ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় ‘মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা’র নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাত্রদলের

নিন্দা ও প্রতিবাদ
ছাত্রদলের আনুষ্ঠানিক নিন্দা ও প্রতিবাদ।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ‘অবমাননার’ নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। শিবিরের দলীয় প্রকাশনা ‘ছাত্র সংবাদ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হয়েছে উল্লেখ করে এ জন্য শিবিরকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রদল।

আজ বুধবার বিকেলে ছাত্রদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুগে যুগে স্বৈরাচার ও তাদের করুণ পরিণতি’ নামক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ‘অনেক মুসলিম না বুঝে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল, এটা তাদের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতা ছিল। আল্লাহ তাআলা তাদের ক্ষমা করুন।’ এই বক্তব্যকে ছাত্রদল অত্যন্ত আপত্তিকর ও ন্যক্কারজনক মনে করে। এতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসের প্রতি গভীর অসম্মান হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদল আরও বলেছে, ছাত্রশিবির একদিকে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ‘স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা রাখব’ স্লোগান দিয়ে র‍্যালি করে, অন্যদিকে নিজেদের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়াকে ভুল ও অদূরদর্শিতা হিসেবে প্রচার করবে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে; এটি সুস্পষ্ট দ্বিচারিতা। এই দ্বিচারিতার ফলে প্রমাণিত হয়, প্রকাশ্যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার কৌশল নিলেও ভেতরে-ভেতরে ছাত্রশিবির পূর্বসূরি ছাত্রসংঘের মতো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের মনোভাব ধারণ করে।

লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত বলে ছাত্রশিবির তাদের দলীয় প্রকাশনার মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী ন্যারেটিভ (বয়ান) প্রচারের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না বলে ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনার এডিটরিয়াল পলিসি স্বাধীনতাবিরোধী ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন অবিলম্বে ছাত্রশিবিরকে এই ঘটনায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা আরও বলেন, ‘ছাত্রশিবির যদি এই ন্যক্কারজনক মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বয়ানকে নিজেদের প্রকাশনা থেকে প্রত্যাহারপূর্বক জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করে তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতি ছাত্রশিবিরের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলবে।’