মৃত্যুদণ্ড মানেই শুধু ন্যায়বিচার নয়, তাহলে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হল কেন?

যার যা সাজা

পৃথিবীতে ৫৮টি দেশে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড রয়েছে, বাকী দেশগুলোতে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নেই। তাই একথা বলার উপায় নেই যে ন্যায় বিচার মানে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া।

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এতটাই প্রকাশ্য এবং বর্বোরোচিত ছিল যে তা মানুষের বহুদিনের ঘুমন্ত বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি এ প্রশ্নটিও সঙ্গত কারণে উঠেছিল, যতজন সাংবাদিক এবং পুলিশ সেখানে ছিল সেদিন তারা কি ঘটনাটি থামানোর চেষ্টা করতে পারত না? বিশেষ করে পুলিশের তো এটি দায়িত্ব ছিল।

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাকারীদের আড়াল করার কোনো সুযোগ নেই, কারণ, ঘটনার ভিডিও এবং অনেক ছবি গণমাধ্যমে রয়েছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডটির বিচার করা যে খুব সহজ নয় সেটিও খুব বোধগম্য। কারণ, বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিশেষ চরিত্র আছে। স্বাধীনতার পর থেকে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রের কাছ থেকে দায়মুক্তি পেয়েছে।

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড একটি ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ ই আসলে। ব্যক্তি বিশ্বজিৎ রাজনীতি করে না, কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের যেসব কর্মীরা সেদিন বিশ্বজিৎ হত্যায় অংশ নিয়েছিল তারা রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই মাঠে নেমেছিল। তারা মূলত বিশ্বজিৎকে হত্যা করতে চায়নি, কোনো পথচারিকে হত্যা করতে চায়নি, হত্যা করতে চেয়েছিল এবং করেছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে, এবং এভাবে বিভিন্ন সময়ে বিপক্ষ দলের জন্য শক্ত বার্তা তৈরি করা হয়, যে নজির বাংলাদেশে বিরল নয়।

আসলে এই হত্যাকাণ্ডটির ভিডিও এবং ছবি আছে বলেই না জনগণ এতটা আলোচনার সুযোগ পাচ্ছে। এরকম হত্যাকাণ্ড আছে প্রচুর। নারায়নগঞ্জের কিশোর ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ভিডিও নেই, কিন্তু ধারণা করতে পারি–সেটি নৃশংসতার দিক থেকে হয়ত বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডকেও হার মানাবে। ত্বকী হত্যার কোনো বিচার এখনো হয়নি।

হত্যাকাণ্ড নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা চলে না, কারণ, হত্যাকাণ্ড সর্বোচ্চ অরপাধ এবং প্রতিটি হত্যাকাণ্ডেরই নিরপেক্ষ বিচার হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের বিচার করা কি খুব সহজ? মাঠের কর্মীদের বিচার করার সুযোগ আছে এ হত্যাকাণ্ডের তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে, কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সরাসরি হত্যা করতে না বলা হলেও মাঠে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে কি বলা হয় না, বলা হয়েছিল না?

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরে এরকম একটি খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল, যেটি উইকিপিডিয়ায় স্থান পেয়েছে–

“পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক ঘাতকরা জানায়, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন রাতে তারা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে গোপন বৈঠক করে। ঐ গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে অবরোধের পক্ষে কেউ মিছিল বের করলে তাদের ওপর হামলা চালাতে হবে। এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা সহযোগিতায় থাকবে।”

কী ঘটেছিল ঐদিন

২০১২ সালের ঘটনা এটি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ৯ ডিসেম্বর তারিখে একটি অবরোধ কর্মসূচী  দিয়েছিল। কর্মসূচীর সমর্থনে ঐদিন সকালে পুরোনো ঢাকা জজ কোর্ট থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে পৌঁছালে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে।

এ সময় আশেপাশে জড়ো হয়ে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আইনজীবীদের ধাওয়া করে। আইনজীবীরা পালিয়ে যায়। ধাওয়া খেয়ে পথচারী বিশ্বজিৎ দৌঁড়ে প্রথমে নিকটস্থ ভবনের দোতলায় অবস্থিত একটি ডেন্টাল ক্লিনিকে আশ্রয় নেয়। ছাত্রলীগের সশস্ত্র কর্মীরা বিশ্বজিতের পিছু নিয়ে হামলা চালায়। দলবদ্ধ হয়ে কিল-ঘুষি-লাথি চালানো হয়, লাঠির আঘাত করা হয়।

এরপর লোহার রড দিয়ে সজোরে আঘাত করা হয়, লোহার পাত দিয়ে পেচিয়ে আঘাত করা হয়। আহত বিশ্বজিৎ প্রাণ বাঁচাতে পাশের আরেকটি ভবনে ঢুকে পড়তে চায়। তারপরেও সে রক্ষা পায়নি। আক্রমণকারীরা তাকে টেনে বের করে হামলা চালায়। ৮-১২ জনের একটি দল তাকে আঘাত করতে থাকে, এবং একজন চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। বিশ্বজিতের সারা শরীরে রক্তের বন্যা বয়ে যায়। সে আবার পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পিছন থেকে আঘাত চলতে থাকে। এক পর্যায়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পথচারীদের কয়েকজন বিশ্বজিৎকে পাশের ন্যাশনাল হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের ঐ সকল কর্মীরা বাধা দেয় বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রাণ বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে উঠে দৌঁড় দেয় বিশ্বজিৎ; কিন্তু শাঁখারীবাজারের একটি গলিতে গিয়ে ঢলে পড়ে যায়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় এক রিকশাওয়ালা তাকে নিকটস্থ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। অচিরেই মৃত্যু কোলে ঢোলে পড়ে সে।

পর্যবেক্ষণ

দেখা যাচ্ছে, মিছিলকারী আইনজীবীদের ধাওয়া করলেও তাদের কাউকে নাগাল করে হত্যা করতে চায়নি আক্রমণকারীরা। অর্থাৎ তারা এমন একটি আক্রমণ শানাতে চেয়েছে যেটি করে আইনগতভাবে পার পাওয়া যায়। বিশ্বজিতের পাতলা গড়ন এবং সাধারণ পোশাক আক্রমণকারীদের জন্য একটি সহজ নিশানা ঠিক করে দিয়েছিল সেদিন হয়ত। অর্থাৎ আক্রান্ত এবং আক্রমণকারীর যে সহজ সমীকরণ সেটি এখানে স্পষ্টতই দৃশ্যমান। ধাওয়া করলেও আইনজীবীদের কাউকে মারতে সেদিন হত্যকারীরা যায়নি, যদিও মিছিলকারী আইনজীবীরাই ছিল অবরোধের সর্মর্থনকারী এবং ক্ষমতসীন দলের মূল ‘শত্রু’।

একটি বিষয় এখানে খুব লক্ষণীয়– ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার আক্রমণগুলো সাধারণত যেরকম হয়, এই হত্যাকাণ্ডটি সেরকম নয়। আক্রমণকারীরা কোনোভাবেই বিশ্বজিতকে পালাতে দেয়নি, তারা মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছে। খুনেরও তো একটি মনস্তত্ব থাকে, কেন কেউ বা কতিপয় কাউকে খুন করতে চায়? বিশ্বজিৎ যেহেতু আক্রমণকারীদের পূর্বশত্রু নয়, তাই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দিয়েই হত্যাকাণ্ডটিকে বিচার করতে হবে।

এমন একটি পরিকল্পনার কথা তো আমরা গণমাধ্যম থেকে জেনেছি যে শক্তভাবে আন্দোলনকারীদের মোকাবেলা করা হবে এমন সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘটনার আগের দিন নিয়েছিল। এ ধরনের একটি কানাঘুষাও কিন্তু বাজারে আছে–কোনো ধরনের ‘লাসের অর্ডার’ ও কি সে সিদ্ধান্তে ছিল?

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, খুব নিশ্চিন্ত-নির্বিকারভাবে বিশ্বজিৎতে হত্যা করা হচ্ছে! ভীতি প্রদর্শনের রাজনীতি, লাশের রাজনীতি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দেয়ার এ তত্ত্ব কি আমাদের দেশে এতটাই অনুপস্থিত যে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বোদ্ধারা বিরল এবং বিশেষভাবে বিবেচনা করবে গত বিয়াল্লিশ বছরের কোনো উদাহরণ সামনে না এনে?

হত্যাকাণ্ডটির বিচারের জন্য ‘কারা হত্যা করেছিল’ বিশ্বজিৎকে সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু দেশের রাজনৈতিক নৈরাজ্য বুঝতে হলে বর্ণনা করতে হবে ‘কেন বিশ্বজিৎ দাসকে ওভাবে হত্যা করা হয়েছিল’–কিন্তু সে ন্যারেটিভ কখনোই তৈরি হয়নি।

আচ্ছা, যদি এ হত্যাকাণ্ডের কোনো ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ না থাকত তাহলে কি আক্রমণের পরিকল্পনাকারী এবং হত্যাকাণ্ডের বাস্তবায়নকারীরা সফল ছিল না? সরকার, বিচার বিভাগ কেউ কি খুঁজে বের করে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করত? এমন কি ধারণা করা অসঙ্গত যে সেক্ষেত্রে সফলভাবে জজ কোর্ট এরিয়ায় আইনজীবীদের আন্দোলন কার্যকরভাবে দমন করার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বাহবাও পেত।

ভিডিও ফুটেজ আছে তাতেও কি ঘটনাটি ক্ষমতাসীন রাজনীতির জন্যে লাভের হয়নি? বর্তমানে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রসাশন দেশের কতটা ভালো করছে, করতে চাচ্ছে সেটি ভিন্ন আলোচনা, কিন্তু আমাদের দেশের মাঠের রাজনীতি পরিচালিত হয় ভীতি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে, জনগণের কাছ থেকে ভালোবাসা আদায় করে নয়। তাই বিশ্বজিৎ হত্যকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এবং তার ভিডিও ফুটেজ থাকায় এ বার্তাটি কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে বিরোধী দলের যেকোনো আন্দোলনের পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। ঐদিন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আইনজীবীরা প্রত্যেকেই একথা একবার হলেও ভেবেছে যে মরতে তো আমিও পারতাম।

হত্যাকাণ্ডটির কারণে জনগণের কাছে সরকারের ইমেজ যেমন নষ্ট হয়েছে আবার বিরোধী পক্ষকে ভীতি প্রদর্শনের একটি বড় হ্যাশট্যাগও তৈরি হয়েছে। আবার মাঠ পর্যায়ের চাঁদাবাজির জন্যও এ এক চমৎকার বিনিয়োগ। জনগণের কাছে এ বার্তাটি পৌঁছে গিয়েছে যে তারা ক্ষমতার সাথে যোগসূত্র আছে এমন যেকোনো পাতি নেতার আবদার পূরণ করতেও বাধ্য। যোগবিয়োগে ক্ষমতাসীন দলের লাভ লোকসানের কথা যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তাদের লাভই হয়েছে যারা রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে করে খেতে চায়, ক্রোড়পতি হতে চায়। ক্ষতি হয়েছে সরকারের।

বিচার

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের বিচার লিটারেলি কঠিন ছিল না, কারণ, ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের স্পষ্ট পরিচয় ছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পরবর্তীতে তাদের পূর্ণাঙ্গ পরিচয়ও প্রকাশিত হয়েছিল। পাবলিক সেন্টিমেন্ট মাথায় রেখে দ্রুত বিচারের রায় হয়েছিল, যদিও হত্যাকারীদের অনেকে পলাতক ছিল এবং এখানো পলাতক আছে।

বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২১জন কর্মীর মধ্যে আটজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল নিম্ন অাদালত থেকে। বাকি ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছিল আদালত। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। এরপর বিচার প্রক্রিয়াটি উচ্চ আদালতে গড়ায়।

নিম্ন আদালতের রায়ে আসামীদের অনেককে পলাতক দেখিয়ে বিচার করা হলেও পত্রিকার খবর বলছে তাদের বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে।

যুগান্তর পত্রিকার এ সংক্রান্ত খবর ছিল-

সাজাপ্রাপ্ত হয়েও ‘পলাতক’ খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে!

এ বছরের গোড়ার দিকে ইত্তেফাক নিউজ করেছিল বিষয়টি নিয়ে–

ঘুরে বেড়াচ্ছে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৪ আসামিে

এ দুটি রিপোর্ট পড়লে স্পষ্ট হবে যে বিচারের রায়ে খুনীদের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে না ফাঁসি হয়েছে তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খুনীদের সবাইকে আটক করা হয়েছে কিনা, এবং এ ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি কীভাবে পরিচালিত হয় সে বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়েছে কিনা।

আসলে নিম্ন আদালত থেকে তখন যে রায় প্রকাশিত হয়েছিল তাতে সবাই স্বস্তি প্রকাশ করলেও সে রায়েও গলদ ছিল বলে অনেক বিজ্ঞ আইনজীবী মত প্রকাশ করেছিলেন। পাবলিক সেন্টিমেন্ট মাথায় রেখেই সম্ভবত বিচার কাজটি সম্পন্ন হয়েছিল, নইলে এ ধরনের রাজনৈতিক হত্যকাণ্ডে কর্মীদের যাবজ্জীবন সাজা হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত মনে হয়। যুক্তির দুটি দিক রয়েছে এক্ষেত্রে-

১। মৃত্যুদণ্ড খুব বাধ্য না হলে বর্তমান বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে দেওয়া হয় না;

২। রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কর্মীদের দ্বারা হলেও তারা মূলত বাস্তবায়নকারী, এর পিছনে যে রাজনৈতিক তত্ত্ব এবং মদদ রয়েছে সেটিই মূলত দায়ী।

হত্যাকারীদের নৃশংসতা এবং বর্বরতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, ‘এদের’ মধ্যে থেকেই হয়ত কেউ কেউ ভবিষ্যতে সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হয় সে বিষয়েও সন্দেহ কম, কারণ, এরকম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যন্ত বাংলাদেশ দেখেছে। কিন্তু যে যোগসূত্রের মাধ্যমে মাঠের এইসব নিষ্ঠুর কর্মীরা পরিচালিত হয় সে সুতোর সন্ধানটি কি কর্তাব্যক্তিদের অজানা? সেই সুতোটি কি মাকড়শার জালের মত নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং আইন বিভাগকে পেঁচিয়ে রয়েছে না?

আসলে উচ্চ আদালত দুজনের ফাঁসির রায় বহাল রাখা নিয়েই হয়ত কিছু যৌক্তিক আলোচনা করা যায় যদিও আদালতের বিচার নিয়ে কথা বলার সুযোগ খুব কম থাকে। তারপরেও সংবিধান জনসাধারণকে মত প্রকাশের যে স্বাধীনতা দিয়েছে সেটির আলোকে বলা যায়, অন্যদের মৃত্যুদণ্ড হতে অব্যাহতি দিয়ে দুজন আসামীর (একজন পলাতক) মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার বিষয়টির ন্যায্যতা সর্বোচ্চ আদালত ব্যাখ্যা করলে ভালো হত।


সম্পাদকের কলাম