ঢাকা শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের কথা আমরা সকলেই জানি। যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন বাড়ির মালিকরা। যেকোনো সময় তারা বাসা ছেড়ে দিতে বলতে পারেন। কোনো অভিযোগ বা দাবীর কথা তাদের জানালে বলেন, “ভালো না লাগলে চলে যান।” কিন্তু একটা বাসা থেকে ইচ্ছে করলেই চলে যাওয়া যায় না।
বিষয়টি বাড়ির মালিকরা ভালোভাবে বোঝেন বলেই এই সুযোগটি তারা কাজে লাগান। কিন্তু বাড়ি ভাড়া আইনে স্পষ্ট করা আছে কী কী সুযোগ সুবিধা ভাড়াটিয়ারা পাবেন। আইনানুযায়ী একজন ভাড়াটিয়া নিয়মানুযায়ী সে তার ভাড়া পরিশোধ করে গেলে বাড়ির মালিক কোনোভাবেই তাকে বাসা ছেড়ে দিতে বলতে পারেন না, যদি না অন্য কোনো গুরুতর সামাজিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে না থাকে।
বাড়িতে নিরবিচ্ছিন্ন পানি পাওয়া ভাড়াটিয়ার অধিকার, পানির অধিকার থেকে ভাড়াটিয়াকে বাড়ির মালিক বঞ্চিত করতে পারেন না। প্রতিবছর বাসা সংস্কার করার কথা আইনে বলা আছে। এক মাসের বেশি অগ্রীম নেওয়া যাবে না।
বছর বছর ভাড়া বাড়ানো যাবে না, ভাড়া কী হারে কখন বাড়ানো যাবে সেটিও উল্লেখ আছে আইনে। এরকম বেশ কিছু আইন এবং নিয়ম দ্বারা বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের সম্পর্ক নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু আইনের চর্চা এবং প্রয়োগ নেই বলেই বাড়ির মালিকরা যাচ্ছেতাই করার সুযোগ পান।
আবার বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ রয়েছে। সরকারি যেসকল প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের সুযোগ সুবোধগুলো নিতে হয় সেখানে তারা ভয়ানক হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অর্থাৎ গোড়ায় গলদ আছে বলে ধারণা করার যথেষ্ট কারণ আছে।
আবার “বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১” তেও যথেষ্ট সমস্যা আছে। আইনটি অনেক পুরনো বলে অনেক কিছু এখন আর বর্তমান সময়ের সাথে খাপ খায় না। তাই আনটিকে সংস্কার করে যুগপযোগী করা প্রয়োজন।
সর্বোপরি এই ঢাকা শহরে যেহেতু আশি থেকে নব্বই ভাগ মানুষ ভাড়া বাড়িতে থাকে তাই বিষয়টি নিয়ে হেলাফেলার কোনো সুযোগ নেই। অবশ্যই এটিকে একটি নীতিমালার আওতায় আনতে হবে। এবং বাড়ির মালিকেরা যাতে ভাড়া নির্ধারণ সহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে আইন মেনে চলে সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
https://www.facebook.com/109391390595919/videos/171571240873648/?t=1