“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ তূর্য”

follow-upnews
0 0

আমি তখন হাই স্কুলের ছাত্রী। গ্রামে এক চাচাতো বোনের বিয়ের গায়ে হলুদে সবাই যখন হলুদ মেহেদী নিয়ে দৌড়ঝাঁপ আনন্দ করছে, এক দাঁত পড়া, শরীরের চামড়া ঝুলে পড়া দুলাভাই আমার গায়ে হলুদ মাখতে গিয়ে বাজে কামনার প্রকাশ ঘটানোয় তাৎক্ষণিক আমি থমকে দাঁড়িয়ে থাকি।

মাথায় রক্ত টগবগ করছে, গা থরথর করে কাঁপছে। একটু স্থির হয়ে হলুদের সাথে মরিচ মিশিয়ে হাতে নিয়ে হাঁটছি সুযোগের সন্ধানে। এক পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ শেষ হয়ে এলে ঐ দুলাভাইয়ের বউ (আমার বোন) সহ সিনিয়রদের সামনে ঐ শালা কী নিয়ে যেন আলাপরত–
মোক্ষম সুযোগ, সামনে দাঁড়িয়ে ঠাস করে গালে চড়!

সবায় হতবাক হলেও আমি হো হো করে হেসে বুঝিয়ে দিলাম–তখন দুলাভাই আমারে হলুদ লাগাইছে, আমি এখন লাগাইলাম। মরিচ মেশানোর বিষয় আর ঐ পুতানো শালার লাল চোখের বিষয় সবার কাছে অজ্ঞাতই থেকে গেলো। জীবনে আর ঐ দুলাভাই এই শালীর সাথে মশকরা করার সাহস করেনি।

আমি তখন এইসএসসি তে পড়ি। দূর সম্পর্কের এক নানা–তার ছোট মেয়েটা আমার ক্লাসমেট। নাতনি বলে হাসি তামাশা যা করে এড়িয়ে চলি। একদিন এক সোফায় আমার পাশে উনি বসা। নাতনিরে সোহাগ করে জড়িয়ে ধরছে। কিন্তু তার স্পর্শে স্পষ্ট নোংড়া কামুকতা, বুঝতে আমার দ্বিধা হয়নি। হাত দুটো ঝাঁকি মেরে সরিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম, “নানা, আমি আপনার নাতনি হলেও আপনার ছোট মেয়ের ক্লাসমেট। কথাটা এরপর মাথায় রাখবেন।”

শালা লুল হলেও আক্বেল ছিলো, এরপর যতবার দেখা হয়েছে আমার চোখের দিকে তাকায়নি। জীবনে বহু ছেলেকে কষে চড় মারা থেকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে মারার ঘটনা ঘটাতে পারলেও নিজের আত্মীয় স্বজন দ্বারা এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করা খুব কঠিন।

“একটা শিশু কন্যাও তার আপনজনের ফিঙ্গারিং থেকে রেহায় পায় না!” এটা অরুচিকর এক নির্মম বাস্তবতা। তাই কন্যা, জায়া, জননী চোখ কান খোলা রাখবেন, বাইরের চেয়ে ঘর নিরাপত্তাহীন অনেক বেশি। নিজেকে রক্ষার জন্য কোনো পুরুষের সাহায্য না নিয়ে নিজেই অস্ত্র হোন, যখন যেখানে যেভাবে লাগে।

আমি জানোয়ার যেমন দেখেছি, দেবতাও দেখেছি। তাই সব পুরুষ এক, একথা আমি কখনো বলতে পারব না। তবে ডিফেন্স করার দায়িত্ব নারী আপনাকেই নিতে হবে।

যত রেপ-এর কাহিনী প্রকাশ পায়, তার চেয়ে লক্ষ গুণ বেশি অপ্রকাশিত থাকে। যা সম্পর্ক, লজ্জা, আর ভয়ের কারণে চিরতরে আড়ালেই থেকে যায়।

পুরুষের মাঝে মানুষ খুজে পেলে পূজা করো। একটি মানুষই একজন ঈশ্বর। আর পুরুষের মাঝে হিংস্র পশু দেখলে বিষ উপড়ে ফেলো। মনে রাখতে হবে, শয়তান হননে সৃষ্টির প্রকৃত কল্যাণ হয়।


Tania Ishrat
Tania Ishrat

তানিয়া ইশরাত

Next Post

মোটিভেশনাল স্পিকার আবশ্যক

সারা বাংলাদেশব্যাপী সেমিনারে লেকচার দেওয়ার জন্য তিনজন মোটিভেশনাল স্পিকার দরকার। থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা এবং লেকচার প্রতি উপযুক্ত সম্মানী দেওয়া হবে। ১. যে বিষয়ে লেকচার দিতে হবে: কেন চাকরি? কী চাকরি? কীভাবে? কেন চাকরি নয়? ২. যতক্ষণ লেকচার দিতে হবে: ১+১ = ২ ঘণ্টা। মাঝখানে দশ মিনিট বিরতি। ৩. যোগ্যতা: জীবনবোধসম্পন্ন, […]
CLOSEUPNEWS.COM