয় জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত সকল ক্ষেত্রে একইভাবে উন্নয়ন হচ্ছে কিনা। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি, সার্বিক উন্নয়ন এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল বঙ্গবন্ধুর সংবিধান। আলোকাভিসারী একটি দেশ ও জাতিকে লক্ষুচ্যুত করার জন্য এই সংবিধানের আমূল পরিবর্তন জরুরি ছিল, যে কাজটি জেনারেল জিয়া অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করেছেন। সংবিধান এমন কোনও দলিল বা ধর্মগ্রন্থ নয় যে, কখনও তা সংশোধন করা যাবে না। কীভাবে তা করা যাবে তা এই দলিলেই বলা হয়েছে। জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখল করেছিলেন অসাংবিধানিকভাবে, যে বিষয়ে খালেদা জিয়ার আমলেই সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। যৌক্তিক কারণেই জেনারেল জিয়া এবং তার উত্তরাধিকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংবিধানের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা থাকতে পারে না।
লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, জেনারেল জিয়ার আমল থেকে বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির মৌলবাদীকরণ ও সাম্প্রদায়িকীকরণ জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ক্রমশঃ দুর্বল থেকে দুর্বলতর করেছে, যার চূড়ান্ত রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ২০০১Ñ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের জমানায়। আগামী নির্বাচনে তরুণ নির্বাচকমন্ডলীÑযারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি, বেড়ে উঠেছেন এক অন্ধকার সময়ে, অথচ দেশকে ভালবাসেন, মানুষকে ভালবাসেন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে গর্ব অনুভব করতে চান, দেশ ও সমাজ গঠনে অবদান রাখতে চানÑবাংলাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়গুলো তাদের বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে।
লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট জানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সক্ষমতা ও শক্তি উৎস কী। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে হলে তাদের সবলতা ও দুর্বলতা সম্পর্কে জানা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবেলার সময় কোনও দল বা গোষ্ঠী যদি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার উপর আঘাত করে, রাষ্ট্রকে দুর্বল ও অচল করতে চায়Ñতা কোনও নাগরিকেরই কাম্য হতে পারে না। ২০১৪ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোটের তা-ব আমরা দেখেছি। নির্বাচন বানচালের জন্য মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক ও যুদ্ধাপরাধী অধ্যুষিত এই জোটের নেতারা যে নজিরবিহীন সন্ত্রাস করেছেন, যেভাবে জননিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দুর্বল করতে চেয়েছেন, তা কখনও সমর্থন করা যায় না। আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করতে গিয়ে রাস্তায় চলন্ত গণপরিবহনে আগুনবোমা নিক্ষেপ করে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে মারতে হবেÑএ রাজনীতি বাংলাদেশ কেন কোনও সভ্য সমাজ অনুমোদন করতে পারে না। সে সময় আমরা বলেছিলাম বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুনসন্ত্রাসে যে শত শত মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে, চিরতরে পঙ্গু হতে হয়েছে, তাদের গায়ে কি লেখা ছিল তারা সবাই আওয়ামী লীগের কর্মী, বা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়? তাদের ভেতর কি এমন মানুষ ছিল না যারা জামায়াত-বিএনপিকে ভোট দেয়? তাছাড়া কেউ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে তাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারতে হবে এ কোন মানসিকতা? কোন গণতন্ত্র তা অনুমোদন করে? বিএনপি-জামায়াতের নেতারা অহরহ বলছেনÑ শেখ হাসিনার ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। বাসে বোমা মেরে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে মারা কি কারও গণতান্ত্রিক অধিকার হতে পারে? টেলিভিশনের টক শোতে যারা দেশে গণতন্ত্র নেই বলে মাতম করেন এসব প্রশ্নের জবাব তাদের দিতে হবে।
তিনি বলেন ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোটের নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, গৃহে অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের বাড়িঘর দখল করে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার হাজার হাজার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সব সময় অস্বীকার করেছে। এনিয়ে গণমাধ্যমে লেখার জন্য আমাদের গ্রেফতার করে অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। জামায়াতের পোষা জঙ্গীদের বোমা হামলা, হত্যা ও সন্ত্রাসের জন্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও আমাকে সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্র ও জেলা পর্যায়ের বহু নেতাকে কারানির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। অন্যদিকে প্রকৃত অপরাধীরা সরকারের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে থেকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার শান্তি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড-বোমা হামলা করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমান সহ দলের ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। বর্তমান প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী বিএনপি-জামায়াত জোটের এই নৃশংস বোমা হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন, অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গিয়েছেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এসব নৃশংসতাকে শুধু প্রশ্রয় দেননি, বার বার এর দায় আওয়ামী লীগ ও ভারতের উপর চাপাতে চেয়েছেন। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে ময়মনসিংহের তিনটি সিনেমা হলে হরকতুল জেহাদের বোমা হামলা ও হত্যাকান্ডের পর মুনতাসীর মামুন ও আমাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে এই মর্মে লিখিত দেয়ার জন্যÑএসব বোমা হামলা নাকি আওয়ামী লীগ ও ভারত করেছে।
