প্রাকৃতিক // দিব্যেন্দু দ্বীপ

পরাজয়
আমি হার মেনে নিয়েছি,
তোমরা নয়,
আমিও নই,
কারণ, অমোঘ সে প্রকৃতি
আমাকে প্রতি পদে পদে
আটকে দিয়েছে!
অব্যাখ্যাত ব্যর্থতা
দিনে দিনে আমাকে ভীষণ
ক্লান্ত করে তুলেছে।
এখন শরীরও
আরো কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে
পালানোর প্রহর গুণছে।
আমি মেনে নিয়েছি,
আমি বুঝে গিয়েছি যে—
হয় না, যুক্তিতে এবং চেষ্টায় হয়নি,
অমোঘ সে প্রকৃতি চায়নি।
হাতের তালুতে সাবধানে
শিশুর সাধের মার্বেল
ধরে রাখার মতো পরিবারটাকে
ধরে রেখেছিলাম,
আচমকা কে যেন পিছন থেকে
ধাক্কা দিলো,
সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো।
অমোঘ সে প্রকৃতি
আমাকে যেন কিছুতেই দেয়নি
কোনো স্বীকৃতি।
সুন্দর স্বাভাবিক সপ্রতিভ একটি শিশুর
হঠাৎ সব থেমে গেলো!
যে শিশু দুই বছর বয়সে
চাবি দিয়ে তালা খুলতে পারতো,
সঠিক উচ্চারণে “বৃষ্টি পড়ছে”
বলতে পারতো,
সে এখন ‘মা’ ডাকতে পারে না,
ছয় বছর বয়সে
একটি কাজও সে নিজে করতে পারে না!
যে নারী ভালোবাসার জন্য আকাশ
পাতাল এক করে ফেলেছিলো একদিন,
আপন বা পরের
কোনো ফাঁদে সে পা দিয়ে
আমার বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা মামলা করে দিলো,
খুন করারও নাকি ফন্দি করেছিলো!
অমোঘ সে প্রকৃতি
আমাকে আছড়ে বিছড়ে বুঝিয়ে দিলো যে—
মানুষ খুবই নগন্য,
আমি এখন সত্যিই ভীষণ ছিন্নভিন্ন।
মৃত্যু আমাকে এখন হাতছানি দেয়,
কিছুই নয়, একদমই আর কিছুই নয়।
নিয়ন আলোয় এখন যেমন দেখছি,
ঈশপের শিশু মুখখানি যা একটু ভাবায়।
আর সব মায়া কেটে গেছে,
সব ইচ্ছে আকাঙক্ষাই যেন পড়ে গেছে পিছে।