কী আছে সরকার নির্ধারিত জুমার খুতবায়

1

অশান্তি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আজ (শুক্রবার) দেশের সকল মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) নির্ধারিত পবিত্র জুমার খুতবা অনুকরণ ও অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই পরামর্শের পাশাপাশি দুই পৃষ্ঠার খুতবার আরবি ও বাংলা তরজমাও পাঠানো হয়েছে।
‘অশান্তি এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সম্পর্কে সতর্কীকরণ’ শিরোনামের খুতবাটি শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জুমার নামাজের সময় পাঠ করা হবে বলেও জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
খুতবার বাংলা তরজমায় বলা হয়েছে, “হে মসুলমানগণ! একজন মানুষ সে যাই হোক না কেন- তার জন্য পৃথিবীকে নিরাপদ জীবন ধারণের অধিকার স্বীকৃত। সে মুমিন হোক কিংবা কাফির হোক কিংবা ফাসেক হোক। অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে খুন করা কিংবা তার সম্পদ গ্রাস করা কিংবা তাকে অপমানিত করা হারাম। কুরআন বলেছে, আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না এবং আরো এরশাদ হচ্ছে যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা করল সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষকেই হত্যা করল।”
“মহানবী বলেন, সর্বোচ্চ কবিরা গোনাহ হল মানুষ খুন করা। এখানে মুসলিম অমুসলিম পার্থক্য করা হয়নি।”
খুতবায় অভিভাবকদের সচেতন করে বলা হয়েছে, “আপনারা আপনাদের সন্তান-সন্ততির বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী ও সাবধান থাকুন। তাদেরকে সুন্দর চরিত্রের শিক্ষা দিন। তাদের বিষয়ে সজাগ থাকুন যে আপনার সন্তানকে আপনার চোখ ফাঁকি দিয়ে যেন সন্ত্রাসীরা কেড়ে নিতে না পারে। সন্ত্রাসীরা এই অবুঝ সরল কিশোরদেরকে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ থেকে ভাগিয়ে নিয়ে নানা অপকর্মের প্রশিক্ষণ দিয়ে জঙ্গি বানাতে চেষ্টা করে থাকে।”
খুতবার উপসংহারে বলা হয়েছে, “সবশেষে আমরা আহ্বান করি আমাদের সন্তানদেরকে, আমাদের যুবকদেরকে সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে বেঁচে থাকতে, হে আল্লাহ! আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশকে আপনি সন্ত্রাস ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন এবং একে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশে পরিণত করুন।”
গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ২ জন পুলিশ ছাড়াও ২০ দেশি-বিদেশিকে হত্যা করে। পুলিশের অভিযানে ৬ সন্ত্রাসীও নিহত হন। এ ছাড়া ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় এক সন্ত্রাসীসহ ৪ জন মারা যায়।
এরপর গত ১০ জুলাই আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে ইমাম সাহেবরা যে বয়ানগুলো দেন সে বয়ানগুলোর ধরন কী তা মনিটরিং করা এবং সেগুলোর ব্যাপারে লক্ষ্য রাখার জন্য বলা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা ধর্মপ্রাণ মুসলমান, যারা ওয়াজ-মাহফিল করেন, জুমার দিন খুতবা পড়েন তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে প্রকৃত ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এদের (সন্ত্রাসী) বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হোন।