তালা ও চাবি ।। অলভ্য ঘোষ

তালা ও চাবি
তালা ও চাবি
চার হাজার বছর আগে মিশরীয়দের তালা-চাবির ব্যবহার জানা ছিল। তালা চাবির সংসার মানব সভ্যতার হাত ধরে প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে।
এমনি এক তালা আর চাবি সোনার সংসার করছিল। তাদের ভাব ভালোবাসার অন্ত ছিল না। সম্পর্ক ছিল এত মজবুত যে তাদের সুখ চুরি ডাকাতি হবার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। সন্ধ্যে বেলা অফিস থেকে ফিরত চাবি; তালা সারাদিন চাবির অপেক্ষায় দরজায় ঝুলত। বাড়ি ফিরে তালা খুলে গভীর এক ভালবাসায় প্রবেশ করতো চাবি। দিনান্তে এক হতো দুটো লৌহ যন্ত্র। তারপর কি তাকি বলে দিতে হবে। আমাদের অনেকেরই স্থুল দৃষ্টিতে তাদের যন্ত্র শরীর বৈ হৃৎপিণ্ড চোখে পড়ে না।
এক লেখক চাবি আর তালার প্রেম কাহিনী লিখতে শুরু করলো। তালার নাভির
নিচে ছিদ্র পথে চাবি যখন প্রবেশ করে তাকে আদর করতে করতে; সুখানুভূতিগুলো যে শীৎকারে শব্দের মধ্যে কুসুমিত হয়ে ওঠে। লেখকের মনে হয় তাই চরম সুখ। যে সুখানুভূতি ঈশ্বরেরও নেই। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুখের বিশ্লেষণে; সেই সব আবেগের শীৎকার ভেঙে গড়ে; লেখক তালা আর চাবির কাহিনীকে নিয়ে একটা মর প্রেমের কাহিনী লিখতে চায়।
গল্পগুলো সুখে মিলনেই শেষ হলে কতো ভালো হয়, তাই না? কিন্তু জীবন এমনটা নয়। চরম সুখ হল যে সুখ দুঃখের সমাহারে আমাদের ত্বক মসৃণ হয়ে ওঠা। ছাতার কাপড় কিংবা কচু পাতার গাত্রে যেমন জল কণা ধরে না তেমনি সুখ দুঃখ রহিত হতে পারা। আর তাই আত্মার-উন্মোচন। আধ্যাত্মিকতা। আর সে সুখে পৌঁছতেই মানুষের বাকি সুখের সিঁড়ি বাওয়া। কেউ পৌঁছাতে
পারে। সেই চরমে। কারবা মাঝ পথেই পা হড়কায়।
লেখক ক্রমশ বুঝতে পারে।
চাবি তালার জীবনের মাঝখানে একটা লকার ঢুকে পড়ে। ভাবছেন তো এ আর এমনকি গল্প। অতি সাধারণ। আকছার ঘটে। হ্যাঁ সাধারণ না থাকলে অসাধারণ কে আলাদা করে চেনাই যেতো না।
লেখক একা বসবাস করে নিরিবিলিতে।একটি খবরের কাগজের অফিসে চাকরি করে।নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা। সাহিত্য তো আর সাংবাদিকতা নয়। সাংবাদিকতা মানে সংবাদ পরিবেশন হুবহু একটা খবরকে বর্ণনা। আর সাহিত্য খবর নয় জীবনের খোঁজ। প্রাণের,অস্তিত্বের ভেতর থেকে হৃদয়ের ভিতর ডুব-গেলে অনুভূতির মনি-মুক্ত কুড়ানো। বিবেকের অনুশোচনা, চেতনার অনুমোদন, হৃদয়ের অনুকম্পনের মাধ্যমে আত্মার অনুসন্ধান। আধ্যাত্মিক যোগাযোগ রয়েছে এতে।
