বাংলাদেশে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচীর সূচনা করেছিলো যারা

নিজ হাতে আমরা সেদিন (৩মে ২০০৯) ক্যাম্পাস পরিষ্কার করেছিলাম। শিক্ষার্থীদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছিলাম— একটু সচেতন হলেই ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখা যায়। পরবর্তীতে তখনকার উপাচার্য মহোদয় (বর্তমান উপাচার্য) আমাদের কর্মসূচীরে সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলেন। আমাদের ইচ্ছে ছিলো— প্রতি মাসে একবার আমরা প্রতিকীঅর্থে ক্যাম্পাস পরিষ্কার করবো। বিভিন্ন কারণে আমরা তা পারিনি। তবে কেউ না কেউ পেরেছিলো। আমাদের ঐ পরিচ্ছন্নতা অভিযান সেদিন জাইকার এক জাপানি ভদ্রলোক দেখেছিলেন। এক বন্ধু বলেছিলো— আমাদের কর্মসূচীটি নাকি এবইউজড্ হয়েছে। কেউ এটিকে নিজের বলে চালিয়ে নিছে। কী হয়েছিলো জানি না। যা-ই হয়েছিলো, তাতে ক্ষতি নেই, যেভাবে হোক কিছু যে হয়েছিলো, তা এখন বুঝতে পারছি, এবং তাতে ভালই হয়েছে।

আমাদের কর্মসূচীরটির বছর খানেক পরে জাপান থেকে একশো শিক্ষার্থী এসে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতা অভিজান পরিচালনা করল, তখন ভাল লেগেছিলো, সবাই জাপানি শিক্ষার্থীদের বাহবা দিয়েছিলো। একটু লজ্জাও লেগেছিলো, কারণ, কাজটা তো আমাদেরই করার কথা।

কর্মসূচীটি এবইউজড্ হয়েছিলো সে কথাটিও হয়ত পুরোপুরি মিথ্যা নয়। কেউ না কেউ আমাদেরকে বিক্রী করেছিলো বলে শুনেছি। ছবি তুলে জনৈক ব্যক্তি নিজেকে আমাদের কর্মসূচীটির উদ্যোক্তা সাজিয়েছিলো। উপাচার্য মহোদায় জানতেন— কারা কর্মসুচিটি শুরু করেছিলো, তিনিও আমাদের কাউকে কখনো ডাকেননি। যাইহোক, সেদিকে না যাই। কাজটা আগাচ্ছে, এটাই ভালো লাগা। পরবর্তীতে ছাত্রলীগও ‘ক্লিন ক্যাম্পাস সেফ ক্যাম্পাস’ নামে একটি কর্মসূচী চালু করে। উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ কিন্তু এক সময় আমাদের কর্মসূচীতে বাধা দিয়েছিলো, এবং একটি ঘটনার সূত্র ধরে আমাকে হল থেকে বের করেও দেওয়া হয়েছিলো। কিছুদিন আগে দেখলাম ‘ক্লিন ঢাকা’ কর্মসূচী। এখন দেখছি জাপান থেকে ওরা আবার এসেছে। ভালো লাগছে, তবে কাজটা আমরা চালু রাখতে পারলে সবচেয়ে ভাল লাগত, তাহলে পুরো পরিকল্পনাটার ছাপ রাখতে পারতাম।

DSC06460
মাথায় ‘ক্লিনডিইউ’ লেখা বেল্ট বেঁধে দিচ্ছে সংগঠনের কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ সহ আরো কয়েকটি কলেজের সেদিন অংশগ্রহণ করেছিলো।
DSC06461
মাঝখানে কর্মসূচীর উদ্যোক্তা দিব্যেন্দু দ্বীপ।

DSC06462