শিরোণামে এমন কিছু থাকা উচিৎ নয় মানুষ যাতে তাদের (মানুষের) নেতিবাচক ধারণায় আরও উস্কানি পায়, সাংবাদিকতার দায়িত্ববোধের বিষয়টিকে বড় করে দেখার বোধহয় সময় এসেছে।
খবরটি হচ্ছে, গতকাল ১৮/২/২০১৯ তারিখে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেছনের ডাস্টবিন থেকে ৩১ টি মানব ভ্রূণ (ফিটাস) উদ্ধার করা হয়েছে।
এই খবরটিতে আসলে ‘মানব ভ্রূণ’ ব্যতীত অন্যকিছু লেখার সুযোগ নেই। আছে কি?
কিন্তু পত্রিকাগুলো এক্ষেত্রে আবেগের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন চটকদার শিরোণাম খুঁজেছে, যাতে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। এবং এ ধরনের শিরোণামগুলো মানুষের মধ্যে উস্কানিও তৈরি করছে।
ফলোআপনিউজ মনে করছে, যেহেতু ‘মানব ভ্রূণ’ বিষয়টি এমন একটা বিষয় যা নিয়ে মানবিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মতভেদ রয়েছে, তাই এক্ষেত্রে আবেগী এবং চটকদার শিরোণাম দিয়ে খবর তৈরির একেবারেই সুযোগ নেই।
কিছু বিষয় বিজ্ঞান ভিত্তিক এবং যথাযথ, সেগুলো নড়চড় করার কোনো সুযোগ নেই। ‘মানব ভ্রূণ’ বিষয়টিও সেরকম একটি বিষয়। এটিকে ‘নবজাতক’, ‘শিশু’, বা শুধু ‘মানব’ লেখার কোনো সুযোগ নেই। এতটুকু দায়িত্ব সংবাদকর্মীদের মধ্যে থাকা উচিৎ বলে মানুষ মনে করে।
এবি নিউজ নামে একটি অনলাইনের শিরোণাম হচ্ছে,
ডাস্টবিনে ৩১ নবজাতকের লাশ: ২ জনকে সাময়িক বরখাস্ত
বাংলা নামের এই পত্রিকার শিরোণাম হচ্ছে,
হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে ২২ মরদেহ উদ্ধার
ডিবিসি চ্যানেলের খবরের স্ক্রল হচ্ছে—
আমাদের সময় লিখেছে—
বরিশালে ডাস্টবিন থেকে মিলল ২৫ নবজাতকের ভ্রূণ
ভোরের কাগজ লিখেছে—
বরিশালে হাসপাতালের ডাস্টবিনে ২২ নবজাতকের লাশ
জাগোনিউজ নামে একটি অনলাইনের শিরোণামও একই প্রকার আবেগ নির্ভর
বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলা ট্রিবিউন -এরকম প্রায় সব পত্রিকাই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে পুঁজি করে নিউজ করেছে। অথচ ‘মানব ভ্রূণ’ লেখাটা ছিল তাদের নৈতিক এবং যৌক্তিক দায়িত্ব, ‘পাশাপাশি ঘটনাটা আসলে কী’ সেটা বোঝার জন্য আরও অপেক্ষারও প্রয়োজন রয়েছে। কোনোভাবেই ঘটনার আদ্যপান্ত জানার আগে সিদ্ধান্তমূলক নিউজ করার সুযোগ নেই। শিরোণামে এমন কিছু থাকা উচিৎ নয় মানুষ যাতে তাদের (মানুষের) নেতিবাচক ধারণায় আরও উস্কানি পায়, সাংবাদিকতার দায়িত্ববোধের বিষয়টিকে বড় করে দেখার বোধহয় সময় এসেছে।