এবার গরু পাচারের কালো টাকা লেনদেনের হদিস পেতে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকে হানা সিবিআই আধিকারিকদের। ওই মামলার মুখ্য তদন্তকারী আধিকারিক সহ আরো দুই আধিকারিক বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিউড়ির ওই ব্যাংকের সদর দপ্তরে তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি বর্তমান ও প্রাক্তন ব্যাঙ্ক ম্যানেজারদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এদিন গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য, স্বরূপ দে সহ আরো এক আধিকারিক বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সিউড়ি শাখায় প্রায় তিন ঘন্টা ধরে তদন্ত করলো। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে প্রায় ১৭৭ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের এখনো পর্যন্ত হদিস পেয়েছে সিবিআই। যেখানে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা হয়েছে, ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। ওই মামলায় প্রায় চার মাস ধরে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন বিশেষ সূত্রে গিয়েছে আমোদপুর, সাঁইথিয়া, বোলপুর সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রাইস মিলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট একাউন্টগুলিতে টাকা লেনদেন করা হয়েছে। ওই সমস্ত অ্যাকাউন্টগুলি ২০২০ এবং২০২১ সাল জুড়ে হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়ে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সেটা হল একই হাতের লেখায় সমস্ত স্বাক্ষর করা হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলি কৃষকদের ধান বিক্রির টাকার লেনদেনের জন্য খোলা হয়েছিল এবং সেখানেই গরু পাচারের কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে কৃষ্ণ মুর্মু, মমতা মির্ধা নামে দুটি একাউন্ট হোল্ডারের নাম জানা গিয়েছে, যা দুটি একই হাতের লেখায় স্বাক্ষর দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। এদিন বেলা তিনটা নাগাদ সিবিআই এর ওই তিন আধিকারিক এদিন বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সিউড়ি শাখায় আসেন। প্রথমেই তারা ব্যাংকের রেকর্ড রুমে যান তারপর তারা নির্দিষ্ট কিছু তথ্য ব্যাংকের আধিকারিকদের সামনে তুলে ধরেন এবং অ্যাকাউন্টগুলি থেকে তথ্য জানতে চান । ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত এবং বিগত বছরের আগস্ট মাসে সিউড়ির ব্যাংক ম্যানেজার থেকে কিন্নাহার শাখায় ট্রান্সফার হয়ে যাওয়া ইন্দ্র বাহাদুর গুরুং এদিন সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। রীতিমতো ধমকের সুরে তাদের কাছ থেকে জানতে চান কার নির্দেশে এ ধরনের কাজ করা হলো। যে সময় ওই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল সেই সময় ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন ইন্দ্র বাহাদুর গুরুং। সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ সিবিআই আধিকারিক এর দল একাউন্টের তথ্য নিয়ে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান। সিবিআই অধিকারীক বলেন, ” এদিন ওই সমস্ত একাউন্ট থেকে যে নথি ও তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেগুলি আদালতে পেশ করবেন”। বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সিউড়ি শাখার বর্তমান ম্যানেজার অভিজিৎ সামন্ত বলেন,”সিবিআই আধিকারিকরা কিছু তথ্য নেওয়ার জন্য এসেছিলেন তাদেরকে সেই তথ্য দেওয়া হয়েছে। এখানে ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই”। বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের পরিচালন সমিতির জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা নুরুল ইসলাম বলেন, ” ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য আমাদের এখতিয়ারের বিষয় নয়। আমাদের পরিচালন সমিতি ব্যাংকের যাবতীয় উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভাল করে থাকে।
অনলাইন অবলম্বনে
ব্যাংকে ১৭৭টি বেনামী একাউন্ট: বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন