চা সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি পানীয়। চা পান করা হয় না এমন কোনো অঞ্চল নেই, এমন কোনো দেশ নেই। সবচে বড় কথা ছেলে বুড়ো সবাই একসাথে বসে এই পানীয়টি পান করা যায়। বন্ধুমহল, সভা, সমাবেশ বা ঘরোয়া আড্ডায় চায়ের জুড়ি নেই। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে এককাপ চা। তবে কথা আছে, সব চা-ই কি আসলে চা? সব চা-ই কি আসলে সমান উপকারী? নাকি অপকারী চা-ও আছে? গবেষকরা বলছেন, চা খেতে হলে আসলে গ্রিন চা-ই খাওয়া উচিৎ।
গ্রিন টিতে রয়েছে ফ্লেভোনয়েড নামক একটি উপাদান, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি এমন একটি শক্তিশালী উপাদান যা সব দিক থেকে শরীরকে চাঙ্গা রাখে এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া কেটেচিন নামেও একটি উপাদান থাকে এই চায়ে, যা ভিটামিন ’ই’ ও ‘সি’-এর থেকেও বেশি শক্তিশালী, এটি শরীরে প্রবেশ করে একাধিক উপকার করে, ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে।
গ্রিন টি ওজন কমায়
গ্রিন টি ওজন কমায়। গ্রিন টি হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। গ্রিন টি উপস্থিত কেটাচিন পেটের মেদ ঝরাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত গ্রিন টি খেতে পারেন।
কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
সকাল ঘুম খেকে উঠে যদি গ্রিন টি পান করেন, তবে সারাদিন আপনি থাকবেন সতেজ ও প্রাণবন্ত। গ্রিন টি শরীরের স্টেমিনা তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি করে, তাই পুরো দিন ধরে শরীর চনমনে থাকে। গ্রিন টি পান করলে আপনার কর্মক্ষমতা বাড়বে। আপনি যদি দিনের মধ্যে কয়েকবার গ্রিন টি পান করেন, তবে তা আরও বেশি উপকারে আসবে।
রোগ-প্রতিরোধ
শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গ্রিন টির কোনো বিকল্প নেই। যারা অ্যালার্জিতে খুব ভোগেন তারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে ভালো। এ ছাড়া গ্রিন টি খেলে শরীরের বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটলে অ্যালার্জির মতো রোগ সহজে হয় না।
ক্যান্সার
গ্রিন টিতে উপস্থিত ইজিসিজ নামক উপাদানটি ক্যান্সার সেলকে ধ্বংস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সে কারণেই হয়তো বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, ক্যান্সার রোগকে যদি দূরে রাখতে হয়, তা হলে গ্রিন টির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই হবে।
স্মৃতিশক্তির উন্নতি
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে গ্রিন টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। সেই সঙ্গে অ্যালার্টনেসও বাড়াতেও এই পানীয়টি বিশেষ ভূমিকা নেয়। সে কারণেই তো সকাল-বিকাল এই চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
হার্ট অ্যাটাক
প্রতিদিন গ্রিন টি খেলে হার্ট কিন্তু খুব ভালো থাকে। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪৬-৬৫ শতাংশ কমে যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
নিয়মিত ২-৩ কাপ করে গ্রিন টি খাওয়া শুরু করলে শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, ফলে ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। পারিবারিকভাবে, বিশেষ করে খাওয়ার পরে সকলে একসাথে গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যেস করা যেতে পারে।
ডায়াবেটিসের উপকার
সারা বিশ্বের মধ্যে আমাদের দেশেও ডায়াবেটিস প্রধান রোগে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থভাবে বাঁচতে হলে গ্রিন টি-এর বিকল্প নেই।
গ্রিন টি-এর দাম সবুজ চা-এর চেয়ে বেশি, তবে দাম যদি পাঁচ গুণ বেশি হয় উপকার বেশি একশো গুণ। তাই বিনামূল্যে ছাই পেলে যেমন আমরা খাই না, একইভাবে কম দাম বলে ব্লাক টি খাওয়ারও কোনো মানে নেই। ব্লাক টিতে চাঙ্গাকারী উপাদান ক্যাফেইন থাকলেও গ্রি টি-এর মতো অন্যসব মূল্যবান উপাদান নেই।