Headlines

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে -মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে কেউ অসত্য তথ্য দিলে কিংবা মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক। বলেছেন, ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য যারা মিথ্যা সাক্ষী দেবেন ওই সমস্ত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা এক থেকে তিন বছর বন্ধ থাকবে। আইন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা পাওয়ার পর আইনানুগভাবে তাদের সম্পদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হবে।’

শনিবার নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বন্দর উপজেলার গোকুলদাসের বাগ এলাকায় আমিজউদ্দিন এতিমখানার ছাত্রদের জন্য নির্মিতব্য তিন তলা বিশিষ্ট সানড্রা ম্যাককারসি হলের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী।

শনিবার দেশের ৯৪ উপজেলায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি শনিবার দেশের উপজেলা, জেলা, মহানগর পর্যায়ে এই বাছাইয়ের কাজ চলবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করতে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সারা দেশে মোট ৪৭০টি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ না করার বিষয়ে আদালতে রিট হলে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম ঝুলে যায়। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে ওই রিট নিষ্পত্তি হওয়ার পর মন্ত্রণালয় আর অপেক্ষা না করে দ্রুত গেজেটভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগ গ্রহণ করে। আদালত বিষয়টির সুরাহা করায় আজ থেকে দেশব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে কোনো পেপারস লাগবে না। পেপারস ম্যান্ডেটরি নয়। যদি সহযোদ্ধারা সাক্ষী দেন এবং বলেন তিনি ট্রেনিং নিয়েছেন এবং যুদ্ধ করেছেন তাহলে এটাই যথেষ্ট। মুক্তিযুদ্ধ বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। কেউ একা একা যুদ্ধ করেননি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে তা অনুসরণ করে যাচাই বাছাই হলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আসার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও যদি কোথাও বরখেলাপ হয় তাহলে সেটা বাতিল করে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ কে এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যেসব আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এখন অভিযোগ উঠে, তারা হাল আমলের নেতা। বঙ্গবন্ধুর আমলের নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ শুনিনি। হাল আমলে ভালোর মধ্যে মন্দ লোক ঢুকে গেছে। মন্দরা ধিকৃত হবেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে একদল লোক আছে যারা বলে মানুষ মারলেই বেহেশতের সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। মানবতার জন্য কাজ করার কথা কোরআনে আছে, হাদিসে আছে। এ শিক্ষা না নিয়ে তারা মানুষ হত্যা করছে। তারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মিথ্যাচার করে ইসলামকে কলঙ্কিত করছে। এদের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

রোটারিয়ান এম জামালউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন জেলা গভর্নর রোটারিয়ান মুহাম্মদ আইয়ুব, নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন গভর্নর পিডিজি সানড্রা ম্যাককারসি, তার নাতনি হান্না রোজ, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মতিয়ার রহমান, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম, অধ্যাপক একেএম হাফিজউল্লাহ, এ এফ এম আলমগীর, কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল, ধামগড় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদ, রোটারিয়ান কামরুজ্জামান বুলেট, রোটারিয়ান কমল খান  প্রমুখ।