অসংগঠিত, অনির্ধারিত, বেনামী পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছে দেশের অনেক মানুষ। অর্থনীতির মূল হিসেব-নিকেষে তারা নেই। তবু তারা আছে, কোনোমতে, জনসংখ্যা হয়ে, গণতন্ত্রের ভোট হয়ে শুধু।
এই রিক্সাওয়ালা আবার একটু ব্যতিক্রম। বর্ষায় রিক্সা চালাচ্ছেন নিজেকে বিশেষ কায়দায় মুড়ে।
চুল বাঁধার কৌশল বিক্রী করেন এই বিক্রেতা।
বাসায় বাসায় দুধের যোগান দেন তিনি। মাঝে মাঝে ক্লান্ত দেহের ভার গিয়ে ভর করে এভাবে দুধের পাত্রে।
হাক ডেকে ঝাড়ু বিক্রী করেন তিনি। কোনো কোনোদিন কিছুই হয় না, খুবই অনিশ্চিত পেশা, তবু এ ছাড়া কিছু করার নেই তার। শুধু সময় পিছনে পড়েছে, শরীরটাও ক্ষয়ে ক্ষয়ে কিছু বেড়েছে, কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক কিছুই বাড়েনি ওদের, তাই একটা কিছু ঠেলার কথা ঠেলছে। কয়েকদিন এটা ঠেলে, আবার কয়েকদিন ওটা, এভাবে মরে-বেঁচে জীবন কাটে।
কায়দা মতো দুজন খরিদ্দার পেলেই সারাদিনের লাভ হয়ে যায় তাঁদের। তবে পেশাটায় হেনস্থা অনেক। স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে। একটু ডেয়ারিং না হলে এ পেশায় সফল হওয়া কঠিন।
কাজটা খুব কঠিন এভাবে দুই ঘাড়ে বিশাল বোঝা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। মুরগীর মত খুব সহজে বেশি লাভ করা সম্ভব হয় না তরকারী বেঁচে।
ঢাকা শহরের সচরাচর দৃশ্য। কিন্তু এভাবে পত্রিকা পড়তে খুব একটা কাউকে দেখা যায় না।
ঢাকা শহরে ইদানিং ডাব বিক্রী হয় প্রচুর, বিশেষ করে গরমের সময়। তবে এই বিক্রেতা নতুন, তাই কাটতে গিয়ে জড়তার ছাপ পড়েছে মুখে।
আাঁস্তাকুড়ে থেকে ভাঙ্গাড়ি কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করে অনেকে। টোকাইদের অর্থনীতি নিয়ে জরিপ চালালে সেটি বেশ অর্থবহ হবে বলেই মনে হয়।
হেঁটে হেঁটে প্লাস্টিকের পুতুল বিক্রী করেন তিনি। অবশ্য ক্রেতার ভীড়ে বিক্রেতাকে চেনাই দায় হচ্ছে এখন।
বাসের মধ্যে নানান ধরনের আচার এবং হজমি জাতীয় বড়ি বিক্রী করে এই বিক্রেতা। বড়িগুলোর কোনো কোনোটা মনে হল খুব ভয়ঙ্কর।
মাওয়া ঘাটে গামলায় করে পেয়ারা নিয়ে এসেছে। ধাড়ী কাস্টমারের নানাবিধ প্রশ্নে এবং দরদামে সে দিশেহারা এখন।
আরিচা ঘাটে ছেলেকে সাথে নিয়ে গভীর রাতে ডিম বিক্রী তাঁর পেশা। লাভ নাকি ভালোই হয়। কোনো কোনো দিন দৌঁড়িয়ে ঝাঁপিয়ে খেলার ছলে ছেলেই বেশি বিক্রী করে। তাতে বাপ মাঝে মাঝে বসে বিড়ি টানার অবসরটা পায়।
ঝালমুড়ি রীতিমত আইকনিক খাবার হয়ে উঠেছে এদেশে। গভীর রাতে ফেরিঘাটে এ জিনিসের কদর কোনো অংশে কম নয়। যদিও কীসের সাথে কী মেশে তার কোনো ঠিক থাকে না মাঝে মাঝে।
ভাজাভুজির কদর আছে বাঙালির কাছে। ইনি ডাল বড়া, ডিম বড়া ও চিংড়ী বড়া বিক্রী করেন। বেশ সৌখিন মনে হলো তাকে, সুন্দর সুন্দর পুরানো দিনের বাংলা গান শুনছেন ভাজার সাথে সাথে।
বাসায় বাসায় পেটিস বিক্রী করে তার জীবন চলে। যদিও কথা বলে বুঝলাম যে জীবন আর চলছে না মোটেও তার।
সন্ধ্যা গড়ালেই মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশে সবজির হাট বসে। আগান বাগান থেকে কুড়িয়ে আনা দেশি সবজি এগুলো। একটু বেশি দামেই এগুলো কিনবে সচেতন ক্রেতারা —এরকম বিশ্বাস থাকলেও সন্ধ্যা ঘুরলে সে হিসেবে আর মেলে না।
ছবিটাই তো জীবন্ত ক্যাপশন।
ছবি এবং ক্যাপশন: দিব্যেন্দু দ্বীপ ।। বিনা অনুমতিতে ছবিগুলো ব্যবহার করা ঠিক হবে না।