সিঙ্গাপুরের স্বর্ণের বাজার সম্পর্কে জানিয়েছেন ফলোআপ নিউজ-এর সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি এইচএম ফারুক

সিঙ্গাপুর
স্বর্ণের বাজার
সিঙ্গাপুরে আজকের স্বর্ণের দাম।

সিঙ্গাপুর শুধু গহনা বিক্রির বাজার নয়, এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বুলিয়ন (শুদ্ধ স্বর্ণ বার ও কয়েন) লেনদেন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। লিটল ইন্ডিয়া ডিসট্রিক্টে দোকানগুলো অবস্থিত।

সিঙ্গাপুরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জুয়েলারি হাব হচ্ছে—

মুস্তফা জুয়েলারি;

এসকে জুয়েলারি;

ক্যারি.কে জুয়েলারি;

পো হেং জুয়েলারি;

গোল্ড হার্ট;

ল্যারি জুয়েলারি।

সিঙ্গাপুর
মোস্তফা জুয়েলারির মালিক মুস্তাক আহমেদ হচ্ছেন সিঙ্গাপুরের ৩৭ তম ধনী ব্যক্তি। এশিয়ান ফোর্বসের ২০১১ সালের তালিকাতে তিনি এ অবস্থানে ছিলেন।

দাম জানার আগে সিঙ্গাপুরে স্বর্ণের বাজারের হিসেব নিকেষটা একটু জেনে নেওয়া যাকঃ

সিঙ্গাপুরে ২২ ক্যারেট স্বর্ণ হচ্ছে ৯১৬ গোল্ড। এতে ৯১.৬ শতাংশ স্বর্ণ থাকে। বাকীটুকু সিলভার অথবা কপার। ২৪ ক্যারেটে ৯৯.৯ শতাংশ স্বর্ণ থাকে— সিঙ্গাপুরের বাজারে এটি পিওর গোল্ড হিসেবে বিক্রি হয়। এটি ৯৯৯ গোল্ড হিসেবেও পরিচিত। ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ, যেখানে ৭৫% স্বর্ণ থাকে, সিঙ্গাপুরের বাজারে এটি ৭৫০ গোল্ড নামে পরিচিত।

মোস্তফা জুয়েলারি
সুন হুয়াট গোল্ডস্মিথ এবং মুস্তফা জুয়েলার্স থেকে স্বর্ণের দামের এই ছবিটি পঠিয়েছেন ফলোআপ নিউজ-এর সিঙ্গাপুর প্রতিনিধি এইচএম ফারুক।

সিঙ্গাপুরে স্বর্ণের ব্যবসায় ভারতীয় ব্যবসায়ীদের আধিপত্য রয়েছে। সিঙ্গাপুর ৪০ জন সেরা ধনীর মধ্যে ভারতের মুসতাক আহমেদ রয়েছেন, যার স্বর্ণ ছাড়াও সিঙ্গাপুরে আরো অনেক ধরনের রিটেইল ব্যবসা রয়েছে। সিঙ্গাপুরের স্বর্ণধনীরে মধ্যে ভারত থেকে আরো অন্যতম হচ্ছেন জয় আলুক্কাস, এছাড়া মালাবর এবং টাটা গ্রুপের স্বর্ণের ব্যবসা রয়েছে। ইশতারা জুয়েলার্সের মালিকও ভারতীয়।

খুচরা বিক্রেতারা তো সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণ কেনেনই, বেশি বিক্রি হয় বিনিয়োগকারীদের কাছে। এছাড়া স্বর্ণ কিনে সিঙ্গাপুরে ভল্ট ভাড়া নিয়ে রাখা যায়। সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং টাকা পাচারকারীরা সে কাজটিও নিরাপদে করে থাকেন। অনেক ব্যাংকও সিকিওরিটি হিসেবে স্বর্ণ কিনে সিঙ্গাপুরে মজুদ করে।

সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণ বাংলাদেশে মূলত দুটি উপায়ে আসেঃ বৈধভাবে ব্যাগেজ রুলস মেনে যাত্রীদের মাধ্যমে এবং অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে। বৈধ পথে, একজন যাত্রী কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক পরিশোধ করে বা শুল্কমুক্ত কোটা অনুযায়ী স্বর্ণালংকার ও বার আনতে পারেন। অন্যদিকে, অবৈধ পথে বড় পরিমাণে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করে। বৈধভাবে ১০০ গ্রাম বা ৮.৫৮ ভরি ওজনের ১২ টি গয়না আনা যায়। বছরে একটি বার আনা যায়, তবে বার আনলে ট্যাক্স দিতে হয়। বাংলাদেশের হিসেবে প্রতি ভরিতে ৫ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয়। 

সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরের জুয়েলার্সে স্বর্ণের গয়নার খুচরো বিক্রির চিত্র। ছবিঃ এইচএম ফারুক।

আজকের দামে সিঙ্গাপুর থেকে স্বর্ণ আনলে কেমন দাম পড়বে?

আজকে সিঙ্গাপুরের বাজারে ২২ ক্যারেট স্বর্ণ প্রতি গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৬২ সিঙ্গাপুরিয়ান ডলারে। এ হিসেবে বাংলাদেশী টাকায় এক ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১,৭৭,৮৩৭.৪৪ টাকা। বাংলাদেশের বাজারে আজকে ১ ভরি স্বর্ণের দাম ছিলো ২ লক্ষ ৯ হাজার ১০১ টাকা। ভরি প্রতি ৩০ হাজার টাকার বেশি ব্যবধান রয়েছে।