বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি খুলনা শাখার পদাধিকারপ্রাপ্তরাঃ কার দোকান কোনটি?

খুলনা

সভাপতিঃ শ্রী সমরেশ সাহা, পলাশ জুয়েলার্স-এর স্বত্তাধিকারী;

সহ-সভাপতিঃ জনাব জিএম মাহবুবুর রহমান পিনু, নিউ আল আমি জুয়েলার্স-এর স্বত্তাধিকারী;

সহ-সভাপতিঃ শ্রী পরিতোষ দত্ত;

সহ-সভাপতিঃ জনাব মশিউর রহমান (মিন্টু),

সহ-সভাপতিঃ শ্রী শিবনাথ ভক্ত, মনশা জুয়েলার্স-এর স্বত্তাধিকারী;

সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী শংকর কর্মকার, পুষ্প জুয়েলার্স-এর স্বত্তাধিকারী;

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী বাসুদেব কর্মকার,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী অসিত চক্রবর্তী,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ জনাব সেখ শওকত আলী,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী রামচন্দ্র পোদ্দার,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী পরিমল কুমার মজুমদার,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী অজয় কুমার বকসী,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী শ্যাম চন্দ্র পোদ্দার,

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ শ্রী প্রকাশ কুমার সাহা

সহ-সাধারণ সম্পাদকঃ

কোষাধ্যক্ষঃ শ্রী শ্যাম ভক্ত, শ্যামা জুয়েলার্স এবং শ্যামা ডায়মন্ড-এর স্বত্তাধিকারী;

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ শ্রী বিজন দত্ত,

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ শ্রী লক্ষণ কুমার দত্ত,

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ জনাবঃ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান;

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ শ্রী প্রাণজয় দাস মিঠু;

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ জনাব মোহাম্মদ আকতার দেওয়ান;

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ শ্রী মানষ দত্ত;

কার্যনির্বাহী সদস্যঃ শ্রী প্রলয় রায়,


খুলনা

সোনার ব্যবসা পরিচালিত হয় কীভাবে, তা জানা কঠিন, জানা গেলেও বলা কঠিন। অনেকেরই বিষয়টিতে আগ্রহ রয়েছে, তবে বাস্তবতা হচ্ছে— বাংলাদেশে এটি একটি গোপন ব্যবসা। গোপন হলে তথ্য অধিকার আইনে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। জানা গেলেও বলা অসম্ভব। দেশে স্বর্ণের মোট চাহিদা, প্রবেশের ‍তুলনায় বৈধপথে স্বর্ণ ঢোকার পরিমাণ খুবই নগন্য। তথ্য বলছে— বাংলাদেশ সোনা পাচারের একটি রুটই বটে। সোনা পাচার হয়ে পাশ্ববর্তী দেশে যায়, আবার গয়না হয়ে তা প্রবেশও করে। অনুসন্ধান থেকে প্রতিবছর কমপক্ষে এক লক্ষ কোটি টাকার স্বর্ণ পাচারের একটি তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

জানা যায়— স্বর্ণ নীতিমালার আওতায় ২০১৯ সালে স্বর্ণ আমদানির জন্য ১৮টি প্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংককে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিলো। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০৬.৭৬ কেজি স্বর্ণ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত স্বর্ণ নীতিমালা অনুসরণ করে দেশে আমদানি হয়েছে মাত্র ৬০ কেজি স্বর্ণ।

২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ প্রায় ৯৯ হাজার ৭৯১ কেজি স্বর্ণ দেশে এনেছে। এর মধ্যে শুধু ২০২২ সালেই এসেছে ৫২ হাজার ১৯৫ কেজি স্বর্ণ, যার মূল্য তখনকার বাজার দর অনুযায়ী ৪৪ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। সেখান থেকে সরকার শুল্ক-কর বাবদ পেয়েছে মাত্র এক হাজার ৭১৪ কোটি টাকা, তা-ও ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায়। এ ছাড়া কিছুটা আমদানি ও জরিমানা বাবদ এ অর্থ এসেছে। কিন্তু ওই সময়ে দেশে স্বর্ণের চাহিদা ছিল এক লাখ কেজি।

প্রশ্ন হচ্ছে, স্বর্ণ নীতিমালা হওয়ার পরও কেন অতি মূল্যবান এ ধাতু বৈধ পথে আমদানি হচ্ছে না। এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্বর্ণ আমদানিতে সবমিলিয়ে ১৫.৫০ শতাংশ শুল্ক-কর প্রযোজ্য। যদিও বাজুসের মতে, ওই হার দাঁড়ায় ১৮-১৯ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ শুল্ক-করের কারণেই আমদানি হচ্ছে না স্বর্ণ।