লেখকের চাকরিটা ভাল লাগছে না আর, লেখক যা লিখছে এডিটরের পছন্দ হচ্ছে না। এডিটরের ফরমাইস মতো সে কিছুই লিখে উঠতে পারে না। এতক্ষণে হয়তো বুঝে ফেলেছেন—এই তালা আর চাবির আলাদা কোনো ঘর বাড়ি নেই। লেখকের দরজার তালা, সে অফিসে যাবার সময় দরজায় ঝোলে, চাবি থাকে পকেটে। ঘর কি কেবল ইট বালি সুরকির হয়, ঘর হয় প্রেম, ভালোবাসা, মমতায়, বিশ্বাসে। ঘর একটা ভাবের আধার। মানুষের মূল্যবোধগুলো থরে থরে সাজিয়ে একটা গৃহ গড়ে ওঠে যা আমাদের সুখ, শান্তি, নিরাপত্তার স্থান। কচ্ছপের যেমন খোলাটি তেমনি বর্ম তার সবটা যে চোখে দেখা যায় এমন নয় ভেতরে লুকনো থাকে, উপলব্ধি করা যায়। আর এই উপলব্ধিতেই ঘর একটা শৃঙ্খল, একটা প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে। তার একটা নিয়ম নীতি সংবিধান ও গড়ে ওঠে। গোটা পৃথিবীটাই একটা বৃহৎ বাড়ি, আমাদের এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মাঝে মহাদেশ বৈঠকখানা ঘর হলে দেশ খাবার ঘর, রাজ্য শোবার ঘর শহর স্নানের ঘর। ন্যায় নীতি বিশ্বাস কিছু মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে। আর চার দেয়ালের খাপে খাপে বসে থাকা একটা ইট নড়ে গেলে সমস্ত দেয়াল টাই নড়বড়ে হয়ে যায়। তাসের ঘর ভেঙ্গে পড়ে নৈতিকতার শিথিলতায়।
না আর একটুও ভাল লাগছিল না লেখকের এডিটর রুমে বসেই তিনি লিখছিলেন কনডমের আত্মকথা। ধারাবাহিক ফিচার মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কথানিয়ে।
সাধারণ মানুষ কনডমের মত ইউজ অ্যান্ড থ্রো। পৃথিবীর যোনি ফাঁক করে তার সব সম্পদ লুট করতে দৃঢ় লিঙ্গ ঢুকিয়ে দিচ্ছে পুঁজি; জলে, স্থলে, জঙ্গলে—সাম্রাজ্যবাদ, নয়াউপনিবেশিকতাবাদ, লোক-তন্ত্র, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র নামক সাধারণের চামড়ায় তৈরি কনডম জড়িয়ে সাধারণের সামনেই প্রকাশ্যে ধর্ষণ করছে তাদের মা এই দেশ এই ধরিত্রী এই সাধের পৃথিবীকে। কনডম ভরে উঠছে ক্ষমতার ঔদ্ধত্য বীর্যে, তাতে পৃথিবীর কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। ধর্ষিত হলেও, কনডম ফেটেও একটিও অবৈধ সন্তান জন্মাচ্ছে না, অবৈধতাগুলো বৈধ হয়ে যাচ্ছে সব।
ছাপার আগে প্রুফ রিডারের কাছে যাবার আগে এডিটর লেখাটিতে চোখ বুললেন। এসব কেউ পড়বে না। রাবিস। রাগে গজগজ করতে করতে কুটি কুটি করে ছিঁড়ে ফেলল পৃষ্ঠাটি। পেপারটা তো বিক্রি হতে হবে।
ক্যাশ বাক্সর লকারে চাবি মেরে হন হন করে বেরিয়ে গেলেন সম্পাদক।
বিক্রি হওয়া একান্ত জরুরি। বিক্রি হতে না পারলে সে টিকতে পারবে না। সবাই সবাইকে কিনছে বেচছে, লুটছে; কেউ বৈধ নয়।খালি পেটে এভাবে সে আর কতোদিন লড়বে। তার মনে হল একটা বৈধ লুট যদি করা যায়। লকারটা সে না ভেঙ্গে খুলতে চায়।বুক পকেট থেকে বের করলো চাবিটা।
লকারের ফুটোর সামনে চাবি এগিয়ে দিতেই
লকার যেন বলে উঠলো প্লিজ এটা করবেন না।
চাবি বলল,
আমার নিয়ন্ত্রণ অন্যের হাতে।
লেখক থামল না, চাবি খানা লকারের ফুটোয় গুঁজে দিতে দিতে বলল,
আমাদের সবারি তাই।
লকার যেন কাতরে উঠল, চাবিটা তুলনামূলক বড়।
চাবি নেড়ে চেড়ে লেখক যেন বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো কোন ঘাটটা বড়। চাবি যতই নড়েচড়ে উঠলো লকারের সেই ছিদ্র পথে ততোই যেন কঁকিয়ে উঠল লকার।
স্টোর রুমে অনেক যন্ত্রপাতি রাখা আছে। তার মধ্যে একটা ফাইল নিশ্চয় পাওয়া যেতে পারে। খুব সন্তর্পণে লেখক স্টোর রুমে গেলেন। তার ভাবনা অমূলক নয়, একটা ফাইল মিলল সেখানে। সেটা পকেটে নিয়ে সে ফিরে এলো। এডিটর রুমে। চাবিটার ঘাঁটগুলো একটু একটু করে ঘসে বারংবার তালায়
লাগিয়ে তালা খুলতে চেষ্টা করতে লাগলো। লকারের শ্লীলতাহানি হতে হতে এক সময় তার ছিদ্র পথে চাবি একটা মোচর দিয়ে একপাক ঘুরতে সক্ষম হলো। আর কটাস করে লকার গেলো খুলে।
সোনার ডিম পাড়া হাঁস একদিনে কেটে খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। একসাথে অনেকগুলো টাকা নিলে চোখে লাগবে। ক্যাশ বাক্সে প্রতিদিনের বিক্রি হওয়া পত্রিকার নগদ টাকা থাকে সেখান থেকে দুশো পাঁচশ সরালে চটকরে বড়ো রকম সন্দেহ দানা বাঁধবে না হিসেবের খাতায়। বেহিসাবি লেখক বেশ হিসেবি হয়েই সেখান থেকে পাঁচশো টাকার একটা নোট দুই আঙ্গুলে তুলে লকার বন্ধ করলো। বোঝার উপায় রইল না যে সম্পাদক ব্যতিরেকে কেউ লকার খুলেছে।
এদিকে চাবির গ্লানির শেষ রইল না। লকারের ক্ষুদ্র ছিদ্র পথে প্রবেশে চাবি যে সুখ পায়নি এমনটা নয়। কিন্তু লকার খোলা পর্যন্তই সুখ। সে প্রলোভন মিটে চাবি বাইরে আসতেই তার আত্মদংশন হতে লাগলো, তালার ভালবাসাকে ঠকালোও সে। মনে মনে নিজের আত্মপক্ষ সমর্থনে এও ভাবল এতে তো তার কোনো হাত ছিল না, সে ছিল অন্যের হাতে নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু মন তক্ষুণি পালটা বলল সে হাত প্রলোভনের হাত। প্রলোভনের হাত এমনই হয় নিয়ন্ত্রণহীন।
গ্লানি আরও তীব্র হল একটা পাইটের বোতল আর খাসির মাংস কিনে বাড়ি ফিরে বহুবার চাবি ঘুরিয়েও লেখক যখন তালা খুলতে পারল না। তালার শরীরে চাবির অনুপ্রবেশে কোথায় যেন একটা কীসের অভাব ঘটলো, ঘাঁটে ঘাঁটে খাপে খাপে আজ আর মিলল ন। যে তীব্র শিহরণে তালার মুখ খোলে তা কিছুই অনুভূত হল না। নিজের প্রতি লজ্জায় ঘৃণায় চাবির আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করছিল। তালা ভাবছিল তবে কি তার ভেতর কিছু অসংগতি দেখা দিল—হয়ত জং পড়েছে তালায়।
