সম্পর্কের শুরুতে একটা অজুহাত লাগে। অর্ণব একটা জুতসই অজুহাত খুঁজছিল-কিছু না পেয়ে মুখ ফসকে বলে ফেলে আপনাকে আমার বউয়ের মত দেখায়। নিপু একটুও লজ্জিত হয় না তাতে, মুখ ভেংচি কেটে বলে- ও আপনার বউও তাহলে আমার মত অসুন্দর! আপনি এত সুন্দর, আর বিয়ে করলেন একটা অসুন্দর মেয়ে। থাকগে, গুণবতী নিশ্চয়ই। অর্ণব এ প্রসঙ্গে আর যায় না। কাজের কথায় মন দেয়। নিপু ওকে ডেকেছে কিছু কেনাকাটা করার জন্য। মাত্র মাস খানেকের পরিচয়, ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় লঞ্চে দেখা হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ কথা হয়, পরে মোবাইল নম্বর নিয়েছিল অর্ণব।
বাসায় ফিরে ও নিপুকে ফোন দিয়েছিল। এরপর মাঝে মাঝে কথা হয়েছে, তবে দেখা হয়নি। আজকে আবার দেখা হল। একটি সিএনজি ঠিক করার জন্য হাঁক দিতেই নিপু ওকে থামায়। থাক, আজকে আর মার্কেটে যাব না, শরীরটা ভাল লাগছে না। অর্ণব কোনো উত্তর খুঁজে না পেয়ে ভ্যাবলা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। হঠাৎ বাসা থেকে ফোন আসায় স্বস্তি পায়।
অফিসে পৌঁছেই বাসায় একবার ফোন করে রোজ, আজকে আর ফোন করা হয়নি, তাই বাসা থেকে ফোন করেছে। সুজতার এমনিতে খুব একটা সন্দেহ বাতিক নেই, অর্ণবই এটা ওটা বলে উসকে দেয়। যা সত্য তাতো বলেই, অনেক কিছু বাড়িয়েও বলে, সুজাতা এখন আর অর্নবের এসব কথায় পাত্তা দেয় না। তবে কোন মেয়ের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে একটু কথা বলতে দেখলেও ও সহ্য করে না। অর্ণব ফোন রেখে আবার চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। ঢাকা শহরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্বস্তিদায়ক নয়, অনবরত রিক্সা-গাড়ি চলছে, ধুলোয় নাইয়ে দেয় একেবারে। নিপু কিছু বলতে গিয়ে আবার থেমে যায়। অর্ণব কথা খুঁজে বের করে- চলেন, আপনার বাসায় বেড়ানো যাক। নিপু ইচ্ছা চাপা দিয়ে একটু দোনোমনা করে বলে, চলেন, তবে বাসায় না, বাসার কাছে একটি ভাল রেস্টুরেন্ট আছে-ওখানে।
একটা রিক্সা ডেকে ওরা উঠে পড়ে। নিপুর দেহের গড়নটা রিক্সায় দুজন স্বল্প পরিচিত মানুষ বসার মত নয়। তিনের এক জায়গা পেয়ে অর্ণবকে খুশি থাকতে হয়েছে। এত সহজে জায়গা করে নেওয়াটা সমীচীন মনে না হওয়ায় ও জুবুথুবু হয়ে বসে থাকে।
সকাল থেকেই মেঘ মেঘ করছে, বৃষ্টি হয় হয় করে এখনো হয়নি; মনে হচ্ছে এখনই যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়বে, ফিনফিনে হাওয়ায় নিপুর সিল্কি চুলগুলো অর্ণবের চোখমুখ ছুঁয়ে দিচ্ছে। নিপু চুলগুলো সামলানোর চেষ্টা করছে না। দুজনেই আনমনা হয়ে বসে আছে। হঠাৎ একটি স্পিড-ব্রেকিং এ একটু জোরে ধাক্কা লাগায় নিপু চমকে ওঠে। অর্ণব কোমর ধরে ওকে আটকাতে চায়, একই সাথে সরি বলে।
রেস্টুরেন্টের কাছে এসে রিক্সা ভেড়ে। নিপু ভাড়া মিটিয়ে শেডের নিচে গিয়ে দাঁড়ায়। টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। অর্ণব একটি সিগারেট ধরিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়। ওরা দু’জনে গত একমাসে জীবনকথা বলেছে প্রচুর, তবে আজকে কেউই ওসবের ধারপাশ দিয়ে যাচ্ছে না। গল্প-গুজবও জমছে না। সমাজ এবং সংসারের নানান টানাপোড়েনে ক্লান্ত দুজন নারী পুরুষ কী যেন খুঁজে চলেছে অবিরাম। যত বিখ্যাতই হোক এই মুহূর্তে এই রেস্টুরেন্ট কি ওদের চাহিদা মেটাবে একটুও? ওরাও জানে, রেস্টুরেন্টে দামী খাবার আছে, ভাল খাবার আছে, কিন্তু ওরা যা খুঁজছে তা এখানে নেই। ‘কী খঁজুছে’ ওরা কি জানে অাসলে? কেউ কি জানে? জানে না বলেই তো এত ঘোরাঘুরি, সিদ্ধান্তহীনতা।
