বেহায়াদের রাজত্ব: এইসব তসলিমা, ভাট্টি, মঈনুলরা একটা পেপে গাছও ফলায়নি কোনোদিন

Taslima Nasrin

নিপিড়ীত এ জনপদে

বিস্ময়ে

অভুক্ত শিশুর ক্রন্দন থামে

বৈশ্য বণিতার দরবারে। 


Taslima Nasrin

বিশাল বিশাল মানুষ এরা নাকি, কিন্তু বস্তার মুখ খুললে যা বের হয় জাতির উচিৎ সাথে সাথে তা ছুড়ে ফেলে দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা—কিন্তু এ জাতি এমনই দুর্গন্ধমুখী যে বস্তাপঁচা যাচ্ছেতাই এসব মাল নিয়ে কচলাতেই থাকে। 

ব্যারিস্টার মঈনুল যে একজন নিম্নমেধার, নিম্নমানের, স্বার্থপর, উচ্চবিলাসী শ্রেণির লোক সেটি এর আগেও বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। সর্বশেষ তার প্রমাণ মিলল মাসুদা ভাট্টি নামক একজন নারীকে টিভিতে এসে চরিত্রহীন বলায়। এটা আসলে মাসুদা ভাট্টিকে বলা হয়নি, কথাটায় নারীর প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। সংগত কারণেই মঈনুলের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজ সরব হয়েছে।

কে এই মাসুদা ভাট্টি  সে প্রশ্নটা তোলাই যায়, কিন্তু ফাও কষ্টের দরকার হয় না। প্রকৃতপক্ষে যে মঈনুল সেই মাসুদা ভাট্টি, মানে বাংলাদেশে লাউ পাকিস্তানে কদু, কিন্তু জিনিস একই। মাসুদা ভাট্টিকেও একজন ‍সুন্দর মানুষ আখ্যা দেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ, দেশ জাতি মানুষের জন্য কোনো দায়বদ্ধতা তার কোনো কর্মে নেই, যেমন নেই মঈনুল ইসলামের—এধার ওধার করে একটি ‘আমি’ দাঁড় করাতে চেয়েছেন এরা শুধু। এইসব ‘আমি’ র চেয়ে একজন ঝাড়ুদারের মূল্য অনেক বেশি। 

প্রশ্ন তাই সেখানে নয়, প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যারিস্টার মঈনুল ইসলাম যা বলেছেন সেটির প্রাসঙ্গিকতা এবং নৈতিকতা নিয়ে। অবশ্যই মি. মঈনুল ইসলাম গর্হিত কাজ করেছেন। তবে এরজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে, তাকে গ্রেফতার করা যেতে পারে –সেটি মনে করি না। হতে পারত—সবগুলো গণমাধ্যম তাকে বর্জন করতে পারত। সেটি কিন্তু হয়নি।

এই মঈনুলই দেখবেন মহাসমারোহে আবার মঞ্চে হাজির হবে, এজন্য একথা আমি সবসময় বলি যে নেতিবাচক প্রচারও এদেশে ইতিবাচক, কারণ, মানুষ একসময় শুধু নামটা মনে রাখে, কী কারণে নামটা সে জেনেছিল সেটি মনে রাখে না, ততটা জ্ঞান এবং নৈতিকতাভিত্তিক সমাজ আমাদের নয়।  

এদিকে মাসুদা ভাট্টি নামক এলিট সমাজের একটি অলংঙ্কারের বিরুদ্ধে ককিয়ে উঠলো আরেক শখের নারীবাদী অলঙ্কার তসলিমা নাসরিন, যদিও বিষয়টি একেবারেই তাদের ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার বিষয়। একটি সামষ্টিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলোচনার মধ্যে গোপন ব্যক্তিগত একটি বোঝাপড়ার বিষয় নিয়ে এসে মিস তসলিমা নাসরিন বুঝিয়ে দিয়েছেন যে কোনোদিনই তিনি একজন দায়িত্বশীল লেখক হয়ে উঠতে পারেননি।

তবে মাসুদা ভাট্টিকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলে ফেলেছেন–

 চরিত্রহীন বলতে আমি কোনওদিন এর ওর সঙ্গে শুয়ে বেড়ানো বুঝি না। চরিত্রহীন বলতে বুঝি, অতি অসৎ, অতি লোভী, অতি কৃতঘ্ন, অতি নিষ্ঠুর, অতি স্বার্থান্ধ, অতি ছোট লোক।

সমাজের দুটো অপ্রয়োজনীয় জীব নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছিল, এরমধ্যে এক অপ্রয়োজনীয় (মঈনুল ইসলাম) অপরাধ করেছেন, আরেক অপ্রয়োজনীয় শিকার হয়েছেন। যেটা হওয়া উচিৎ সেটিই হচ্ছে—অপরাধী ‘অপ্রয়োজনীয়’র বিরুদ্ধে অান্দোলন হচ্ছে। কিন্তু মিস তসলিমা নাসরিনের সেটি সহ্য হলো না, তার মনে হলো মাসুদা ভাট্টি বেশি আলোচিত হয়ে যাচ্ছেন যে যোগ্যতা তার নেই, ফলে তিনি নিজেকে এই জোসের মধ্যে টেনে আনলেন!

একটা বিশেষ মিল এদের মধ্যে পাবেন—এরা কেউ সংগ্রাম এবং সাধনার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হননি, এরা প্রত্যেকে স্বচ্ছল-সুবিধাপ্রাপ্ত পরিবার থেকে এসেছেন এবং সবসময় যে কোনো কৌশলে উপরে উঠতে চেয়েছেন, প্রাণ-প্রকৃতির কল্যাণের জন্য বিশেষ কিছু করতে চেয়েছেন এমন নজির নেই। ফলে এদের নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করার চেয়ে কীভাবে গ্রামের মানুষ বর্ষাকালে চালের ছাটের নিচে দুটো মরিচ গাছ ফলাতে পারে সে চিন্তা করা অনেক বেশি মানবিক এবং প্রয়োজনীয়।