
বিশ্বের দ্রুততম মানব কে? উত্তর অবশ্যই জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট। উত্তরটা অফিশিয়ালি ঠিক আছে। তবে যদি বলা হয় বোল্ট নন, সবচেয়ে দ্রুতগামী মানুষ ভারতের কর্নাটকের মুদাবিদরি গ্রামের শ্রীনিবাস গৌড়া! সেটি কিন্তু ভুল নয়। এতে অবাক হওয়ারই কথা। তবে ঘটনা সত্য ২৮ বছর বয়সী শ্রীনিবাস নিজেও অবাক হয়েছিলেন যখন জানতে পারলেন, তিনি দৌড়ে বোল্টের রেকর্ডও ভেঙে ফেলেছেন।
গত বৃহস্পতিবার কাম্বালা উৎসবে নিজের পালিত মহিষের সঙ্গে দৌড়ে এমনই এক রেকর্ড করেছেন তিনি। নভেম্বর ও মার্চ মাসের মধ্যে শস্যক্ষেতের ভেতর দিয়ে মহিষ দৌড় প্রতিযোগিতার এ উৎসবের নাম কাম্বালা। ভাবা যায়! যে ট্রাকে নয় রীতিমত শস্যক্ষেতের ভেতর দিয়ে দৌড়ে এই রেকর্ড। এজন্য আমরা বলি যে শ্রমজীবী মানুষের চেয়ে বড় অ্যাথলেট কেউ আর হয় না।
শ্রীনিবাস গৌড়া কোনো বিশ্ব প্রতিযোগিতায় দৌড়ে নামেননি। তিনি মহিষের দৌড় উৎসবে জকি হয়েছিলেন। নিজের পোষা মহিষের সঙ্গে দৌড়েছেন খালি পায়ে, কাদামাটির ফাঁকা জমিতে। গত বৃহস্পতিবার নিজের মহিষের সঙ্গে ১৪২.৫ মিটার মাত্র ১৩.৬২ সেকেন্ডে দৌড়ে পার হন শ্রীনিবাস। তার গতি দেখে অবাক হয়ে যান উপস্থিত সবাই। সঙ্গে সঙ্গেই উসাইন বোল্টের সঙ্গে তার গতির তুলনা করা শুরু হয়। উসাইন বোল্ট ৯.৫৮ সেকেন্ডে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট সম্পূর্ণ করেছিলেন। এটাই এখন পর্যন্ত ১০০ মিটার স্প্রিন্টের রেকর্ড। ওই ১০০ মিটার যেতে শ্রীনিবাস কত সময় নিয়েছেন? হিসাব কষে দেখা গেছে, ১০০ মিটার দূরত্ব মাত্র ৯.৫৫ সেকেন্ডে দৌড়েছেন তিনি। অর্থাৎ বোল্টের চেয়ে দশমিক শূন্য ৩ সেকেন্ড সময় কম নিয়েছেন।
এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেট দুনিয়ায় সেনসেশন হয়ে ওঠেন শ্রীনিবাস। ফেসবুক ও টুইটারে তার সাফল্যের কথা ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে অলিম্পিকের জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন কেউ কেউ। আর শ্রীনিবাস তার সাফল্যের জন্য বাহবা দিয়েছেন মহিষ দুটিকে।
সূত্র : আনন্দবাজার ও নিউজএইটিন।
কাম্বালা উৎসব
কাম্বালা ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই উৎসব পালন করে থাকেন দক্ষিণ কন্নড়, মাঙ্গালোর এবং উদুপি জেলার মানুষ। কাম্বালা উৎসব মূলত মহিষদের দৌড় প্রতিযোগিতাকে উপলক্ষ করে আয়োজিত হয়। উৎসবের প্রথা অনুযায়ী, জোড়া দুটি মহিষকে শস্যখেতের মধ্য দিয়ে দৌড় করানো হয়। খেলায় অংশরত মহিষেরা যাতে তাড়াতাড়ি দৌড়াতে পারে তার জন্য কৃষকেরা হাতে চাবুক নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। এই খেলা দেখার জন্য উৎসবস্থানে প্রতি বছর বহু লোক সমাগম হয়।
For the uninitiated, this is Kambala!! pic.twitter.com/gQ5zEP5nlL
— Don III (@doniii3) February 13, 2020