হঠাৎ বৃষ্টি পড়ায় রেস্টুরেন্টটিতে অত্যাধিক ভিড়। সামনেও প্রচুর লোক। এখানে না, চলেন, অন্য কোথাও যাই -বলেই অর্ণব একটা রিক্সা ডাকে। কোথায় যাবে, কত ভাড়া -কোনকিছুই ঠিক না করে উঠে পড়ে ওরা। রিক্সাওয়ালাও কিছু জিজ্ঞেস করে না, বৃষ্টির দিনে এমন যাত্রী বইয়ে ওরা অভ্যস্ত, তাই কিছু জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই। পা ঢাকার জন্য পলিথিন দিয়েছে। ঢাকার রিক্সালাদের পলিথিন সাধারণত এত বড় হয় না। এটি অনেক বড়। রিক্সালার উদারতার প্রশংসা করতে হয়। অর্ণব মনে মনে খুশি হয়, পুরুষ মানুষের সহজ সমীকরণ, নারীর সমীকরণ এত সহজে সিদ্ধ হয় না, তবে আজকে নারী এগিয়ে। নিপু ভাবছিল, বাসায় গেলেই বরং ভাল হয়।
ও বাসায় ফোন দিয়ে কাজের মেয়েটাকে চা বানাতে বলে। বলে রাখে, গেলে যেন সঙ্গে সঙ্গে চা দেয়, সাথে থাকা অতিথির কথাও বলে। রিক্সালাকে হুড উঠিয়ে দিতে বলে। আসো, আমরা বৃষ্টিতে ভিজি। ছোট বেলায় স্কুল থেকে ফেরার পথে আমরা তিনবন্ধু রিক্সার হুড উঠিয়ে দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতাম। কী-যে মজা হত!
ধুম বৃষ্টি পড়েছে। বৃষ্টি সেই সাথে দমকা হাওয়া ওদের আড়ষ্টতা ভেঙ্গে দিয়েছে। পয়ত্রিশোর্ধ দুজন নারী পুরুষ ঢাকার উন্মুক্ত রাস্তায় জড়াজড়ি করে ভিজছে কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে।
রিক্সালা জীবনমুখী, সে ওসব দেখছে না একটুও, দুএকশো টাকা বেশি উপার্জন করাটাই তার একমাত্র লক্ষ্য। বৃষ্টির দিনে এটাই তার সুযোগ।
বাসার কাছাকাছি এসে অর্ণবের বাহুবন্ধন হতে নিপু নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়। শরীর ভেজা, ব্যাগ ভেজা, টাকা ভেজা, সব ভেজা। দুজনের শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গিয়েছে। হতাশা, ক্লান্তি, বিধি-নিষেধ -সবকিছু ধুয়ে মুছে ওদের এক করে দিয়ে গেছে হঠাৎ বৃষ্টি। প্রশস্ত বাসা নিপুদের। নিজেদের জায়গায় বাড়ি, ফ্লাটটা নিজেদের মত করে সাজানো। গত দুবছর ধরে নিপু পিতা-মাতার সাথে এখানে আছে। আজকে অবশ্য বাসায় শুধু কাজের মেয়েটি, সৈয়দ দম্পতি কয়েকদিন হল গ্রামের বাড়িতে গেছে।
রিংকু দরজা খুলে দিয়ে পিছন ফিরে ঘরের অন্যপ্রান্তে চলে যায়, মনিবের সাথে কে আছে তা দেখার প্রয়োজনবোধ করে না। ওকে এভাবেই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। দশ বছর ধরে এ বাড়িতে আছে, নিয়ম ওর পাই-টু-পাই মুখস্থ।
যাওয়ার সময় চা এখন দেবে কিনা-পিছন ফিরেই তা জানতে চায়। আজকে যেন মেয়েটা একটু বেশি সতর্ক! নিপু চা দিতে বারণ করে ধপ করে ভিজে শরীরে সোপায় বসে পড়ে। চোখ আধবোজা করে মাথা এলিয়ে দেয়, কোমর থেকে বুক পর্যন্ত উন্মুক্ত পেলব শরীরে ফোঁটা ফোঁটা পানি টলমল করছে। কাপড় ভিজে শরীর সবটুকু দেখা যাচ্ছে, ওর চোখেমুখেও উদ্রভান্তি।
