Headlines

গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিদের জয়, সর্বাধিক ভোট পেয়েছেন আতাউর রহমান প্রধান

ঢাবি সিনেট নির্বাচন

২৫টি আসনের ২৪টিতেই তারা জয়ী হয়েছে। বিএনপি সমর্থক প্যানেল থেকে জিতেছেন শুধু সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে একাধিক দিন ভোটগ্রহণের পর রোববার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন শুরু হয় গণনা।

বিকাল পৌন ৫টায় ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালনকারী উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ।

এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তিনটি প্যানেলে মোট ৮০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্য থেকে ২৫ জনকে সিনেট সদস্য হিসেবে বেছে নেন ভোটাররা।

Mr. Md. Ataur Rahman Prodhan
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান।

এবার ভোটার ছিলেন ৪৩ হাজার ৯৯৭ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট; তার মধ্যে ২২ হাজার ৬৪২ জন ভোট দিয়েছেন।

সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের প্রার্থী রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান। তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৭ ভোট।

সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন একই প্যানেলের প্রার্থী বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য মো. নাসির উদ্দিন; তার ভোট সংখ্যা ৯ হাজার ৮১৮।

আওয়ামী সমর্থক প্যানেল থেকে একমাত্র অধ্যাপক শরীফ আহমদ সাদী হেরেছেন। বিপরীতে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী পরিষদের প্যানেল থেকে জিতেছেন অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার, ১০ হাজার ৫০০ ভোট পেয়ে।

বাম সমর্থকদের প্যানেল প্রগতি পরিষদ কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কেউ বিজয়ী হতে পারেননি।

গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল (১২০৪৬ ভোট), সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ (১১৫৬৮), সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম (১১১৬৭), প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী (১১০৩৩), ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার (১০৭৩৯), ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী (১১০৮৫), সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা অহিদ (১১৫৫৭), জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম সরকার (১১৩৩৫ ভোট)।

বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বারী (১০৪৫২), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জিত কুমার সাহা (৯৯৬৭) সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানম (১১১২০), নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার (১০৬৮১), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম বাহালুল মজনুন চুন্নু (১১৫৯৬), সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এ আর এম মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল (১১৯২৪) সিনেট সদস্য হয়েছেন।

ব্যাংকারদের মধ্যে রূপালী ব্যাংকের এমডি আতাউর ছাড়াও নির্বাচিত হয়েছেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী (১০৫২৮), রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা এম ফরিদউদ্দিন (১১৯৬৮), জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ফার্স্ট সহকারী ব্যবস্থাপক এ বি এম বদরুদ্দোজা (১০৬৭২), কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. লিয়াকত হোসেন মোড়ল (১০৮৩৮), সোনালী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মো. আলাউদ্দিন (১০৭৮৬)।

চিকিৎসকদের মধ্যে সিনেট সদস্য হয়েছেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান (১১২২০), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ (১০৫১২)।

এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম এনামুল হক চৌধুরী ১০ হাজার ৯২৪ ভোট পেয়ে সিনেটে সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিত এই ২৫ জন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার কেন্দ্র সিনেটে দায়িত্ব পালন করবেন আগামী তিন বছর।  সিনেটে মোট সদস্য সংখ্যা ১০৫।

গণতান্ত্রিক ঐক্য পরিষদের বিজয়ী প্রার্থী অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই বিজয় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির; এর মধ্যে বিজয়ের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির ওপর দেশের মানুষের যে বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে, সেই বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে।”

বিজয়ী প্রার্থী অধ্যাপক সামাদ বলেন, “এ বিজয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ও বঙ্গবন্ধুকন্যার বিজয়।”

বিএনপি সমর্থক শিক্ষক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়েদুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষিত সমাজের ভোট মেনে নিয়েছি। ভালো করার চেষ্টা করেছিলাম।

“তবে সরকারদলীয় প্রার্থীরা বেশি অর্থ খরচ করেছে। তারা ঢাকা বাইরে কেন্দ্র ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও ভোলায় জেলায় বিশৃঙ্খলা করেছে, এই বিশৃঙ্খলার প্রভাব ভোটে পড়েছে।”

প্রগতি পরিষদের প্রার্থী অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “ফলাফল পর্যালোচনা করে আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলো খতিয়ে দেখব।”

শনিবার সিনেট ভবন, টিএসসি ও শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। ঢাকার বাইরে ২৮টি কেন্দ্রে ৬, ১৩ ও ১৬ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হয়।