নিজস্ব প্রতিবেদক
পুরনো ঢাকার অধিপতিও বলা যায় তাদের। পুরনো ঢাকায় বেশ কতগুলো মার্কেট রয়েছে। নবাবপুরে হোটেল রয়েছে, নিউমার্কেটে দোকান রয়েছে। কিন্তু একটা মটর ঘন ঘন নষ্ট হলেও সেটি তারা পাল্টাতে পারেন না বা পাল্টানোর প্রয়োজন বোধ করেন না।
আজকে (৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬) মটরটি পুরোপুরি নষ্ট হওয়াতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত (সর্বশেষ খবর) পুরনো ঢাকার ২৮, শুকলাল দাস লেনে অবস্থিত বাড়িটিতে পানি নেই, এমনিতেই পানি দেওয়া হয় মেপে মেপে, তার ওপর মাঝে মাঝেই এরকম সমস্যা হয়। এর অন্যপিঠও রয়েছে, ভাড়া দিতে দেরি হলে বাসার বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ঠিক এভাবেই চলছে বাড়িটি, যেন দেশে কোনো আইন নেই, মালিকেই ইচ্ছাই এক্ষেত্রে আইনে পরিণত হয়েছে।
বাড়িটির সামগ্রিক অবস্থাও তথৈবচ। প্রতিটি বাসায় ঢোকার মুখে একটি করে গেট লাগানো থাকলেও কোনো দরজা নেই, ফলে বারে বারে কলাপসিবল গেট লাগানোর যন্ত্রণা ভাড়াটিয়াদের নিত্যসঙ্গী। মালিক এ বাড়িতে থাকেন না, বাসাটি পরিচালিত হয় একজন তত্ত্বাবধায়কের তত্ত্ববধানে, কিন্তু তিনি ভাড়িটিয়াদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। দুর্ব্যবহার এবং ধমক-ধামক দিয়ে তিনি ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলেন। পানি ছাড়া হয় নিয়ম করে, তাও ডেকে বলতে হয়, বিষয়টি এমন হয়েছে যে পানি পেতে হবে বিশেষ করুনায়। বাড়িটি সংস্কার করা হয় না সম্ভবত অনেকদিন, অথবা শুরু থেকেই কোনো নির্মাণ ত্রুটি রয়েছে। বাসার চার তলার বাম পাশের ফ্লাটের পশ্চিম পাশের রুমে বৃষ্টি হলে দেয়াল দিয়ে পানি ঢোকে। বারে বারে মেরামত করে দিতে বলা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায় না। টয়লেটের সুয়ারেজ লাইন এবং রান্নাঘরের পানি পার হওয়ার লাইন একই হওয়ায় বাসাটিতে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও রয়েছে। বাসার দরজাগুলো লাগানো যায় না, বাথরুমের দরজা পর্যন্ত লাগানো যায় না, কিন্তু বারে বারে তাগাদা দেওয়া স্বত্ত্বেও ঠিক করে দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। বিদ্যুতের লাইনগুলো ত্রটিপূর্ণ হয়ে আছে, বাসা রং করা হয় না, এমনকি সিঁড়ি পর্যন্ত নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। কিন্তু ভাড়া ঠিক মত দিতে না পারলে বে-আইনিভাবে হলেও কেটে দেওয়া হয় বাসার পানি-বিদ্যুতের লাইন। আড়াটিয়াদের অভিযোগ, এসব বলতে গেলে বাসা ছেড়ে দিতে হবে, যা হঠাৎ সম্ভব নয়, ফলে সবাই মুখ বুঝে এসব সহ্য করে যাচ্ছে বছরের পর বছর।