লুটপাট, সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া —সেগুলো তো ভয় দেখিয়েও করা যেত। বা এমন হতে পারে যে লুটপাট করতে গিয়ে বা যুদ্ধের ময়দানে হত্যা করেছে। কিন্তু পলায়নরত মানুষ, যখন প্রাণের ভয়ে ভারত চলে মানুষ তখনও তাদের হত্যা করার কারণ কী? ১৯৭১ সালে যতগুলো গণহত্যা ঘটেছে তার মধ্যে অন্তত কয়েকশো গণহত্যা ঘটেছে পলায়নরত মানুষের ওপরে। কারণ কী?
বাগেরহাটের ‘ডাকরা গণহত্যা’ নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে কিংবদন্তী মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু কে প্রশ্নটি করা হয়—
কেন তারা এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছিল, সেটি বোঝা খুব মুশকিল। এ অঞ্চলে বেশ কিছু এ ধরনের গণহত্যা ঘটেছিল। এরা কোনো যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল না। এরা প্রাণভয়ে পালিয়ে ভারত চলে যাচ্ছিল। এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে এ অঞ্চলের অনেক উঠতি রাজাকার রজ্জব আলীর নেতৃত্বে একত্রিত হয়েছিল। আমার মনে হয়, যারা এ দেশটাকে ধর্মরাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল তারা হয়ত ‘বিধর্মীদের’ নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে চেয়েছিল। আরেকটি বিষয় হতে পারে, ভারত থেকে যাতে ঐ মানুষগুলো আবার ফিরে আসতে না পারে সেজন্য হত্যা করা হয়েছিল। অর্থাৎ কোনোভাবেই এই নৃশংস মানুষগুলো তাদের ভাষায় ‘বিধর্মীদের’ মেনে নিতে রাজি ছিল না।
আমি যেটা মনে করি, এইসব নৃশংস মানুষদের মরণোত্তর বিচার হলেও হওয়া উচিৎ। পৃথিবীর বুকে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হওয়া উচিৎ যে, এ ধরনের কাজ যারা করে তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়েই নিক্ষিপ্ত হয়।