শিশুটি রোজ দেখে তার মা সকালে উঠে প্রাতকর্ম সেরে একটি বইয়ের এক পৃষ্ঠা পড়ে, তারপর অন্য সকল কাজ কর্ম করে।
এভাবে অনেকদিন চলল, শিশুটির বয়স এখন ছয় বছর। ও এখন ভাঙ্গা ভাঙ্গা করে বই পড়তে পারে। ও ওর মাকে আজকে জিজ্ঞেস করছে, মা, তুমি রোজ কী বই পড়ো? আমিও পড়ব।
ওর মা বলে, তুমি বড় হয়ে পড়ো। শিশুটির কৌতুহল বাড়ে। ও বইটির জন্য তক্কে তক্কে থাকে। বইটি যে তাকের ওপর রাখা তা অনেক উঁচুতে, ও নাগাল পায় না।
একদিন চেয়ার নিয়ে দাঁড়ায়ে পাড়তে গিয়ে সব পড়েছিল। ওর মা বকা দিলেও বুঝতে পারেনি যে ও বইটা পাড়তে গিয়েছিল।
বইয়ের প্রতি একটা ছয় বছরের শিশুর কেন আগ্রহ হবে, তাও আবার অত মোটা একটা বইয়ের প্রতি, যেখানে ছবি নেই একটিও।
শিশুটির নাম মাসুম। মাসুম আবার এটেমপট নেয়। এবার ও সফল হয়। তাড়াতাড়ি লুকিয়ে কিছুটা পড়ে ফেলে। আবার রেখে দেয়।
পড়ে বিস্মিত হয়েছে, হতভম্ব হয়েছে। তাহলে …
ও কিছু বুঝে পায় না, এই সকাল বেলায় ও কখনো খালের পাড়ে যায় না। মা বকা দেবে জেনেও ও আজকে খালপাড়ে চলে যায়। গ্রামের নির্জন সরু পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভাবতে থাকে-
“পাখি সব করে রব, রাতি পোহাইল। কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।”
ও আওড়াতে থাকে।
এবার বলে— “রব”
“পড়ো! ( হে নবী ), তোমার রবের নামে ৷ যিনি সৃষ্টি করেছেন৷”
রব দেখতে তাহলে ক্যামন? পাখি কেন “রব রব” করে, রব করলে রাতি পোহায় তাহলে! রবের নামে কেন পড়ব? রবের নামে কীভাবে পড়তে হয়?
ও মনে মনে আবার বলে, “রবের নামে পড়ব, রবীর নামে পড়ব না।”
ওর আগ্রহ বাড়তে থাকে। “মা তাহলে রোজ এটাই পড়ে! আর কী পড়ে? মা রবের নামে আর কী কী পড়ে”
“মা তো দেখি বেশি রান্না করে, কাপড় কাচে, তাহলে রান্না করতে হয় কার নামে? কাপড় কাচতে হয় কার নামে? ও ভেবে পায় না, ওর আগ্রহ বাড়তেই থাকে।”