শুভ দত্ত সৌরভ
কলেজের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে ২৬ ও ২৭ জুলাই ২০১৮ দুইদিন ব্যাপী অনূষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১০১ তম বর্ষে এ আয়োজন করছে কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা।
২৬ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার সকালে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা দিবসের শুভ উদ্ভোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাগেরহাট ৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অত্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অভিজিৎ বসু। এছাড়াও অত্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ফারুকীয় আযম মো: আ: সালাম সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক বৃন্দ, অত্র কলেজের কর্মচারী বৃন্দ, ছাত্র ছাত্রী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবক, অত্র কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ইয়াছির আরাফাত নোমান।
কলেজের অধ্যক্ষ অভিজীৎ বসুর সভাপতিত্বে কলেজ চত্বর থেকে আনন্দ মিছিল বের হয়ে বাগেরহাট শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ চত্বরে এসে সবাই মিলিত হয়। বিকাল ৪টা থেকে শুরু হয় আলোচনা সভা। তারপর শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদি পরিবেশিত হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সবার জন্য হালকা নাস্তার ব্যবস্থা থাকে। ২৭ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৩ টা থেকে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ সঙ্গীতশিল্পী হৃদয় খান ও কনা।
প্রসঙ্গত
দক্ষিন বাংলার ঐতিহ্যবাহী সরকারি পিসি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৮ সালের ৯ আগস্ট। বাগেরহাট পৌর শহরের হরিণখানা এলাকায় অবস্থিত এই কলেজের স্বীকৃতি দেয় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তখন এর নাম ছিল বাগেরহাট কলেজ। বরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র (পিসি) রায় তৎকালীন হাবেলী পরগনার জমিদার, সাধারণ মানুষ ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে বাগেরহাট কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
পিসি রায়ের অনুরোধে কলেজের প্রথম অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ঋষি কামাখ্যা চরণ নাগ। তিনি অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, ইতিহাস, দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে পাঠদান করতে পারতেন। কামাখ্যা চরণ নাগ প্রায় ২২ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। কলেজটিতে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস ও সংস্কৃত বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হতো। পরবর্তী সময়ে বাংলা, অর্থনীতি, আরবি ইত্যাদি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) খোলা হয়।
পিসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বুলবুল কবির বলেন, শুধু জমিদার, বৃত্তবান শ্রেণি নয়; পিসি কলেজ প্রতিষ্ঠার পেছনে এই অঞ্চলের নিম্নবিত্ত, সাধারণ মানুষের অবদানটাও অনেক বড়।