মাঠকর্মীদের ফাঁসিয়ে রেখে ‘ডে নাইট পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের’ মালিক মনিরুজ্জামান টাকা পয়শা নিয়ে লাপাত্তা

মনিরুজ্জামান

উপরিউক্ত বিষয়য়ের প্রেক্ষিতে মাঠকর্মী সাবিত্রী রাণী রায় জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছেন। আবেদনের বক্তব্যটি তিনি খোলাচিঠি হিসেবে পত্রিকায় প্রকাশ করতে চেয়েছেন। নিম্নে ‘ডে নাইট পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের’ মাঠকর্মী সাবিত্রি রাণী রায়ের বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো। 

মনিরুজ্জামান
গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া এনজিওর প্রধান মনিরুজ্জামান (বৃত্ত চিহ্নিত)

জেলা প্রশাসকের কাছে যে অভিযোগটি সাবিত্রী রাণী করেছেন-

বরাবর জেলা প্রশাসক

বাগেরহাট। 

আবেদনকারী: সাবিত্রী রাণী রায়, স্বামী: উত্তম কুমার রায়, গ্রাম: দক্ষিণ খানপুর, ডাকঘর: খানপুর, উপজেলা+জেলা: বাগেরহাট। 

বিষয়: জানমালের নিরাপত্তা এবং অর্থ আত্মসাৎকারী এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন। 

জনাব,

যথাবিহীত সম্মানপূর্বক নিবেদন এই যে, আমি আবেদনকারী দরিদ্র পরিবারের সদস্য ও স্বল্প পড়ালেখার যোগ্যতায় জীবন জীবীকার তাগিদে দীর্ঘ ৫/৬ বছর পূর্বে “যে নাইট পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন”-এ [রেজি” নং- ৭২৬৫ (৪৫৪)] মাঠকর্মী হিসাবে কর্মরত আছি। সংস্থার একজন কর্মী হেতু তাদের নিয়ম নীতিমালা অনুযায়ী আমার মাধ্যমে এলাকার মানুষ টাকা প্রদান করে। সম্মানীত ইউপি সদস্য জনাব মনোয়ারা খাতুন, পিতা: নুর মোহাম্মদ মোল্লা, বাড়ি: দক্ষিণ খানপুরে -তিনি আমার সুপারভাইজর থাকায় তার বাড়িতে অস্থায়ী কার্যালয় পরিচালনা করে নিয়মিত আমানত জমা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু গতো ১০/০৪/২০১৮ তারিখে জানা গেল যে ডেনাইট এনজিওটি দুইদিন যাবৎ তাদের শাখা অফিশগুলো খোলে না। এমতাবস্থা আমি এবং অন্যান্য কর্মীরা খুলনায় হেড অফিশে গেলে তাঁদের গায়েব হওয়ার সত্যতা মেলে। 

এনজিওটির গায়েব হওয়ার ঘটনায় গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় আমি এবং অন্যান্য কর্মীরা আইনগত ব্যবস্থা নিই। সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালত, বাগেরহাট বরাবর মামলা দায়ের করি। মামলা নং- পি: ১৯/২০১৮। বিষয়টি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে অবগত করি। অনেকে আমাকে আশ্বাস্ত করেন। আমরা গ্রাহকদের ধৈর্য ধারণ করতে অনুরোধ করি। 

গ্রাহকরা আমার কোনো কথা না শুনে, ক্ষিপ্ত হয়ে ইতোমধ্যে আমার অনেক ক্ষতি সাধন করেছে। আমার আপজনকে মারধর ও অত্যাচার করেছে। এবং আমার জমির পাকা ধানের ক্ষতি করেছে। 

এসব অত্যাচার সহ্যের সীমা ছাড়ালে আমি বিষয়টি খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানাই। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে সাহায্য না করে গ্রাহকদের আরো ক্ষেপিয়ে তুলে অামাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে ৩টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করায়, হুমকি দেয় এবং আমার কাছ থেকে সই করা ব্লাংক চেক রাখে। 

এখন তারা অামাকে জায়গা জমি বিক্রী করার হুমকি দিচ্ছে। গ্রাহকদের সব টাকা আমাকে দিতে হবে বলছে।  গ্রাকরা রোজ আমাকে জমি বিক্রয় করার হুমকি দিচ্চে। মামলার তদন্তকারী অফিসার বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছেন। গ্রাহকরা আমাকে কোনোরূপ সহযোগিতা না করায় মামলাটি পরিচালনা করা কঠিন হচ্ছে। তারা আমার বিভিন্নভাবে ক্ষতি সাধান করছে। এমতাবস্থায় আমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। 

মহোদয়, আমার পরিবার পরিজনের নিরাপত্তা বিধানসহ অর্থ আত্মসাৎকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করলে চীর কৃতজ্ঞ থাকব। 

বিনীত নিবেদক

সাবিত্রী রাণী রায়


অভিযুক্ত মালিক পক্ষের ছবিটি অভিযোগকারী সাবিত্রী রাণীর সৌজন্যে প্রাপ্ত। 

সর্বশেষ জানা যায়, জেলা প্রশাসকের সুপারিশ নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা 

মো: তানজিল্লুর রহমানের কাছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে কোনো ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেনননি বলে তিনি জানিয়েছেন।