অন্যদিকে ব্যাগেজ বিধিমালা অনুসরণ করে ক্যারিয়ারের মাধ্যমে আসছে টনে টনে স্বর্ণ। তা-ও মাত্র ৪ শতাংশ করের বিনিময়ে। এনবিআর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্যাগেজ রুলের আওতায় যাত্রীদের মাধ্যমে ২০২৩ সালে ৫২ টন এবং ২০২২ সালে ৫৪ টনের মতো স্বর্ণ দেশে এসেছে। যেখানে বছরে চাহিদা ২০ থেকে ৪০ টন।

বাজুসের তথ্য অনুযায়ী, বছরে দেশের চাহিদা পূরণে ১৮ থেকে ২০ টন নতুন স্বর্ণের দরকার। অর্থাৎ দেশের স্বর্ণালংকার তৈরিতে বর্তমান চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক বেশি। যদিও অফিসিয়াল পরিসংখ্যানের বাইরে ৫-১০ গুণ স্বর্ণ আসছে চোরাচালানের মাধ্যমে, সেটি ভিন্ন বিতর্ক। ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় নামমাত্র করের বিনিময়ে আসা স্বর্ণে যখন চাহিদা পূরণ হয়ে যায় তাহলে কেন বেশি শুল্ক-কর দিয়ে ব্যবসায়ীরা আমদানি করবেন? বাড়তি স্বর্ণ যাচ্ছে কোথায়?

রিজার্ভ স্বর্ণ বলতে কী বুঝায়?

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি বিভাগ জানায়, শুধু চোরাচালানে জব্দ স্বর্ণই দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভল্টে জায়গা করে নেয়, যা নানা সময়ে স্বর্ণ বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেও স্বর্ণ কেনে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি দেওয়ান আমিরুল ইসলাম জানান, একটা সময়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রধান উৎস ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ। এখন কালেভাদ্রে এই স্বর্ণ বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আটক করা স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসার পর সঙ্গে সঙ্গে তা ভল্টে জমা হয়। এরপর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো ভল্টেই থাকে। মামলা নিষ্পত্তির পর সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে এটা নিলাম করে বিক্রি করা টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি চায়, তাহলে তা আন্তর্জাতিক বাজারদরে কিনে নিতে পারে। কেনার পর সেই স্বর্ণ তখন রিজার্ভে জমা হয়।’

তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে বাইরে থেকে কিছু স্বর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিনেছিল। দাম বাড়ার পরে কিছু বিক্রিও করেছে। তবে বর্তমানে স্বর্ণ কেনার প্রয়োজন নেই।

কোন দেশের হাতে কী পরিমাণ স্বর্ণ আছে?

ফোর্বস অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ ৮১,৩৩৬.৪৬ টন সোনা মজুদ রয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩,৩৫২.৬৫ টন সোনার মজুদ রয়েছে জার্মানির।

ইতালিতে ২,৪৫১.৮৪ টন স্বর্ণের তৃতীয় সর্বোচ্চ মজুদ রয়েছে।

ফ্রান্সের সোনার মজুদ রয়েছে ২,৪৩৬.৮৮ টন।

২,৩৩২.৭৪ টন সোনার মজুদ নিয়ে রাশিয়া পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ চীনের কাছে সর্বোচ্চ ২,১৯১.৫৩ টন সোনার মজুদ রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডে ১০৪০.০০টন সোনার মজুদ রয়েছে।

জাপানের সোনার মজুদ রয়েছে ৮৪৫.৯৭ ।

৮০০.৭৮ টন সংরক্ষিত সোনা নিয়ে ভারত তালিকায় নবম স্থানে রয়েছে।

নেদারল্যান্ডের কাছে ৬১২.৪৫টন সোনার মজুদ রয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান কত? জানা গেছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে ১৪ টন সোনার মজুত রয়েছে। এ অনুযায়ী সোনা মজুতের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ ৬৬তম স্থানে রয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত হিসাব করে তালিকাটি তৈরি করেছে ডব্লিউজিসি।

রিজার্ভ হিসেবে (২০২২) বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে মজুদ আছে ১৪ হাজার ৩৩ কেজি স্বর্ণ। তবে এর মাত্র ১৭ শতাংশ জমা আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে। রিজার্ভে থাকা স্বর্ণের ৪২ শতাংশই গচ্ছিত আছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে। বাকি ৪১ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে লন্ডনের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে।

কিন্তু এই তথ্য দ্বারা দেশের প্রকৃত চিত্র বোঝার উপায় নেই, কারণ, বাজারে কী পরিমাণ স্বর্ণ রয়েছে, এ কোন ব্যবসায়ী কতটুকু মজুদ করছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারছে না সরকারের কোনো বিভাগ।