তিনি বলেন খালেদা-নিজামীদের জমানায় ভারতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সামরিক অস্ত্র চোরাচালান হয়েছে। ২০০৪ সালে দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় জামায়াতের আমীর ও খালেদা জিয়া সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী সহ তৎকালীন গোয়েন্দা বিভাগের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। সেই সময়ে বাংলাদেশে আনা বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র বর্তমান সরকারের আমলে সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে। এরপরও একাদশ নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপির নেতারা দিল্লী গিয়ে সরকারের নীতি নির্ধারকদের কাছে তদবির করেছেনÑভারত যেন তাদের সমর্থন করে। ভারত কেন, এমন কোনও দেশ কি আছে যারা নিজেদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করে অন্য দেশের সন্ত্রাসীদের সমর্থন করবে?
তিনি আরও বলেন দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস উৎপাদন, বিপণন ও রফতানির ক্ষেত্রে পাকিস্তান প্রধান ভূমিকায় থাকলেও প্রতিবেশি বার্মা যেভাবে তাদের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা ও নির্যাতন সহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করছে, যার অভিঘাতে বার লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে, তা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য বাড়তি হুমকি বলে আমরা মনে করি। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে পাঠাতে হবে এটা শুধু শেখ হাসিনার সরকারই বলছে না, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বলছে, অথচ জামায়াত এবং সমমনা মৌলবাদী সংগঠনগুলো, তাদের পোষা এনজিওগুলো রোহিঙ্গাদের বলছে তারা যেন বার্মায় ফিরে না যায়। জামায়াত নাকি ক্ষমতায় গেলে বার্মার বিরুদ্ধে জেহাদ করে আরাকান দখল করে ‘স্বাধীন রোহিঙ্গা মুসলিম রাষ্ট্র’ স্থাপন করবে। জামায়াত এবং তাদের সহযোগীরা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ক্যাম্পে মাদ্রাসা স্থাপন করছে, তাদের জঙ্গীবাদী জেহাদে উদ্বুদ্ধ করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগামী নির্বাচনে রোহিঙ্গারা জামায়াম-বিএনপির একটি ট্রাম্প কার্ড হতে পারে। বহু রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছে এবং ভোটার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, যা জাতীয় সংসদেও আলোচিত হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা কতভাবে বিঘিœত হতে পারে তা ভারতের পাশাপাশি রাশিয়া ও চীনকেও বোঝাতে হবে। এসব কারণে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র নীতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন অতীতের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সমূহ আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান। বাংলাদেশকে মোল্লা উমরের আফগানিস্তান বা জিয়াউল হকের পাকিস্তানের মতো মনোলিথিক মুসলিম রাষ্ট্র বানাবার এজেন্ডা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত কাজ করছে। বিএনপিও মনে করে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক এবং এই ভোট ব্যাংক ভাঙার জন্য আতঙ্ক ছড়িয়ে, হামলা করে তাদের দেশছাড়া করতে হবে কিংবা ভোটপ্রদানে বিরত রাখতে হবে।
তিনি বলেন শুধু নির্বাচনের সময় নয়, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ভিকটিমদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য আমরা চার বছর আগেই বর্তামন সরকারকে বলেছি ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে হবে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও নির্যাতনের জন্য দায়ী অপরাধীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদান সম্ভব হয় না বর্তমান সাক্ষ্য আইনের কারণে। অপরাধীরা শাস্তি না পেলে অপরাধের যে পুনরাবৃত্তি ঘটেÑএটি একটি স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। আমরা আবারও দাবি জানাচ্ছিÑবর্তমান সংসদই এই আইন পাশ করার জন্য। সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে এখনও বৈষম্য ও পীড়নের শিকার হচ্ছেন। এসবের অবসানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। আশু করণীয় সম্পর্কে আমরা ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতেই আইনমন্ত্রীকে স্মারকপত্র দিয়েছি, যেখানে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের পাশাপাশি ‘জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন’ গঠন এবং পৃথক ‘সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠনের দাবি ছিল। আমরা বিশ্বাস করি এসব দাবি একমাত্র শেখ হাসিনার সরকারই পূরণ করতে পারে এবং এ কারণেই বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন-২০০৮ এ উদ্বোধনী অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, শোক প্রস্তাব করেনÑশহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন (আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি)। আলোচকবৃন্দ ছিলেনÑরংপুর বিভাগের ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু, সভাপতি, রংপুর জেলা, সিলেট বিভাগের মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী, আহ্বায়ক, সিলেট জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফয়জুর রহমান ফকির, আহ্বায়ক, ময়মনসিংহ জেলা, বরিশাল বিভাগের শ্রী শান্তি দাস, সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল জেলা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, কুমিল্লা বিভাগের এডভোকেট কাজী মানসুরুল হক খসরু, আহ্বায়ক, নোয়াখালী জেলা, সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটি, খুলনা বিভাগের সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন, সাধারণ সম্পাদক, খুলনা জেলা, সহ-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, চট্টগ্রামের বিভাগের সাংবাদিক শওকত বাঙালী, সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম জেলা, সহ-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, রাজশাহী বিভাগের উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, সদস্য, রাজশাহী জেলা, সহ-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিভাগের কাজী মুকুল, সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রƒীয় কমিটি। সঞ্চালক ছিলেন শহীদ সন্তান ডাঃ নুজহাত চৌধুরী শম্পা, সহ-সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি।
১ম কর্ম অধিবেশন (বেলা ২টাÑ৪টা) পর্যন্ত ছিলেন সভাপত্তিমন্ডলীর বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক (্উপদেষ্টা, নির্মূল কমিটি), শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী (সহ-সভাপতি, নির্মূল কমিটি), অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বড়–য়া (সদস্য, কেন্দ্রƒীয় কমিটি), জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে সঞ্চালক ছিলেন কাজী মুকুল (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রƒীয় কমিটি), ২য় কর্ম অধিবেশনে ছিলেন সভাপত্তিমন্ডলী ঃ ক্যাপ্টেন (অবঃ) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক (উপদেষ্টা, নির্মূল কমিটি), মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ (সহ-সভাপতি, নির্মূল কমিটি), অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি) ও জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে সঞ্চালক ছিলেন কাজী মুকুল (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি), ৩য় কর্ম অধিবেশন (সকাল ১০টাÑবেলা ১টা) পর্যন্ত ছিলেন সভাপতিমন্ডলী ঃ শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ (সহ-সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটি), অধ্যাপক মেসবাহ কামাল (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি), ডাঃ মামুন আল মাহতাব (অর্থ সম্পাদক, কেন্দ্রƒীয় কমিটি), জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের বক্তব্য সঞ্চালক ছিলেন কাজী মুকুল (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি)। ৪র্থ কর্ম অধিবেশন (বেলা ২টাÑ৪টা) পর্যন্ত ছিলেন সভাপতিমন্ডলী ঃ শহীদজায়া সালমা হক (মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি), মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি), এডভোকেট খোন্দকার আবদুল মান্নান (সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি), জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের বক্তব্য সঞ্চলক ঃ কাজী মুকুল (সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি), সমাপনী অধিবেশন (বিকেল ৪:৩০Ñ৬:৩০ মি.) পর্যন্ত ছিলেন সভাপতি ঃ জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পদ্মভূষণ (উপদেষ্টা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি), প্রতিনিধি সম্মেলনের ৪টি কর্ম অধিবেশনের সারসংকলন লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির (একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি)।
সমাপনী অধিবেশনে আলোকবৃন্দ ছিলেন মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম (অব.) (মুক্তিযুদ্ধে এস ফোর্সের অধিনায়ক, সাবেক সেনা প্রধান), মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ (অব.) (উপদেষ্টা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি), সঙ্গীতশিল্পী মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল (আহ্বায়ক, সাংস্কৃতিক স্কোয়াড, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি), শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময় (তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি), ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী (আইন সম্পাদক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি), জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল (সাধারণ সম্পাদক, নির্মূল কমিটি রাজশাহী মহানগর শাখা), প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি (মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার), সঞ্চালক ঃ শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর (কেন্দ্রীয় সদস্য, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি)।