ও কি অসুস্থ হয়ে পড়েছে? অর্নব ওর মাথায় বিলি কেটে ভিজে চুলগুলো এদিক ওদিক সরাতে থাকে। হাত দিতেই শিহরণ টের পায়। নিপু ঘন ঘন শ্বাঃস নিতে থাকে। ধীরে ধীরে ও আয়ত্বের বাইরে চলে যায়। চিৎকার করে ওঠে, “বারো হাত শাড়ি খুলতে কি তোমার বারো বছর লাগবে? অর্ণব, মেক মি কাম্ সুন এন্ড ফরএভার। প্লিজ …”
এই প্রথম ‘তুমি’ সম্মোধন, অর্নব এটিই চাচ্ছিল, ওকে ধৈর্যহারা করে দিতে চাইছিল। এরপরে কারোরই আর তর সইছিল না। এক টুকরো ‘স্বর্গ’ প্রয়োজনে পাপীকেও কাছে টেনে নিয়েছে, বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দুজনে গোগ্রাসে গিলছে সকল দুঃখ।
এরপর প্রায় প্রতি সপ্তাহে ওরা মিলিত হত, তবে প্রথম দিনের মত এরকমটি আর কখনো হয়নি। ঐ দিনটাকে খোঁজে ওরা সব সময়। কত কী আয়োজন করে, কিন্তু কোনভাবেই ওরকম একই রচনা আর হয় না।
এবার ওরা কক্সবাজার যাওয়ার পরিকল্পনা করে। আসলে খুব পরিকল্পনা করে ওরা কিছু করে না। একেবারে ধুমধাম, যখন যা মাথায় আসে। একজন প্রস্তাব দিলেই হইছে, আরেকজন লুফে নেয় সাথে সাথে। আগামী বৃহস্পতিবার রাত এগারোটায় মতিঝিল থেকে বাসে উঠবে। ফোনে হোটেল বুক করে নিয়েছে।
সুযোগ তৈরি করা অর্নবের জন্য কঠিন কিছু না, বাসায় চাকরির প্রয়োজনের কথা বললেই হয়, তাছাড়া নিজেরও একটি ব্যবসা আছে, তাই বাসায় একটা বুঝ দেওয়া কঠিন নয়। নিপু এদিক থেকে একটু অসুবিধায় আছে। পিতা-মাতাকে নানান কিছু বলে বুঝাতে হয়। বান্ধবির বিয়ের কথা বলে এসেছে এবার। জায়গার নামটা ঠিক রেখেছে। সবকিছু মিথ্য বলতে হয় না। শুধু প্রয়োজনীয় অংশটুকু মিথ্যা বলে বাকি সবকিছু সত্য বলে রাখে, এতে হিসেব মেলানো সহজ হয়, গোল বাধে কম।
ভুয়া নাম দিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে থাকতে হচ্ছে, এদেশে দুজন পারিবারিক সম্পর্কহীন নারী-পুরুষ একসাথে হোটেলে রাত কাটাতে পারে না। ওরা কক্সবাজারে দুদিন থেকে ঢাকায় ফিরবে।
প্রথম রাতেই বিপত্তি বাধে, অর্ণব অসুস্থ হয়ে পড়ে। কয়েকবার বমি করে ও কাহিল হয়ে পড়ে। নিপু ওকে আগলে রাখে, কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকে। নিপুও নার্ভাস হয়ে পড়ে। হোটেল মালিককে বলে একজন ডাক্তার আনা হয়। ডাক্তার একটি স্যালাইন পুশ করে কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যায়। এগারোটার দিকে অর্ণব ঘুমিয়ে পড়ে।
নিপু সারারাত জেগে থেকে অর্ণবকে পাহারা দিয়েছে। ওর ধারণা হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়লেই ওর কিছু একটা হয়ে যাবে। রাত চারটার দিকে অর্ণবের ঘুম ভাঙ্গে, পানি খেয়ে আবার কাঁত হয়ে শুয়ে পড়ে। পাঁচ মিনিট না যেতেই আবার উঠে বসে, নিপুর ঘাড় ধরে কিছু একটা বলতে গিয়ে পড়ে যায়। নিপু চিৎকার দিতে গিয়ে আবার থেমে যায়। বুঝতে পারে না কী করা উচিৎ। এই অবস্থায় ওকে ফেলে রেখে নিচে যাওয়া যাচ্ছে না। ইন্টারকম দিয়ে ফোন করে হোটেলের ম্যানেজারকে আসতে বলে। ম্যানেজার আসার সাথে সাথে, তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আরো লোক ডেকে অর্ণবকে বের করতে বলে। ম্যানেজার একেবারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। কোনো কথা না বলে নির্দেশ পালন করার মত কাজ করে