Headlines

সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারিঃ সামার্থ এবং সুনাম থাকার পরও উদ্যোগ এবং আইনের মারপ্যাঁচে হতে পারছে না জাতীয় বা বৈশ্বিক ব্রান্ড

খুলনা

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর অঞ্চলে ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ মিষ্টি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের খুবই পরিচিত ব্রান্ড। ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ নামটি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ব্যবহার করলেও এটি আসলে কোনো অংশীদারী ব্যবসা নয়, প্রত্যেকেই এই একই নামে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। অনেকে নামের আগেপিছে কিছু যোগ করে নেয়— যেমন, ‘আদী সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’, ‘সাতক্ষীরা যাদব ঘোষ ডেয়ারি’, ‘নিউ সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ ইত্যাদি। যেহেতু এটি ট্রেডমার্ক করা কোনো ব্রান্ড নয়, তাই যে যার ইচ্ছেমতো নামটি নিয়ে ব্যবসা করতে পারছে।

খুলনার একজন মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষ জানালেন, ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ নাম নিয়ে আমরা যারা ব্যবসা পরিচালনা করছি, আমাদের মধ্যে কোনো অংশিদারী চুক্তি না থাকলেও এলাকা, সম্প্রদায় এবং অনেক ক্ষেত্রে আত্মিয়তা বিবেচনায় আমাদের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। সারা বাংলাদেশজুড়ে কেন আপনাদের ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ নামে কোনো ব্রান্ড নেই —এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু জেলার নামে কোনো ব্রান্ড করার সুযোগ সরকার না দেওয়ায় আমরা ঐতিহ্যবাহী এ ব্যবসাটিকে জাতীয় পর্যায়ে পরিচালনা করতে পারছি না। তিনি জানান, ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’-এর কারিগরদের বংশপরম্পরায় মিষ্টি তৈরিতে এমন শিক্ষা রয়েছে যে, এটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। সরকার সহযোগিতা করলে এটি একটি বৈশ্বিক ব্রান্ড হতে পারে। তিনি আরো জানালেন, এ অঞ্চলের মিষ্টি এতটাই ভালো যে, কোলকাতার মানুষও সাতক্ষীরা-খুলনার মিষ্টি নিয়ে যায়।

ভারতের টিনজাত মিষ্টির ব্রান্ড রয়েছে। এমনকি সেটি বিদেশে রপ্তানিও হয়। কিন্তু উদ্যোগ এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ তেমন কোনো ‍উদ্যোগ নিতে পারছে না। ফলে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মিষ্টি ভালো হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক খুলনার একজন মিষ্টি ব্যবসায়ী জানান— “ঐতিহ্যগতভাবে মিষ্টি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবসা পরিচালনা করে ঘোষ সম্প্রদায়ের লোকেরা। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্নভাবে আমাদের কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। মিষ্টির প্রধান উপাদান দুধ। মিষ্টির ব্যবসাটি ভালোভাবে চলতে দেওয়ার অর্থ গরুর খামারগুলো ভালোভাবে টিকে থাকবে। গরুর খামারগুলো ভালোভাবে টিকে থাকলে বাংলাদেশে গরুর মাংসের যে সংকট, সেটিও কাটবে। বিষয়টিকে বহুমাত্রিকভাবে দেখা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, সরকার চাইলে আমরা দেশ থেকে বিদেশেও মিষ্টি এবং দুগ্ধজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারতাম।” তিনি ‘সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি’ যাতে একটি আন্তর্জাতিক ব্রান্ড হতে পারে, এজন্য সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান।

সৌজন্যেঃ নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন