ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল হলো সোনার খনির কমিটিগুলোর সমন্বয়ে গঠিত একটি সংস্থা। সোনা শিল্পের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা । সংস্থাটির সদর দপ্তর লন্ডনে এবং ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর অফিস রয়েছে। ডেভিট টেইট বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
বর্তমানে ৩২টি সোনার খনির কোম্পানি এ পরিষদের সদস্য। ৪৫টি দেশে তারা সোনা উৎপাদন করছে। বিশ্বের বড় দশটি গোল্ড মাইনিং কোম্পানির ৫টিই কানাডার। শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি নিউমন্ট। শীর্ষ দশে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার দু’টি কোম্পানি— গোল্ড ফিল্ড এবং অ্যাংলোগোল্ড আশান্তি। স্বর্ণ উৎপাদনে শীর্ষ বিশটি দেশের মধ্যে বিশটিই দরিদ্রপিড়ীত, অর্থাৎ সোনার খনি তাদের হলেও উত্তোলন এবং পরিশোধনের ক্ষমতা তাদের নেই। ঘানা এবং সুদানের কথা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে বলা যায়।
স্বর্ণ কোথায় থাকে
স্বর্ণ একটি বিরল ধাতু। এটা আকরিক আকারে সঞ্চিত থাকে, এবং আকরিক থেকে স্বর্ণ সঞ্চয় করা বেশ কঠিন।
মাটির গভীরে কোয়ার্টজের (এ ধরনের পাথর) পাশাপাশি নদী ও স্রোতের বিছানায় কিছু সোনা পাওয়া যায়।
এই শিল্পের শ্রমিকদের অবস্থা কেমন
স্বর্ণ শিল্পে কর্মরত ঘানার শ্রমিকদের নিয়ে হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ ২০১৫ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো। প্রতিবেদনে উঠে এসেছিলো এই শিল্পে অমানুষিক শিশু শ্রমের বিষয়টি। যে সকল শিশুদের সাথে হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ কথা বলেছিলো, তার মধ্যে ৯ বছরের শিশুও ছিলো। শুধু ঘানা নয়, আফ্রিকার যে সকল দেশ থেকে সোনা সংগ্রহ করা হয়, সবখানেই মারাত্মকভাবে শ্রমিক-অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আকরিক এবং ডাস্ট থেকে দূষণে শ্রমিকরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।
স্বর্ণ যেভাবে বাজারজাত হয়
শত বৎসরেও স্বর্ণ নষ্ট হয় না। ফলে একবার খনি থেকে উত্তলিত হয়ে স্বর্ণ বাজারে প্রবেশ করলে এটি কয়েক প্রজন্ম ধরে বাজারে অবস্থান করে। সোনার গয়নাই একমাত্র ব্যবহৃত পণ্য, যা কখনো পুরোন হিসেবে গণ্য হয় না, এবং ব্যবহারের ফলে দাম কমে না।

সব স্বর্ণই কি খনি থেকে উত্তলিত হয়?
সোনা খনিজ সম্পদ। খনি ব্যতীত সোনার আর কোনো প্রাথমিক উৎস নেই। তবে সম্প্রতি চীনের মোট স্বর্ণ উত্তোলনের পরিমাণ নিয়ে একটি সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে— কোনোভাবে স্বর্ণ ল্যাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে কিনা। নিশ্চিতভাবে বলার মতো কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র এই মুহূর্তে মিলছে না।
সবচেয়ে বেশি গোল্ড বার উৎপাদন করে সুইস কোম্পানি পাম্প (PAMP)। পাম্প বছরে ৪৫০ মেট্রিকটন গোল্ড রিফাইন করে। পাম্প-এর মতো অনেক কোম্পানি গোল্ড বার তৈরি করে। কিনে কিনে বা বানিয়ে সবচেয়ে বেশি গোল্ড বার সংরক্ষণ করে রেখেছে ফোর্ট নক্স, এটি যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ডিপোজিটরি প্রতিষ্ঠান।
