কোনো জিনিসের ক্রয়মূল্যই শুধু সেই জিনিসের ব্যয় নয়। সাথে যোগ হবে জিনিসটির মেনটেনান্স এবং অপারেটিং কস্ট। ধরা যাক, আপনি ২০,০০০.০০ টাকা দিয়ে একটি স্মার্ট ফোন কিনেছেন। তাহলে ক্রয়মূল্য এবং মেনটেনান্স মিলিয়ে প্রতিদিন কত খরচ যাচ্ছে এটির পিছনে? ধরলাম, ফোনটি যদি হারায়ে না যায় বা দুর্ঘটনাবশত নষ্ট না হয়, তাহলে দুই বছর (৭৩০দিন) ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ, শুধু সেট বাবদ প্রতিদিন খরচ করছেন, ২৭ টাকা। আসলে এর চেয়ে বেশি খরচ করছেন আপনি ইন্টারনেট চালিয়ে এবং মোবাইলে কথা বলে। যদি প্রতিদিন নেট চালাতে ২০ টাকা এবং কথা বলা বাবদ ১৫ টাকা খরচ করে থাকেন, তাহলে মোট খরচ দাঁড়াচ্ছে ৬৫ টাকা। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন অ্যাপস্ ব্যবহার করলে ইন্টারনেট খরচ আরো বেশি হয়।
এত গেল টাকা পয়শা খরচের দিক। এবার আসা যাক, সময় এবং শ্রম বিষয়ে। একটি স্মার্টফোন চালাতে পুরো শরীর এবং মস্তিষ্ক বিনিয়োগ করতে হয়, ফলে একইসাথে অন্য কোনো কাজ করা সম্ভব হয় না। অর্থাৎ, যখন ফোনটি চালাচ্ছেন তখন কার্যত আপনি স্টুপিড হয়ে থাকছেন। হাটে-মাঠে-বন্দরে-বাসে সবখানে এটি চালানোর অর্থ জীবনের অন্যান্য মাত্রা থেকে আপনি বঞ্চিত হচ্ছেন। জীবনের প্রাচুর্য এবং বহমানতা সবকিছুই বয়ে যাচ্ছে আমাদের অজান্তে।
সময় কাটানো জন্য এ ধরনের কোনোকিছু মাঝে মাঝে দরকার হয় বৈকি। তবে সেটি বই হলেই সবচেয়ে ভালো। সময় কাটে বিনা খরচে, পাশাপাশি শরীরের ক্ষতিও হয় না।
তাই বলে কি স্মার্টফোন দরকার নেই? দরকার আছে। কার দরকার আছে, কতটুকু দরকার আছে, কখন দরকার আছে? এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাছাড়া দরকার বিষয়টাই হচ্ছে নিজের উপর চাপিয়ে দেওয়া একটা বিষয়। দরকার নাই মনে কররে অনেক কিছুই দরকার হয় না। ইন্টারনেট দরকার আছে, তবে নতুন নতুন ভার্সনের স্মার্টফোন কতটুকু দরকার আছে, তা ভেবে দেখার বিষয়।