https://youtu.be/jfBPZCKUiYU?t=1
একটা সময় ছিল যখন ডাব মানুষ নিজেরা খেত, খুব যে নিজেরা খেত তাও নয়, কেউ অসুস্থ হলেই ডাব খাওয়া হতো। মূলত ডাব থেকে নারকেল হলে (পরিণত হলে নড়ালে ভেতরে খল খল করে পানি নড়ে) তা পেড়ে বিক্রি করা হতো। ঝুনো নারকেল বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়, পাশাপাশি ঝুনো নারকেল থেকে তেল হয়। নারকেল তেল বাংলার মানুষ প্রধানত মাথায় দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতো। রান্নায়ও ব্যবহৃত হতো কখনও কখনও। তবে এখন দৃশ্যপট বদলেছে।
এখন মানুষ ডাব খায়, ডাব খাওয়াটা যে খুব উপাদেয় তা মানুষ বুঝে গেছে, বাড়িতে না খেলেও শহরের মানুষ ডাক কিনে খায়। শহরে, বিশেষ করে ঢাকার শহরে এখন প্রচুর ডাব নারকেল বিক্রি হয়। ফলে গ্রামে পাইকাররা ফড়িয়া পাঠাচ্ছে ডাব সংগ্রহ করতে । ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে তারা গ্রামের গেরস্থদের কাছ থেকে ডাব কিনে নিচ্ছে, এই ডাব সাইজ এবং স্থানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়।
কেন মানুষ ডাব বিক্রি করতে বেশি উৎসাহিত হচ্ছে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার মসনী গ্রামের বলাই দাস বলেন, “ডাব বিক্রি করলে গাছে নারকেল বেশি হয়, ঝুনো বানাতে গেলে গাছে অনেকদিন রাখা লাগে, সেক্ষেত্রে নতুন নারকেল ধরতে পারে না। তাছাড়া ডাব নারকেল এবং ঝুনো নারকেলের দামেও খুব একটা পার্থক্য হচ্ছে না। আরেকটি বিষয়- ডাব নারকেল কিন্তু বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে না, ফড়িয়ারা বাড়িতে এসে ফড়িয়ারা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে মানুষ এখন ডাব বিক্রিতে উৎসাহ পাচ্ছে। লাভবানও হচ্ছে। তাছাড়া এখন মাথায় দেওয়ার তেল মানুষ কিনে আনে বাজার থেকে। বাড়িতে ভাঙানো তেল ঘন হওয়ায়, তার চেয়ে একটু পিউরিফাই করা এবং থিন করা তেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। তাই বাড়ির নারকেল দিয়ে তেল বানানোর যে চল ছিল সেটি আর খুব একটা থাকছে না।”
বাগেরহাটের মিলের মালিক স্বপন বসু বলেন, “নারকেল তেলের চাহিদা কমেছে এমন নয়, তবে গ্রামের মানুষ আগের মতো নারকেল তেল ভাঙায় না। আগে নারকেল দিয়ে রান্নাও হতো, সেটি তো আর হয় না।”
তেল কোম্পানিগুলোর চাহিদা কীভাবে মিটছে এমন প্রশ্নের জবাবে মি বসু বলেন, “ওরা আমাদের কাছ থেকে তেল কিনে নিচ্ছে। তাছাড়া ওদের একশো গ্রাম তেলে একশো গ্রামই নারকেল তেল লাগে না। কিছু থিনার মিশিয়ে ওরা বাজারজাত করে, এবং এটাই স্বাস্থ্য সম্মত। তাছাড়া আগে যেমন সব মানুষ মাথায় তেল দিত, এখন তা নয়, মানুষ এখন শ্যাম্পু ব্যবহার করে, এরপর কন্ডিশনার দেয়।”