শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেক-এ অবস্থান নিলে চারটি দেশে নজর রাখা যায়

চিকেন নেক

 

চিকেন নেক
করিডোরটি সরাসরি স্পর্শ করেছে ৩টি দেশকে, একইসঙ্গে চীন এবং ভূটান নিকটবর্তী। ভারতের জন্য করিডোরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, এটির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারালে ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ৭টি প্রদেশ বা সেভেন সিস্টার্স স্থলাভাগে বিচ্ছিন্ন হয় যাবে।

শিলিগুড়ি করিডোর বা “চিকেন নেক” দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এর গুরুত্ব মূলত কৌশলগত ও অর্থনৈতিক কারণে।

ভৌগোলিক গুরুত্ব

চিকেন নেক হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি সংকীর্ণ ভূমি। এটি মাত্র ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত, যা ভারতকে তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

এর চারপাশে আছে বাংলাদেশ ও ভুটান। তাই এই পথের মাধ্যমে না হলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো (যেমন আসাম, অরুণাচল, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা) মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারবে না।

সামরিক গুরুত্ব

যেহেতু এটি একটি সংকীর্ণ করিডোর, যেকোনো সময় বন্ধ বা দখল হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত দ্বন্দ্ব (যেমন, অরুণাচল প্রদেশ সংক্রান্ত) এবং বাংলাদেশ ও ভুটানের সীমানার প্রেক্ষিতে এটি সেনা মোতায়েনের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল স্থান।

অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব

এই করিডোরের মাধ্যমে ভারত উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্য ও লজিস্টিক সংযোগ বজায় রাখে।

রেল, সড়ক ও পাইপলাইন নেটওয়ার্কের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ পথ।

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব

ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে এটি প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশ, ভুটান ও চীনের সাথে সীমান্ত-নির্ভর রাজনৈতিক সমঝোতা বা সমস্যার ক্ষেত্রে করিডোরের গুরুত্ব বেড়ে যায়।

চিকেন নেক
ভারত সম্প্রতি এই স্ট্র্যাটেজিক এলাকায় সেনা ও প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়িয়েছে। কিন্তু এখনই বলা যাচ্ছে না যে, পরিস্থিতি এমন কোনো পর্বে এসেছে যেখানে নিয়ন্ত্রণ “হারিয়ে” গেছে বা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে সক্রিয় হয়েছে। তবে এমনভাবে স্থল, জল এবং বায়ুসেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যেটি যুদ্ধের কথাই মনে করিয়ে দেয়।