সবই সবারই জন্য – স্বাধীনতা তুমি

একমুঠো মাটি যদি পারো বানাতে।
মোরা গোটাবিশ্বটাকে তুলে দেবো তোমারই হাতে!!
তখন তুমি বোলো, ‘সবকিছু তোমার!’
সবই সবারই জন্য, একথা কেউ বলবে না আর!!


আমার জীবনটা নয় আমার!
এটা যেন পুঁজিবাদীর বাজার!!


বিলিয়ে দেও আপনার আছে যত ভালোবাসা!
জেগে উঠুক মানবের জীবনে সকল আশা!!


মন খুঁজিস কারে?!
তোরেই খুঁজে পেলাম না রে!!


খুব কম মানুষ আছে যারা সামাজিক আন্দোলনে সাড়া দিয়ে থাকে। কারণ, যত দিন যাচ্ছে মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। তাই তারা নিজের সাফল্য ছাড়া অন্যের উন্নয়নের কথা ভাবতে পারে না।

যদিও এনজিওর নামে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ব্যাঙের ছাতার মত, এসব প্রতিষ্ঠানে মানুষের দানের অর্থ সিংহ ভাগ লুটেপুটে খায় নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ফলে হাজার হাজার এনজিও হওয়া সত্ত্বেও মানব কল্যাণকর কর্মকাণ্ড খুবই কম দেখতে পাওয়া যায়।

আর কিছু এনজিও আছে যারা সেবার কথা বলে দরিদ্র শ্রেণিকে লুণ্ঠন করছে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে। এরা হলো মধ্যযুগের মহাজন। মধ্যযুগের মহাজনরা দরিদ্রের দরিদ্রতার সুযোগে তারা উচ্চহার সুদে ঋণ প্রদান করত ফলে দরিদ্ররা কোনদিনই সেই ঋণের ফাঁস থেকে বের হতে পারতো না। ঋণের ফাঁসে আত্মহত্যাই ছিল তাদের শেষ পরিণতি। এখনও তাই ঘটছে এই ক্ষুদ্রঋণের ফাঁসে।

উপরোক্ত কথাগুলো বলার অর্থ হলো, উন্নয়নের নামে যাই দেখি না কেন অথবা যা শুনি না কেন, আমরা ভুল দেখি ও শুনি। কেন? আলো বা শব্দের তরঙ্গে যেমন মাঝে মাঝে এরর ঘটে থাকে, ঠিক তেমনি এররের কারণে সত্যটার পরিবর্তে মিথ্যাটাই জেনে থাকি। এই এরর ঐসব কৌশলীরাই করে থাকে যারা মানুষের উন্নয়নের নামে মূলত শোষণ করে থাকে।

এর থেকে কি উত্তরণের কোন পথ নেই? মানব ও প্রকৃতির উন্নয়ন কি কোন দিনই ঘটবে না? হয়ত ঘটবে। যদি নিঃস্বার্থবাদী মানুষগুলো কোনোদিন একত্রিত হয় সেইদিন।


আমরা সবাই বাঙালী হবো,
ভিনজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন দূর করবো!!


বিপ্লব হবেই হবে!
বাঙালী ‘জাতিসত্তা’ ফিরে পাবেই পাবে!!


সাবাই বলে জগত নাকি এগিয়ে যাচ্ছে! আমার প্রশ্ন, মানবতা কতটুকু এগোলো?


অনেকের ধারণা মানুষকে ভালো কথা বললে মানুষ ভালো হয়ে যাবে। এটা একেবারেই ঠিক নয়। তাই ভালো কথার অনেক গ্রন্থ (কথিত ধর্মগ্রন্থ) রচিত হয়েছে, তাতে কোন ফল আসেনি। আসবে কী করে? ভালো কথা শুনে তো আর পেট ভরে না। মানুষ ভালো হলে যে সমাজ ভালো হবে এমন উদাহরণ কোনো সমাজে নেই। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষকে ভালো হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ফল কী? শূন্য।

এসব বাণী প্রচার করতে কেউ কেউ জীবিকা বেছে নিয়েছে। কেউ কেউ সংস্থা (বিভিন্ন ধর্মীয় মিশনারি) বানিয়েছে। কিন্তু সমাজে যারা অন্যায় করছে বা অন্যায়কে লালন করছে তাদেরকে কেউ সংশোধন হতে বলে না। যারা সমাজে বর্ণবাদ সৃষ্টি করলো তাদেরকে কেউ অপরাধী বলে না। বরং তাদের পদলেহন করে এই প্রচারকেরা জীবিকা অর্জন করে। তারাও তাদেরকে লালন করে এই কারণে ভালো কথা বলে নিন্মশ্রেণির মানুষগুলো শান্ত করে রাখবার জন্য। যেন সমাজ পরিচালনা করতে কোনরূপ বিদ্রোহের দানা না বাধে।

মোদ্দাকথা হচ্ছে, নিন্মশ্রেণির মানুষগুলোকে সব সময় ভালো হতে হবে, আর শোষক সব সময় শোষকই থাকবে। শোষককের ভালো হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই, তাই তাদেরকে ধর্মমতে চলারও কোনো প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ, ধর্মবাণী শুধুমাত্র দরিদ্রের জন্য শান্তনা বাণী ছাড়া আর কিছুই না।


Swadhinata Tumi