খুব ছোট থেকেই লেখক লেখা আর যেকোনো রকম তালা খোলা রপ্ত করেছে খেলার ছলে। এই দুটোর ভেতর একটা সাযুজ্য রয়েছে। এক একটি লেখা এক একটি ভাবনা, চেতনা, অনুভূতির আবিষ্কার! মনের ভেতর এই সমাজের অনেক অন্ধকার কুঠুরি আছে। যার দরজায় ঝুলছে বড় বড় তালা, তাই খুলে ফেলা গেলে তার ভেতরের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিবরণ লেখা হয়ে ওঠে। অপরের মনের তালা খোলা চলে। কিন্তু অপরের ঘরের তালা খোলা সমাজ গর্হিত কাজ। মনের তালা
খোলায় কোনো গ্লানি নেই। অপরের গৃহের তালা খোলা মানে চুরি! যেকোনো গর্হিত কাজের শেষে গ্লানির শেষ থাকে না। সে গ্লানি কি লেখককে স্পর্শ করবে না! যার কোনো নৈতিক বোধ নেই সে কীসের লেখক! সে তো চেতনারহিত অনুভূতিশূন্য জড় পদার্থ।
যাইহোক দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁধের অফিস ব্যাগটা নামালো লেখক। ব্যাগের ভেতর থেকে বের করলো টেনশন রেঞ্জ বানাতে স্টিলের পেনের ঢাকনা আর পেপার ক্লিপ। পেপার ক্লিপটা টেনে সোজা করে মাথাটা অল্প একটু বাঁকিয়ে তৈরি করলো লক কিপার। টেনশন রেঞ্জটা তালার ফুটোর মোটা অংশের দিকে ঢুকল, দরজার সামনে পড়ে থাকা চাবি চোখ বন্ধ করে নিল।তালা যেন বাবাগো করে উঠলো। তারপর চাবি খোলার মতো হালকা চাপ দিতে দিতে লক পিকারের বাঁকানো হাল্কা অংশটি দিয়ে লক পিলারের কাজ করাতে ফুটর পাতলা অংশের দিকে রেখে তালার ফুটর পাতলা অংশটা সামনে পিছনে খোঁচাতে লাগলো লেখক। যত খোঁচাল তালা যেন ততই কাতরে উঠল। কানে হাত চাপা দিল চাবি। লক কিপারটা কিছুক্ষণ খোঁচাতে খোঁচাতে টেনশন রেঞ্জটি হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে হালকা চাপ দিতে থাকতেই হঠাৎ
কাতরাতে কাতরাতে তালা গেল খুলে।
তারপর অনেকক্ষণ কেটে গেছে। কসাকসা মাংস একটা প্লেটে। আরেকটা গ্লাসে মদ ঢেলে ল্যাপটপটা কোলে নিয়ে বসেছে লেখক। সামনে পড়ে রয়েছে চাবি আর তালা; আজ চাবি আর তালার প্রেম কাহিনীটা সমাপ্ত করবে সে। স্নান করে বসেছে ঠাণ্ডা মাথায়। দুই পেগ মদ পেটে পড়তেই মাথাটা চিনচিন করে উঠলো। ঘোর ঘোর মতো হচ্ছে তার। ঝিমুনির মধ্যে দেখল, চাবি যেন তালার সর্বাঙ্গে চুমু খেয়ে বলছে, আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমায় ঠকিয়ে। তালা তার আবেষ্টনীর মধ্যে চাবিকে নিয়ে যেন বলে উঠলো, আমি যে সুখ থেকে তোমায় বঞ্চিত করেছি তাতে আমি ক্ষমারও অযোগ্য। আমার অক্ষমতার জন্য আমি লজ্জিত। তুমি