ঢাকার সাভার উপজেলায় দোকানের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক নারীশ্রমিককে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
আশুলিয়া থানার এসআই আব্দুল আজিজ জানান, নিশ্চিন্তপুর এলাকার কোন্ডবাগ মহল্লার সাইদুলের বাড়ি থেকে শুক্রবার বিকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
নিহত মর্জিনা আক্তার (৩৬) রংপুরের কোতোয়ালি থানার সম্মানপুর এলাকার মো. শাহেদের স্ত্রী। তিনি আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় নাসা গ্রুপের পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ওই কারখানার পেছনে রফিকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
এসআই আজিজ প্রতিবেশীদের বরাতে বলেন, কয়েক মাসে আগে মর্জিনার স্বামী অসুস্থ হয়। এরপর থেকে চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ মেটাতে প্রতিমাসে তাকে হিমশিম খেতে হয়। ফলে আশপাশের বিভিন্ন দোকানে দেনা পড়তে শুরু করে। কয়েক মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা দেনা হয়। পাওনাদাররা প্রায়ই তাকে গালমন্দ করত।
এরপর বুধবার মর্জিনাকে রাস্তা থেকে ধরে নেওয়া হয় বলে তার কিশোরী মেয়ে শারমিন আক্তারের অভিযোগ।
শারমিন বলেন, “গ্রাম থেকে এসেছিলাম মায়ের সঙ্গে থেকে চাকরি করার জন্য। অনেক দিন বসে থেকেও চাকরি না পাওয়ায় বাড়িতে ফিরে যাচ্ছিলাম। মা আমাকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছিল।
“পথে এলাকার রফিক, জসিম, কাসেম, হৃদয়সহ আরও কয়েকজন তাদের দোকানের বকেয়া টাকার জন্য মাকে ও আমাকে ধরে নিয়ে যায়। তারা মাছ বিক্রেতা সাইদুলের বাড়িতে ধরে নিয়ে আমাদের মারধর করে। পরে আমাকে ছেড়ে দিয়ে মাকে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দরজায় তালা দিয়ে রাখে।”
শারমিন টাকা যোগাড়ের জন্য দুই দিন চেষ্টা করার পর শুক্রবার বিকালে ওই বাড়িতে যান। কিন্তু মায়ের কোনো সাড়া না পেয়ে এলাকাবাসীকে জানান। এলাকাবাসী সাইদুলের বাড়ির একটি ঘরে গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
শারমিনের অভিযোগ, নির্যাতনের পর তার মাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি তার মায়ের হত্যাকারীর শাস্তি দাবি করেন।
আশুলিয়া থানার ওসি আবদুল আউয়াল বলেন, এ ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শোনা যাচ্ছে তারা সবাই পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: অনলাইন