কাঁচা মধু ইতিহাস জুড়ে একটি লোক প্রতিকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এর বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং চিকিৎসা ব্যবহার রয়েছে। এটি এমনকি কিছু হাসপাতালে ক্ষতের চিকিতসা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলির মধ্যে অনেকগুলি কাঁচা, বা অপাস্তুরিত মধুর জন্য নির্দিষ্ট। মুদি দোকানে আপনি যে মধু পান তার বেশিরভাগই পাস্তুরিত। উচ্চ তাপ অবাঞ্ছিত ইস্ট মেরে ফেলে, রঙ এবং টেক্সচার উন্নত করতে পারে, যেকোনো স্ফটিককে সরিয়ে দেয় এবং শেলফ লাইফকে প্রসারিত করে। এই প্রক্রিয়ায় অনেক উপকারী পুষ্টি উপাদানও নষ্ট হয়ে যায়। আপনি যদি কাঁচা মধু খেতে আগ্রহী হন তবে এটি একটি বিশ্বস্ত স্থানীয় উৎপাদকের কাছ থেকে কিনুন। এখানে কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা উল্লেখ করা হলো যা কাঁচা মধু দিতে পারে:
১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি ভাল উৎস:
কাঁচা মধুতে উদ্ভিদ রাসায়নিকের কিছু উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। কিছু ধরনের মধুতে ফল এবং সবজির মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে আপনার শরীরকে কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিকেল বার্ধক্য প্রক্রিয়ায় অবদান রাখে এবং ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিকাশেও অবদান রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মধুতে থাকা পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে।
২. অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য
গবেষণায় দেখা গেছে যে কাঁচা মধু অবাঞ্ছিত ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক মেরে ফেলতে পারে। এতে প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রোজেন পারক্সাইড থাকে, এটি একটি এন্টিসেপটিক। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসাবে এর কার্যকারিতা মধুর ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়, তবে এটি স্পষ্টতই এই ধরনের সংক্রমণের জন্য একটি লোক প্রতিকারের চেয়ে বেশি।
৩. ক্ষত নিরাময়
সুন্দরবনের মধু ক্ষতের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহার করা হয়, কারণ, এটি একটি কার্যকর জীবাণু ঘাতক এবং টিস্যু পুনর্জন্মে সহায়তা করে। গবেষণা দেখায় যে, সুন্দরবনের মধু নিরাময় ক্ষমতা বাড়াতে পারে এবং সংক্রমণ কমাতে পারে।
৪. ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট পাওয়ার হাউস
ফাইটোনিউট্রিয়েন্টগুলি উদ্ভিদে পাওয়া যৌগ, যা গাছকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু পোকামাকড় দূরে রাখে বা অতিবেগুনী বিকিরণ থেকে উদ্ভিদকে রক্ষা করে। মধুতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টগুলি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলির পাশাপাশি এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল শক্তির জন্য দায়ী। এগুলিকে কাঁচা মধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী উপকারিতা দেখানোর কারণ বলেও মনে করা হয়। ভারী প্রক্রিয়াকরণ এই মূল্যবান পুষ্টি ধ্বংস করে।
৫. হজম সমস্যা জন্য সাহায্য
মধু কখনও কখনও ডায়রিয়ার মতো হজম সংক্রান্ত সমস্যাগুলির চিকিতসার জন্য ব্যবহৃত হয়, যদিও এটি ঠিক কীভাবে কাজ করে তা দেখানোর জন্য খুব বেশি গবেষণা নেই। এটি হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি (এইচ. পাইলোরি) ব্যাকটেরিয়ার জন্য একটি চিকিতসা হিসাবে কার্যকর প্রমাণিত। এটি একটি শক্তিশালী প্রোবায়োটিক, যার অর্থ এটি অন্ত্রে বসবাসকারী ভাল ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে, যা শুধুমাত্র হজমের জন্যই নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
৬. গলা ব্যথা প্রশমিত করে
ঠান্ডা লেগেছে? এক চামচ মধু ব্যবহার করে দেখুন। মধু একটি পুরানো গলা ব্যথা প্রতিকারক। ঠাণ্ডা ভাইরাস আপনাকে আঘাত করলে লেবুর সাথে গরম চায়ে এটি যোগ করুন। এটি কাশি দমনকারী হিসেবেও কাজ করে। গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, মধু ডেক্সট্রোমেথরফানের মতোই কার্যকর, যা ওভার-দ্য-কাউন্টার কাশি ওষুধের একটি সাধারণ উপাদান। শুধু এক বা দুই চা চামচ নিন, পান করুন।
হেলথডটকম অবলম্বনে তৈরি