সাপে কামড়ালে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে, এবং এন্টিভেনম ইনজেকশন দিতে হবে।
সাপের এন্টিভেনম মূলত মিশ্র প্রকৃতির হয়। আপনাকে যে বিষধর সাপেই কামড় দিক, এন্টিভেনম একই হবে।
তাই সাপ চেনা জরুরী নয়, ওতে শুধু শুধু সময় নষ্ট হবে। ওঝা বা ঝাড়ফুঁকের কাছে না গিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া জরুরী। ভুল হাসপাতালে না গিয়ে ফোন করে জেনে নিন সেখানে এন্টিভেনম আছে কিনা।
বাংলাদেশে মূলত ৪ প্রকার বিষধর সাপের কামড় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়ঃ
১. গোখরা / ইন্ডিয়ান কোবরা (Neurotoxin)
২. কালাচ / কমন ক্রেইট (Neurotoxin)
৩. রাসেলস ভাইপার (Hemotoxin)
৪. সো-স্কেলড ভাইপার (Hemotoxin)
এই চার প্রকার সাপের ভেনম সংগ্রহ করে একসাথে এন্টিভেনম তৈরি করা হয়। সুতরাং আপনাকে যে সাপেই কামড় দিক, ওষুধ একই।
উপরের চারটি সাপ বাদেও দেশে আরো কিছু বিষধর সাপ আছে (যেমন কিং কোবরা, হাম্প-নোজ পিট ভাইপার ইত্যাদি), তবে এগুলোতে কামড় দেওয়ার ঘটনা তুলনামূলকভাবে বিরল।
সাপে কামড় দিলে শরীরের যেকোনো স্থানে কাপড় বা দড়ি দিয়ে বাঁধন দেওয়ার কোনো দরকার নেই। এতে উপকার হয় না, বরং রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে অঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ভাইপারের কামড়ে হেমোটক্সিন বিষের প্রভাবে অঙ্গহানীর ঝুঁকি বেশি থাকে।
আক্রান্ত স্থান ব্লেড দিয়ে কেটে দেওয়া বা বিষ চুষে নেওয়ার কোনো দরকার নেই। এতে রোগী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যেতে পারে।
সাপ কামড় দিলে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।সময়মতো এন্টিভেনম নিলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। বরং ভয় পেয়ে হৃদরোগ বা শকে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কালাচ (ক্রেইট) সাপের কামড়ে ভারতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। এরা রাতে মানুষের বিছানায় চলে আসে। এদের বিষে ব্যথা বা জ্বালা করে না, কামড়ের দাগও বোঝা যায় না (কারণ বিষদাঁত খুব ছোট)। তাই অনেক সময় মানুষ বুঝতেই পারে না যে, সাপ কামড় দিয়েছে। এজন্য মেঝেতে ঘুমাবেন না, অবশ্যই মশারির ভেতরে ঘুমাবেন।
সর্বোপরি যে সাপেই কামড় দিক, ওঝা, তান্ত্রিক বা ঝাড়ফুঁকের কাছে কখনো যাবেন না। মনে রাখবেন, একমাত্র এন্টিভেনমই আপনাকে বাঁচাতে পারে। এর বাইরে দুনিয়ার আর কিছুই সাপের কামড় থেকে জীবন বাঁচাতে পারবে না।