এক সময় বাগেরহাট জেলার খাল এবং নালাগুলোতে প্রচুর দেশী চিংড়ী মাছ পাওয়া যেত। এখনো সুন্দরবন অঞ্চলে চিংড়ী মাছ পাওয়া যায়। ফলে চিংড়ী মাছের বিভিন্ন পদ খাওয়ার অভ্যেস বাগেরহাটবাসীর রয়েছে। এর মধ্যে একটি বিশেষ পদ হচ্ছে চিংড়ী মাছ ভাতে।
‘ভাতে’ আর ‘ভর্তা’ কিন্তু এক নয়। ভর্তা খাওয়া মানে সেদ্ধ করে বা না করে বেটে খাওয়া, কিন্তু এটা বেটে বা ম্যাশ করে খাওয়া নয়। মশলা মাখিয়ে কচুর পাতায় মুড়িয়ে একটা পলিথিনের মধ্যে শক্ত করে চিংড়ী মাছ ভাতের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়। ভাত রান্না হতে হতে মশলা মাখানো চিংড়ী মাছগুলোও সিদ্ধ হয়ে যায়। এই সিদ্ধ চিংড়ী মাছ খেতে কিন্তু অসাধারণ।
সাধারণত কাঁচা মরিচ, জিরা ও সরিষা বাটা এবং সামান্য পরিমাণ সরিষার তেল মিশিয়ে মশলাটা তৈরি করে হয়। হরিণা অথবা বড় চামটি চিংড়ী মাছের খোশা ভালো করে ছাড়িয়ে মশলা মাখাতে হয়। এরপর একটা দুধমান কচুর পাতায় মুড়ে পলিথিনে বেঁধে সিদ্ধ করা হয়। কচুর পাতা না পেলে লাউ পাতায়ও কাজটি করা যায়।
কোনো পাতা না থাকলে শুধু মশরা মাখানো চিংড়ী মাছও পলিথিনে বেঁধে সিদ্ধ করা যায়, তবে পাতায় মোড়ালে পাতাটা খাওয়া যায়। পাতাটা খেতেও খুব সুন্দর লাগে। সাধারণ বর্ষাকালে বাগেরহাটের গ্রামাঞ্চলের মানুষ এ খাবারটি খেয়ে থাকে। তবে বর্তমানে চিংড়ী মাছ অনেক কম পাওয়া যায়, তাই খাবারটি আর গরীব মানুষের নাগালে নেই।