যত বিখ্যাত ব্রান্ডই হোক না কেন বাজার থেকে যে মরিচের গুড়া কিনে আমরা ব্যবহার করি কোনোভাবেই তা মানোত্তীর্ণ নয়। মনোত্তীর্ণ নয় দুটি ক্ষেত্রে–
১। পরিচ্ছন্নতা; ২। ভেজাল থাকা না থাকার বিষয়টি।
পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত তারা করে না, কারণ, মরিচগুলো ধুয়ে পুনরায় শুকানোর যে ঝামেলা সেটি করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যেহেতু তারা বাজার ধরতে চায়, তাই শতভাগ পরিচ্ছন্ন এবং খাঁটি করার চেয়ে মার্কেটে সরবরাহ নিশ্চিত করা তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।
মরিচের ক্ষেত্রে তারা বোটা ফেলে না, কারণ, কাজটি সময় সাপেক্ষে, এবং ওজনও অনেক কমে যায়। বোটা ফেলে দিলে প্রায় দশভাগ ওজন কমে। ফলে এটি তারা করে না। বোটা ফেলতে গিয়ে কিন্তু মরিচ বাছাই করার কাজটিও হয়ে যায়, কারণ, যখন এই মরিচগুলো শুকানো হয় এবং গুদামজাত করা হয় তাতে অনেক ধরনের ময়লা আবর্জণা, এমনকি ইঁদুরের বিষ্টা, মরা তেলাপোকা ইত্যাদি থাকে।
বাছাই করে ধুয়ে না নিলে সেগুলো গুড়ো হয়ে মরিচের গুড়োয় পরিণত হয়, এতে নিশ্চিতভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে। ফলে আমরা চাচ্ছি, ক্লাস্টার ভিত্তিতে মানুষ তাদের নিত্য দ্রব্যের প্রয়োজনটা মিটাক। এক্ষেত্রে আমরা কিছু উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাইছি।
প্রতি মহল্লায় একটি করে ফুড ক্লাব হতে পারে, তারা তাদের খাদ্যের যোগান সম্মিলিতভাবে মেটাবে। এতে মান নিশ্চিত হবে, একইসাথে এককভাবে করার যে ঝামেলা সেটিও থাকবে না।
ধরুণ, একশোজন মানুষের মাসে দশ কেজি মরিচের গুড়ো লাগে। এটি কিনতে একটি ক্লাবের মাধ্যমে একত্রিত হতে পারলে খুব সুন্দরভাবে করে নেওয়া যায়। আবার কয়েকজন মানুষের কর্মসংস্থানও হয়, কারণ, শুধু মরিচ তো নয়, প্রয়োজন হবে এরকম অনেক কিছু এবং সবকিছুর সরবরাহই এভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব। সুহৃদ গ্রামোন্নয়ন সমবায় সমিতি ঠিক সে কাজটিই করতে চাচ্ছে।
ভয়ঙ্কর নোংড়া পরিবেশে প্রস্তুত হয় বাজারের মশলাগুলো: মশলায় ভেজাল এবং মশলা তৈরির পরিবেশ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন রয়েছে। সেগুলো পড়লে জানতে পারবেন মশলার স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি।
জীবন ধারণকারী খাদ্যের গুণাগুণ অনেকটাই নির্ভর করে খাদ্য তৈরির মশলার উপর। মশলা যদি খারাপ হয় তবে পুরো খাবারটি বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। খাদ্যের অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে সঙ্গে মশলা নিয়েও সতর্ক থাকা জরুরি। নচেৎ শরীরের নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে।
অধিক মুনাফার আশায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মশলায় কাপড়ে ব্যবহৃত বিষাক্ত রঙ, ধানের তুষ, ইট ও কাঠের গুঁড়া, নষ্ট মটর ডাল ও সুজি ইত্যাদি মেশাচ্ছে। এসব ভেজাল মশলা দিয়ে তৈরি খাদ্যদ্রব্য ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী।
কমপক্ষে ১/২ কেজি মরিচ এবং হলুদের গুড়া কিনতে যোগাযোগ করুন
সুহৃদ গ্রামোন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড কিছু ভেজালমুক্ত মরিচ এবং হলুদের গুড়া করে থাকে। তবে যেহেতু খুব বেশি পরিমাণে করা সম্ভব হয় না, তাই শুধুমাত্র ফুড কনজুমার ক্লাব মেম্বারদের মধ্যে সুহৃদ সরবরাহ করে থাকে।
এটা সমিতির মেম্বারশিপ নয়, কনজুমার মেম্বারশিপ। অর্গানিক ফুড কনজুমার ক্লাবের (OFCC) মেম্বার হতে যোগাযোগ করুন। এই মুহূর্তে সুহৃদ শুধু সীমিত আকারে ঢাকায় পণ্য সরবরাহ করছে মেম্বারদের মধ্যে।
মনে রাখবেন, আপনি একজন সাধারণ ক্রেতা নন, আপনি একজন দায়িত্বশীল ক্রেতা। আপনি শুধু নির্ভেজাল খাবার চাচ্ছেন না, কীভাবে সেটি নিশ্চিত সেটি নিয়েও আপনি ভাবছেন। সুহৃদ আপনার টাকাটা পৌঁছে দিচ্ছে গ্রামোন্নয়ন সমিতির সদস্যদের মধ্যে, তারাই পণ্য উৎপাদন অথবা সংগ্রহ করছে। গ্রামের নারীদের সংগঠিত করে সুহৃদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক খাবারের উৎস এবং ঐতিহ্য।