যত কম কিনবেন জীবন তত সহজ থাকবে

follow-upnews
0 0

নতুন কিছু দেখলেই আমাদের তা কিনতে ইচ্ছে করে। অনেক সময়ই প্রয়োজন বিবেচনার চাইতে ইচ্ছেটাই মুখ্য হয়ে ওঠে। কিছু কিনলে সবসময় কিন্তু সমস্যা কমে না, অনেক সময় সমস্যা বাড়ে। বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি পণ্যের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। শখের জিনিসপত্রের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সমস্যা হয়। ধরেন, হঠাৎ মনে হল- ফ্যামিলিতে একটি ওভেন দরকার। আট হাজার টাকা দিয়ে একটি ওভেন কিনলেন। প্রথম কয়েকদিন ওটা নিয়ে গুতোগুতি করলেন, তারপর দেখলেন ওটি আর কোন কাজে লাগছে না, ঘরের এক কোণে পড়ে আছে, ধীরে ধীরে ওটি নষ্ট হয়ে যাবে। এরপর যতবার ওদিকে আপনার চোখ যাবে, দীর্ঘশ্বাষ বাড়বে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার টাকা নষ্ট হয়েছে, সময় নষ্ট হয়েছে, জিনিসটি ঘরের জায়গা দখল করছে এবং আপনার কষ্ট বাড়াচ্ছে।

কক্সবাজার গিয়েছেন সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে। উল্লেখ্য, আপনি সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গিয়েছেন, কেনাকাটা করতে যাননি। তো প্রথম দিনেই সৈকত সংলগ্ন মার্কেট থেকে শামুক ঝিনুকের নানান ধরনের জিনিসপত্র, কিছু বার্মিজ আচার এবং কাপড় চোপড় কিনে ফেললেন। ওগুলো নিয়ে হোটেলে রাখলেন। এতে কি হয়- উদ্দেশ্যে খাটো হয়, মনের মধ্যে বিক্ষিপ্ততা তৈরি হয়। আপনি গিয়েছেন ঘুরতে, কিন্তু করছেন শপিং! জিনিসগুলো আপনাকে সংরক্ষণ করতে হচ্ছে, খেয়াল রাখতে হচ্ছে, সেক্ষেত্রে ঘোরার মজাটা নষ্ট হবে। বাসায় ফিরে দেখবেন- শামুক ঝিনুকের কিছু জিনিস ভেঙে গিয়েছে, পোশাকগুলো যেমন ভেবে কিনেছিলেন তার চেয়ে অনেক নিম্নমানের। এর অধিকাংশ জিনিসই কোন কাজে আসবে না, কয়েকদিন ঘরের বিভিন্ন জায়গায় গড়াগড়ি খেয়ে অবশেষে ময়লার ঝুড়িতে স্থান পাবে, অথবা অহেতুক শোকেজের জায়গা দখল করবে।

ফ্যামিলিতে কেউ কাঁঠাল খেতে চেয়েছে- আপনি বিশাল এক কাঁঠাল কিনে নিয়ে আসলেন । এনে ভেঙে দেখলেন, কাঁঠালটি খুবই খারাপ, একেবারে অখাদ্য। কাঁঠাল তরমুজের মত ফলগুলো ভাল হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা পঞ্চাশ ভাগের বেশি নয়, তাই এগুলো যত ছোট কিনবেন তত ভালো। বিশেষ করে কাঁঠাল বড় কিনতে নেই, ভালো হলেও একটি কাঁঠাল শহুরে জীবনে খেয়ে শেষ করা কষ্টকর, ওটা শেষ পর্যন্ত ফেলে দিতে হয়।

অর্ধেক দামে ন্যাংড়া  আম পেয়ে দশ কেজি কিনে ফেললেন, কিন্তু একবার ভাবলেন না যে, কেন বাজার মূল্যের চেয়ে এগুলোর দাম এত কম। বাসায় নিয়ে দেখলেন- অর্ধেক আম পচা, আধা পাকা ইত্যাদি। দশ কেজি আপনাকে বড় জোর চার কেজি আমের আউটপুট দিয়েছে। ঠকলেন, না জিতলেন?

অর্থাৎ, কেনাকাটায় সতর্ক হতে হবে। কিনতে হবে প্রয়োজন বিবেচনায়, কিনে লাভ করার কিছু নেই। যত কম কিনবেন জীবন তত সহজ হবে, প্রতিটি জিনিস টেনশন বাড়ায় এবং ব্রেনেরে কিছু জায়গা দখল করে, ফলে জিনিসপত্র বেশি থাকলে মানুষের কর্মদক্ষতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একটা স্মার্ট ফোন যতটুক উপযোগ সৃষ্টি করে, কোন কোন সময় ঝামেলা বাড়ায় তার চেয়ে অনেক বেশি। অতএব, সাবধান!

Next Post

বাংলাদেশ

  ফেরিতে পার হওয়ার সময় মাওয়া ঘাট থেকে (ফেরির তিনতলা থেকে) জুম করে তোলা, মেয়েদের এমনই সেন্স, সে কিন্ত ঠিকই বুঝেছে এবং যুঝেছে।