একটি কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে— সচিবালয়ে হিন্দু কর্মকর্তা বেশী। বক্তব্যটি পুরোপুরি গুজব। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কখনোই হিন্দুরা কোনো দায়িত্ব বেশী তো নয়ই, সংখ্যানুপাতেও পায়নি। সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, সচিব, ডিসি, এসপি —এ ধরনের দায়িত্বে হিন্দুরদের প্রতিনিধিত্ব মোট জনসংখ্যার আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের চেয়ে অনেক কম।

ফলোআপ নিউজ-এর অনুসন্ধান বলছে ৬৪ জেলায় এখন হিন্দু জেলা প্রশাসক আছেন একজন, হিন্দুদের মধ্যে থেকে কোনো পুলিশ সুপার নেই।
গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও সচিবালয়ে হিন্দুদের অবস্থা খুবই নাজুক। জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বও তিন চারজনের বেশী কখনো ছিলো না। এবং এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। প্রশাসনে কী অবস্থা, তা এক পলকে নিচের পরিসংখ্যানটি দেখে নিলেই হিসেব পরিষ্কার বোঝা যাবে।
• সচিব: মোট ৮২ জন, হিন্দু ০ → ০%
• সিনিয়র সচিব: ১৫ জন, হিন্দু ১ → ৬.৬৭%
• অতিরিক্ত সচিব: ৩৭৪ জন, হিন্দু ১৭ → ৪.৫৪%
• যুগ্ম সচিব: ১০৩৩ জন, হিন্দু ৪৯ → ৪.৭৪%
• উপ-সচিব: ১৪০২ জন, হিন্দু ৮৩ → ৫.৯২%
• সিনিয়র সহকারী সচিব: ২০৩৪ জন, হিন্দু ২১৩ → ১০.৪৭%
• সহকারী সচিব: ১৫৫২ জন, হিন্দু ১২৬ → ৮.১১%
সার্বিকভাবে হিন্দু প্রশাসনিক কর্মকর্তার সংখ্যা ৪৯৩ জন, যা মোট কর্মকর্তার ৭.৫২%। অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৮.৯৫%। অর্থাৎ আনুপাতিকভাবে প্রশাসনে হিন্দুদের উপস্থিতি তাদের জনসংখ্যার তুলনায় ০.৪২% কম। হিন্দুদের মধ্যে শিক্ষার হার বেশী ধরলে এ সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরো কম।