দীর্ঘ ৮ মাস সৌদি আরবের রিয়াদের একটি বাসা বাড়িতে গৃহকত্রীর অসংখ্য নির্যাতনের ক্ষত শরীর নিয়ে দেশে ফিরেছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শিবপুর গ্রামের গৃহবধূ সালমা খাতুন।
মঙ্গলবার সকালে সৌদি আরবের একটি বিমানযোগে হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে দেশে পৌঁছান সালমা খাতুন।
এরপর তাকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। নির্যাতনের শিকার সালমার পরিবার জানায়, ভালো বেতনের চাকুরীর কথা বলে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে আলমডাঙ্গা উপজেলার পাঁচকমলাপুর গ্রামের জলিল মন্ডলের ছেলে হাবুর প্রলোভনে সৌদি আরবে যায় সালমা খাতুন।
বিদেশ যাওয়া বাবদ নিজেদের সামান্য জমিজামা বিক্রি করে দালালের হাতে তুলে দেয়া হয় দেড় লাখ টাকা।
নির্যাতিত গৃহবধূ সালমা খাতুন জানান, ‘সৌদিতে নেওয়ার পর আমাকে কাজ দেওয়া হয় রিয়াদের মুল্লা নামক স্থানের একটি বাসা বাড়িতে। সেখানে তিন মাস কাজ করার পর বেতন চাইলে গৃহকত্রী আজ্জা কখনো লাঠি দিয়ে পিটুনী আবার কখনো গরম খুন্তির ছ্যাকা দিয়ে পুড়িয়ে দিতো আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ। এভাবে নির্যাতনের পর আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আমাকে স্থানীয় একটি বেসরকারী হসপাতালে টানা ২৫ দিন ভর্তি থাকতে হয়। এ রকম তিন দফায় আমাকে নির্যাতনের পর হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের সহযোগিতায় সৌদির পুলিশ রবিবার আমাকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। পরে তাদের সহযোগিতায় মঙ্গলবার আমাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।’
সালমার স্বামী জিনারুল ইসলাম জানায়, ‘বাড়িতে আসার পর সালমা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে শুক্রবার তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারী কনসালটেন্ট ডাঃ তারিক হাসান শাহীন সালমার শরীরে ক্ষত দেখে তাকে পৈশাচিক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানান সালমার দুই পা হাতসহ সমস্ত সমস্ত শরীরে অংসখ্য নির্যাতনের ক্ষত রয়েছে। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’