যায়। প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চট্রগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিপু সবকিছু ম্যানেজারকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসে। বলে রাখে সবকিছু গোপন রাখতে। নিপু ম্যানেজারের কাছে নিজের একটি ছবি দেয়, পরিচয় এবং ঠিকানা লিখে দিয়ে বলে, “যদি ও মারা যায় তাহলে পুলিশকে আমার পরিচয়টি দিবেন। আপনি মালিকের কাছ থেকে হঠাৎ কোনো সমস্যার কথা বলে তিনদিনের ছুটি নেন, আপনাকে এই মুহূর্তে আমার ভীষণ দরকার। আপনি অর্ণবের ভাই, বুঝেছেন? সবকিছু করুণ, টাকা পয়শার কোনো চিন্তা নাই।”
ম্যানেজারটি অনুগত হয়ে নিপুর কথায় শুধু সায় দিয়ে যায়, কিছু বুঝে উঠতে পারে না। এ অবস্থায় বুঝতে চাওয়া মানুষের কাজ নয়, এখন প্রয়োজনমত কাজ করে যাওয়াটাই মনুষ্যত্ব। নিপু ব্যাংক থেকে বিশ হাজার টাকা উঠায়। টাকাটা ম্যানেজারের কাছে দেয়।
ওর এক বান্ধবী চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের শিক্ষক। ওর কাছে গিয়ে থাকা যেতে পারে। কিন্তু ওকেও কিছু বলা যাবে না। একজন পুরুষের সাথে হোটেলে ছিল -একথা জানানো যায় এমন একজন মানুষও এই দেশে নেই! “দম বন্ধ লাগছে, কিছু করার নেই, শক্ত থাকতে হবে ”
নিজেকে বুঝিয়ে কাবেরীর বাসায় যায়। কাবেরী খুশি হয়, তবে নিপুর হঠাৎ আগমন ওকে বিস্মিত করে, তাছাড়া নিপু তো অখ্যাত কেউ নয় যে এভাবে হঠাৎ হাজির হতে পারে! অর্ণব নিপুর সব পরিচয় জানে না, দেশের বিখ্যাত একজন নারীর সাথে ছয়মাস যাবত প্রেম করে যাচ্ছে, এটা অর্ণব জানে না। অর্ণব জানে ও নিপু, রূপশী-উর্বশী নিপু। কিন্তু অনেক মানুষ তো তাকে চেনে, হাসপাতালে গেলে কেউ চিনে ফেলবে না তার নিশ্চয়তা নেই। হোটেলে ঢোকার সময় সে মাথায় স্ক্রাপ ব্যবহার করেছে, তারপরেও সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়েছে।
ম্যানেজারের ফোন, নিপুর বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে ওঠে। “ ম্যাডাম, স্যার সুস্থ হয়েছেন।” আসলে এটা তেমন বড় কোন সমস্যা ছিল না। পেটে অনেক গ্যাস জমেছিল। হার্টে বিশেষ কোনো সমস্যা নেই। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ডাক্তার ছিল না বলে ওখানে পাঠিয়েছিল। কক্সবাজারে চিকিৎসা নিলেই হয়ে যেত ।
ঠিক আছে। তোমরা একটা গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের সামনে আসো। আমরা আবার হোটেলে যাব, ঐ একই রুমে। তুমি ব্যবস্থা করো। নিপু হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ে। কাবেরীকে কিছু বলার সুযোগ দেয় না। কাবেরীর বাচ্চাদের গাল টিপে আদর করে বেরিয়ে পড়ে। ম্যানেজার উঠে গিয়ে ড্রাইভারের পাশে বসেছে। ভাইয়ের মতই অর্ণবকে যত্ন করেছে সে। এতক্ষণ ওর নাম না জানাটা অন্যায় হয়েছে, আসলে সুযোগও তো হয়নি। ম্যানেজারের নাম কামরুল। কামরুলকে কিছু একটা বলতে গিয়েও নিপু থেমে যায়। আগ বাড়িয়ে অজুহাত দেওয়ার কোনো মানে হয় না। জানতে চাইলে বলা যাবে।
হোটেল রুমে পৌঁছে দেয়ালে বালিশ ঠেস দিয়ে অর্ণব শুয়ে থাকে।
নিপু নিজেকে আর সামলে রাখতে পারে না, ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। চিৎকার করে বলে, “আমরা এত পরাধীন কেন?”
গল্প সংকলন জবানবন্দী থেকে গল্পটি গৃহীত