সুখী হও। যা পেলাম আমি তাতেই সুখী। বারবার সেই সুখ স্মৃতিগুলো মন্থন করে বাঁচব। তোমার ওপর আমার কোনো অভিযোগ নেই, ক্ষোভ নেই। চাবির সেই ক্ষয়ে যাওয়া ঘাঁটগুলো আবেশে নড়ছে চড়ছে তালার ছিদ্রপথে। হয়তো তার যন্ত্র শরীরে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। তবুও অনুভূতির সিক্ততার কোনো খামতি নেই, এতো অন্তরের বাইরের কিছু নয়। বাইরের যতো ক্ষমতা অক্ষমতাগুলো আত্মায় কিছুই প্রভাব ফেলতে পারে না;যন্ত্র শরীর থেকে আমাদের আত্মায় উত্তরণ ঘটলে অভাব অভিযোগ বলে আর কিছু থাকে না! প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির অনেক ঊর্ধ্বে আত্মনিবেদিত প্রাণেই পৃথিবীর সব সুখ ঘনীভূত।
হাত ঘড়িটা বেঁচে পাঁচশো টাকা আর একখানা Resignation letter নিয়ে
পরের দিন লেখক অফিসে গেলেন। তার দরজা থাকলো হাটকরে খোলা, তার আর হারাবার কিছু নেই, চুরি হবার ভয় নেই, রুজি রুটির অনিশ্চয়তাও তাকে আর স্পর্শ করছে না। সম্পাদককে পাঁচশো টাকা ও চিঠিখানা দিয়ে আদ্যোপান্ত সমস্ত ঘটনা বললেন।
-ইচ্ছে করলে আপনি আমাকে পুলিশও দিতে পারেন।
এ কথা বলতেও তার দ্বিধা হল না।
সম্পাদক হাঁ করে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলেন, এমন খ্যাপাটে লেখক তিনি জীবনে দেখেননি। তিনি লেখকের গতকাল সমাপ্ত করা লেখাটি দেখতে চাইলেন। কাঁধের ঝোলা ব্যাগের ভেতর থেকে ল্যাপটপটা বারকরে সম্পাদকের ইমেইল আইডিতে ইমেইল করলো লেখক। সম্পাদক ইমেইল খুলে অ্যাটাচ ওয়ার্ড ফাইলে তালাচাবির প্রেম কাহিনীতে চোখ বুলোতে বুলোতে অভিভূত হয়ে গেলেন। লেখকের দ্বন্দ্ব নৈতিকতার টানাপড়েন, তারই খন্ডিত স্বত্বা তালাচাবির ভেতর থেকে ফুটে উঠছে। সত্যিকারের শিল্প এমনি হয়। সত্যিকারের শিল্পী এমনি খ্যাপাটে হয়। সম্পাদকের বুঝতে বাকি রইল না। এই প্রথমবার সে লেখকের লেখার প্রশংসা করলেন। গম্ভীর ভাবে বললেন,
– শুনুন চাকরি ছেড়ে কাজ নেই। আপনাকে আর ফরমায়েসী লেখা লিখতে হবে না। সাপ ব্যাঙ -যা মনে আসে তাই লিখুন।এইতো বেশ ভালোই হয়েছে। আর বড় বাবুর সাথে কথা বলে দেখছি মাহিনাটা কত কী বাড়ানো যায়!

পৃথিবীর সকল মানুষের মনে যে দিন ভালোবাসার চাবি দিয়ে আত্মার দরজার তালা খুলে যাবে সেদিনই প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি, সাম্য, মৈত্রী। চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি কোনো অপরাধ আর সংগঠিত হবে না। পুলিশ প্রশাসন কোট কাছারি উঠে যাবে। মানবতার জয়গানে অমানবিক শব্দটা লুপ্ত হবে। জানি না সে দিন কতো দূরে। তবে স্বপ্ন দেখতে দোষ কোথায়?