পুজা উদযাপন পরিষদ জন্মলগ্ন থেকে সাধারণ হিন্দুদের সাংস্কৃতিক সংগঠন হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও এটি এখন কতিপয়শ্রেণীর সংগঠন। সংগঠনটি ব্যবসায়ী হিন্দুদের ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনটির কল্যাণমূলক কাজ নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে, প্রশ্ন রয়েছে দেবোত্তর এবং মন্দিরের সম্পত্তির ব্যবহার এবং আর্থিক হিসাব নিকাশ নিয়ে। উপজেলা পর্যন্ত পরিষদের কমিটি বিস্তৃত থাকলেও কার্যক্রম ‘আমি এবং তুমি’-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ।
বিষয়ের ওপর প্রশ্ন তুলে সমাজকর্মী সুব্রত কুমার মুখার্জি বলেন, পুজা উদযাপন পরিষদ পিছিয়ে থাকা হিন্দুদের নিয়ে কাজ করতে এবং তাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী উৎসব রায় বলেন, পুজা উদযাপন পরিষদ কতিপয়ের স্বার্থে কাজ করে। এটা গণ মানুষের জন্য কাজ করে না।
সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি পুষ্পিতা গুপ্ত বলেন, পুজা উদযাপন পরিষদ ধর্মাশ্রয়ী হয়ে অর্থনৈতিক সংখ্যাগরিষ্ঠতারই ভিন্ন একটি রং মাখে, প্রকৃতপক্ষে মন্দিরভিত্তিক জনকল্যাণ পুজা উদযাপন পরিষদের কাজে দৃশ্যমান নয়।
সংখ্যালঘু অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সৈকত মণ্ডল বলেন, দেশে অনেক দেবোত্তর সম্পত্তি অব্যবহৃত এবং বেদখল থাকলেও সেগুলোতে হরিজনদের মতো ভূমিহীনদের আশ্রয় দেওয়ার কোনো উদ্যোগ পুজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে নেই।
চাকরিজীবী এবং রাজনীতিক মলয় মুখার্জি বলেন, পুজা উদযাপন পরিষদ বড় বড় কথা বলে। দেশের কয়েক লক্ষ মন্দিরের দখল নিয়ে বসে আছে তারা। ওদিকে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা এখনো একবেলা খেয়ে দিন কাটায়। পুজা উদযাপন পরিষদ তাহলে কাদের নিমিত্তে সংগঠন? মন্দিরগুলোর দখল নিয়েছে আসলে কারা? মন্দিরের জায়গা দখল করে রেখেছে কারা?
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হলো একটি বাংলাদেশ ভিত্তিক অরাজনৈতিক, সমাজকল্যাণমূলক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় হিন্দু সংগঠন। এটি বাংলাদেশে উদযাপিত হিন্দু উৎসব গুলো উদযাপনে সমন্বয় ও তত্ত্বাবধান করেন। সংগঠনটি ১৯৭৮ সালে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি নামে এবং পরে ১৯৮২ সালে সম্পূর্ণ বাংলাদেশে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নামে আত্মপ্রকাশ করে। এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মেজর জেনেরাল চিত্ত রঞ্জন দত্ত।
সম্পর্কিত সংবাদ
জোড়া শিব মন্দিরে সংসদ সদস্য সেখ জুয়েল দম্পতির সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা