কাস্টমস্ অফিস নিয়ে ঘুষ দুর্নীতির এ অভিযোগ বরাবরের। কাস্টমস্ অফিস মানেই যেন ঘুষের রাজত্ব। অভিযোগ এক জিনিস, আর সেটি প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া আরেক জিনিস। বেনাপোল যেহেতু সবচেয়ে বড় স্থল বন্দর, ফলে বেনাপোল কাস্টমস্ কমিশনারেট নিয়ে অভিযোগও থাকে বেশি। উল্লেখ্য, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বছরে ৩৫ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। অদৃশ্য বাণিজ্য বা কালোবাজারি বাদ দিয়েই এই হিসাব। বেনাপোল কাস্টমস্ কমিশনারেট থেকে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকা থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হওয়ার কথা।
তথ্য বলছে আমদানি কমলেও গত অর্থবছরের শেষ মেয়াদে এসে রাজস্ব আয় বেড়েছে— কেন? বিষয়টি অনুসন্ধানসাপেক্ষ হলেও অবধোগম্য নয়।
যে অনিয়মগুলো নিয়ে রিপোর্ট হয়নি সেগুলো নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই। আসা যাক যেগুলো নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট হয়েছে সে বিষয়ে। কিছু নমূনা নিয়ে আপাতত ফলোআপ নিউজ কাজ করছে। কাজের গোপনীয়তার স্বার্থে কিছু নমূনা সংবাদ আড়াল করা হয়েছে।
১. বেনাপোলে মিথ্যা ঘোষণায় আনা ১০০ কোটি টাকার হোমিও ওষুধ জব্দ
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
ডেইলি স্টার সংবাদ করেছিলো—
বেনাপোল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষনায় আমদানি করা ১০০ কোটি টাকার হোমিও ওষুধ জব্দ করেছেন কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দারা।
রবীন্দ্র কুমার জানান, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ‘দ্য হোমিও ওয়ার্ল্ড’ গত ২৮ জুলাই ভারত থেকে ২ হাজার ২০০ প্যাকেজের হোমিও ওষুধ আমদানি করে। চালানটি বন্দরের ৩৪ নম্বর শেডে রাখা হয়।
এই কাস্টমস কর্মকর্তার ভাষ্য, জব্দ চালানটির বাজারমূল্য ১০০ কোটি টাকার বেশি। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চালানটির এলসি মূল্য দেখিয়েছে ৭৫ হাজার ৩১২ মার্কিন ডলার; অর্থাৎ ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৬ টাকা।’
রবীন্দ্র কুমার বলছেন, সিএন্ডএফ এজেন্ট মহিউদ্দিন আহমেদ অ্যান্ড সন্স আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চালানটি গোপনে ছাড় করার চেষ্টা করছিল।
ফলোআপ নিউজ বিষয়টি ফলোআপ করে এ পর্যন্ত যা জানতে পেরেছে—
♣ চালানটি ১৬ জানুয়ারি (২০২৪) ছাড় করেছে মহিউদ্দিন আহমেদ অ্যান্ড সন্স।
♣ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে নমূনা পাঠিয়ে ইতিবাচক ফল পাওয়াতে চালানটি ছাড় করা সম্ভব হয়েছে।
♣ বন্দরের কতৃপক্ষ বলছে, কীভাবে নমূনা পাঠানো হয় বিষয়টি তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। ফলে এ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। তাদের কাজ চালানের পরিমাণ হিসেব রেখে ছাড় হলে বুঝিয়ে দেওয়া।
♣ কাস্টমস্ কতৃপক্ষ এখনো কোনো বক্তব্য দেয়নি।
♣ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দ্য হোমিও ওয়াল্ডর্ড-এর কাছে প্রশ্ন পাঠিয়েও এখনো কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
♣ স্থানীয় সাংবাদিকদের ভাষ্য— অবৈধভাবেই চালানটি ছাড় করা হয়েছে।
ফলোআপ নিউজ-এর অনুসন্ধান অব্যহত রয়েছে।
২. বেনাপোল বন্দরে দুর্নীতি-অনিয়ম-ষড়যন্ত্র, ২ উপ-পরিচালক বরখাস্ত
বেনাপোল স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রাজস্ব ফাঁকি, দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, দপ্তরের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের অভিযোগে দুই উপ-পরিচালককে বরখাস্ত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সংবাদসূত্র অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর (২০২৪) উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মনিরুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক (প্লানিং) মো. কবির খানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
৩. অবশেষে বেনাপোলের কাস্টমস কমিশনার মাহবুবুজ্জামান ওএসডি
৪. বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের মদদে ঘুষ বাণিজ্যে মেতেছেন কর্মকর্তারা
৫. বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন ফেব্রিক্সের চালান আটক
৬. বেনাপোলের কাস্টমস কমিশনার বেলালের সম্পদের হিসাব চায় দুদক
৭. দুদকের সাবেক ডিডির বিরুদ্ধে বেনাপোল কাস্টমসের মামলা
৮. বেনাপোল স্থলবন্দর: জালিয়াতদেরই দৌরাত্ম্য, মিথ্যা ঘোষণার হিড়িক
৯. বেনাপোলে ২৮ টন ফ্যাব্রিকস জব্দ
১০. বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২, দৈনিক সমকাল
ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ২৩ লাখ টাকা অর্জনের অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার মুকুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল-আমিন বাদী হয়ে কমিশনের এই কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
১১. দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমসের ৩২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
১২. বেনাপোল কাস্টমসের অভিযানে অবৈধ পণ্যর ট্রাক আটক
১৩. বেনাপোলের তিন শুল্ক কর্মকর্তা বরখাস্ত
এরকম শতাধিক সংবাদ ফলোআপ করছে ফলোআপ নিউজ। পাশাপাশি বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন কী পরিমাণ পণ্য বৈধ পথে আসছে, সে বিষয়েও একটি অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে ফলোআপ নিউজ।