প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হলেও, দেশসেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও আবাসন সমস্যা বেশ পুরাতন। এসব কারনে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ও গবেষনা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছিল নানাভাবেই। তবে সরকার ব্যপক উন্নয়ন প্যাকেজ নিয়ে এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে। গত ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও আবাসিক ভবন নির্মান প্রকল্পে জন্য প্রায় ৬২০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ বরাদ্দ ঘোষণা করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সভায় এই উন্নয়ন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এমন অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক বটে। এট বড় অঙ্কের বরাদ্দ এর পূর্বে কখনো হয়নি। এই উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২৫টি অংশ আছে। আসুন আমরা দেখে নিই উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কি কি থাকছে – (ক) জগন্নাথ হলের অভ্যন্তরে ১০০০ ছাত্রের জন্য ১৫তলার ভিত নিয়ে ১০ তলা রবীন্দ্র ভবন নির্মাণ (১টি হল ভবন এবং ১টি হাউজ টিউটর ভবন ভবন নির্মাণ, (খ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলের অভ্যন্তরে ১০০০ ছাত্রের জন্য ১১তলা ভিত দিয়ে ১১ তলা হল ভবন নির্মাণ, (গ) তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য ২০ তলা ভিত দিয়ে ২০তলা টাওয়ার নির্মাণ, (ঘ) চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের অবশিষ্ট ১১তলা হতে ২০তলা পর্যন্ত নির্মাণ (ঙ) জগন্নাথ হলের সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের অবশিষ্ট ৯ ও ১০তলা নির্মাণ (চ) ফজলুল হক মুসলিম হলের ৭৬ জন ছাত্রের জন্য দক্ষিণ ব্লকের এক্সটেনশন ভবনের অবশিষ্ট ৫তলা নির্মাণ, (ছ) আর্থ এণ্ড এনভায়রনমেন্ট সায়ন্সেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং এণ্ড টেকনলোজি অনুষদের জন্য সায়েন্স ক্যাফেটেরিয়ার জায়গায় কার্জন হলের আদলে ২টি বেসমেন্ট ফ্লোরসহ ২১তলা ভিত দিয়ে ২১তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, (জ) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের ৭তলা থেকে ১২তলা পর্যন্ত নির্মাণ, (ঞ) সেন্টার ফর এডভান্স রিসার্চ ইন সায়েন্সেস ভবনের অবশিষ্ট ৮তলা থেকে ১০তলা পর্যন্ত নির্মাণ, (ট) মোকাররম হোসেন খন্দকার বিজ্ঞান ভবনের মধ্য ব্লকের অবশিষ্ট ৬তলা থেকে ১০তলা নির্মাণ, (ঠ) কলা ভবনের ৬তলার অবশিষ্টাংশ এবং ৭তলা নির্মাণ, (ড) চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটার ভবনের অবশিষ্ট ৩তলা থেকে ৫তলা নির্মাণ, (ঢ) প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান ভবনের অবশিষ্ট ৩তলা থেকে ৫তলা নির্মাণ, (ণ) মৎস বিজ্ঞান ভবনের অবশিষ্ট ২তলা থেকে ৫তলা নির্মাণ, (ত) সায়েন্স কমপ্লেক্স ভবনের অবশিষ্ট ৭তলা থেকে ১০তলা পর্যন্ত নির্মাণ, (থ) ভূতত্ত্ব বিভাগের ৩য় তলা নির্মাণ (দ) ডিজাস্টার সায়েন্স এণ্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জন্য বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, (ধ) কার্জন হল এলাকায় বিভিন্ন একাডেমিক ভবন এবং হলের জন্য ২০০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপন, (ন) ৮ “ ডায়া ১০০০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপন, (প) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি গভীর নলকূপের জন্য ৬০ কেভিএ পিএফআই ইউনিট এবং ৪টি সাবমারসিবল পাম্প মটর ক্রয়, (ফ) চারুকলা অনুষদের জন্য ১০০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন সরবরাহ ও স্থাপন। এছাড়াও ইন্টারনেট, আসবাবপত্র, সরবরাহ ও সেবা খাতে বিবিধ ব্যয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, প্রাথমিক পর্যায়ে গতবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ণ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৭৭৯ কোটি টাকার প্রক্কলিত ব্যয়ের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। যার মেয়াদকাল ধারণা করা হয়েছিল ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এক বছর যাচাই বাছাই এবং বিভিন্ন সম্ভাবনা যাচাই করে গত মঙ্গলবার তা অনুমোদিত হয়। নতুন প্রকল্পের মেয়াদ এবছর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ধার্য করা হয়।
#অসমর্থিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত সংবাদ