শ্রাবণের বৃষ্টিভেজা বাতাস জানালার বন্ধ কপাটে ধাক্কা খায় হঠাৎ।
দেয়ালঘড়ির কাটাগুলো অবিরাম ঘুরছে ।
মগজের ভেতর কিছু এলোপাথাড়ি শব্দ মাতালের মত টলতে থাকে।
চোখ বন্ধ করলেই যেন দেখতে পাই নীলাভ একটি আলোর রশ্মি।
তারপর আমি পেছনের অন্ধকারে লেপ্টে যাই আবারও।
ঘর আর পথ দুদিক থেকে টানতে থাকে আমায়;
আমি মাঝখানে বসে পড়ি অসহায়ের মত।
শুনতে পাই জীবন আমাকে ডাকছে দুর থেকে।
তখনই হঠাৎ টের পাই আমার দু’পায়ে শেকল হয়ে জড়িয়ে আছে সামাজিকতা।
দম বন্ধ লাগে। গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে আচানক কয়েক ফোটা অশ্রু।
আজকাল প্রায়ই আমাকে দেখতে পাই গারদের ভেতর।
এখানে সবাই মাতম করে আকণ্ঠ ভ্রম পান করে।
নিজেকে আরও আসহায় লাগে।
একটা অজানা ব্যাধী সংক্রামিত হতে থাকে মননে;
আমি ভয়ে কুঁকড়ে যেতে থাকি।
দেয়ালের ওপাশে শিউলির ঘ্রাণ অথচ আমি এপাশে নতজানু হয়ে দাড়িয়ে।
বুকের ভেতর দুমড়ে মুচড়ে যেতে থাকে, দাঁতে দাঁতে চেপে সহ্য করি।
একটু পরে আমাকেও পান করানো হবে ভ্রম।
দু’হাত প্রসারিত করে চেষ্টা করি উড়তে।
আমার হাতেও শেকল হয়ে জড়িয়ে আছে সামাজিকতা।
আমি বেরোতে পারিনা। দেয়ালঘড়িটা এখনও চলছে।
জীবন এখনও ডাকছে আমাকে।
শ্রাবণের বৃষ্টিভেজা বাতাস এখনও হচ্ছপ প্রবাহিত।
চোখ বুজলে এখনও দেখতে পাই নীলাভ সেই আলোর রশ্মি।
কিন্তুু আমি অসহায়। আমি এখনও পায়চারি করছি গারদের ভেতরে।
এখন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মগজের ভেতরকার সেই শব্দগুলো।
খুলে নেয়া হয়েছে আমার মেরুদণ্ড। তবুও আমি চেষ্টা করছি একবার উঠে দাড়াতে।
চেষ্টা করছি চিৎকার করতে। আমার কণ্ঠনালী রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আমি দেখতে পাচ্ছি আমাকে ভিড়ের মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে চোখ বেঁধে।
তবুও আমি স্বপ্ন দেখি উড়ে যাবো জীবন যেখানে।
( বিমূর্ত বৈরাগ্য। ০৮/০৮/১৮; বাগেরহাট।)
কবি ও কর্মী। বাগেরহাট